মারধর ও টাকা ছিনতাই‌য়ের পর আ’লীগ নেতা‌কে পুকুরে ফেলার অ‌ভি‌যোগ ছাত্রলীগের বিরু‌দ্ধে

গত বছর রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক অংশের যুগ্ম আহ্বায়ক পল্লবীর সমালোচনা করে বক্তব্য দিয়েছিলেন আব্দুস সালাম।

মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 May 2023, 05:40 AM
Updated : 3 May 2023, 05:40 AM

মাদারীপু‌রের রাজৈর উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকে মারধর, টাকা ছিনতাই ও মোটরসাইকেলসহ পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজৈর উপজেলা পরিষদে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন রাজৈর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় ঘোষ।

মারধরের শিকার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার আব্দুস সালাম (৫০) জানান, মারধরের পর তাকে পুকুরে ফেলা দেওয়ার সময় তার নগদ দুই লাখ টাকা, স্ব‌র্ণের চেইন ও মোবাইল ফোন ছি‌নি‌য়ে নেওয়া হয়েছে।

তবে মারধর ও টাকা ছিনতাইয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রাজৈর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসিবুল হাসান ওরফে পিয়াল।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পরিদর্শক সঞ্জয় জানায়, দুপুর ১টার দিকে আব্দুস সালাম জমি রেজিস্ট্রেশনের জন্য উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে যান। সেখানে তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন পিয়াল।

পরে পিয়ালের ভাই আশিকুর রহমান ওরফে পাভেলসহ ১০ থেকে ১২ জন খন্দকার আব্দুস সালামকে বেধড়ক মারধর করে উপজেলা পরিষদের পুকুরে ফেলে দেয়। সালামের মোটরসাইকেলটিও পুকুরে ফেলে দেয় তারা। 

স্থানীয়রা আব্দুস সালামকে উদ্ধার করে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। পরে শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর সুপারিশ করে চিকিৎসকরা।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, গত বছর এক আলোচনা সভায় আব্দুস সালাম রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক অংশের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদা হাসান ওরফে পল্লবীর সমালোচনা করে বক্তব্য দেন।

এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ফরিদা হাসান বাদী হয়ে আব্দুস সালামসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন।

সেই ঘটনার জেরেই ফরিদা হাসানের দুই ছেলে পিয়াল ও পাভেলের নেতৃত্বে আব্দুস সালামকে মঙ্গলবার মারধর করা হয়েছে, বলছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

মারধরের শিকার খন্দকার আব্দুস সালাম বলেন, “পল্লবীর নেতৃত্বে আমার উপর অর্তকিত হামলা চালানো হয়। এ হামলায় অংশ নেয় ১০ জনের বেশি। পরে আমাকে মারধর করে পুকুরে ফেলে দেয়। পুকুরে পানির ভিতরে নেমেও ওরা আমাকে প্রচণ্ড মারধর করে। সব পোষাক ছিড়ে দেয়। পরে আমার মোটর সাইকেলটিও পুকুরে ফেলে দেয়। ” 

তিনি আরও বলেন, “আমার পকেটে দলিল খরচের জন্য দুই লাখ টাকা, একটি সোনার চেইন, হাতঘড়ি, মোবাইল ফোন ছিল, সেগুলো সব নিয়ে গেছে তারা। ”

তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে পিয়াল সাংবা‌দিক‌দের বলেন, “তিনি (খন্দকার আব্দুস সালাম) সিনিয়র মানুষ, তাকে কেন মারধর করবো? আমি রাজনীতি করি, তাই আমার দিকে আঙ্গুল কেউ তুলতেই পারে।”

মারধর বা টাকা ছিনতাইয়ের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা বলেন, “পল্লবী ও তার ছেলে পিয়াল এরা কেউ আওয়ামী লীগ বা দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে নাই। তারা উপজেলায় হাঙ্গামা-মারামারি করে পরিবেশ নষ্ট করে আসছে।”

পরিদর্শক সঞ্জয় ঘোষ জানান, খন্দকার আব্দুস সালামের ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয়েছিল। তাই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

তবে এ ঘটনায় এখনো থানায় কেউ অভিযোগ করেননি, অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।