প্রতিটি সাপ মারার জন্য ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন ফরিদপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ।
Published : 21 Jun 2024, 10:58 PM
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ ইশতিয়াক আরিফ রাসেলস ভাইপার মারলে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা থেকে সরে এসে বলছেন, দুঃখজনকভাবে তার বক্তব্য বিকৃত করে প্রকাশ করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে শহরের রাসেল স্কয়ারে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক সভায় পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণাটি দিয়েছিলেন তিনি।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক ও সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ ব্যক্তিগভাবে পুরস্কারের অর্থ ‘সাপ মারা ব্যক্তিদের’ দেওয়ার কথা জোর গলাতেই বলেছিলেন।
তাদের ভাষ্য ছিল- মানুষের জানের নিরাপত্তার জন্য তাদের এ উদ্যোগ।
ইশতিয়াক আরিফের ঘোষণা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। রাসেলস ভাইপার যে সংরক্ষিত প্রাণী, এটি মারা যে অপরাধ, তাও উঠে আসে আলোচনায়।
এখন সেই বক্তব্য থেকে সরে এসে তিনি বলছেন, তার ঘোষণা ‘ভুলভাবে’ প্রচার করা হয়েছে।
যৌথভাবে এক সংশোধনী বার্তায় শামীম হক ও ইশতিয়াক আরফি দাবি করছেন, “দর্ভাগ্যজনকভাবে ভুল বোঝাবুঝির কারণে ফেইসবুকসহ নানা সামাজিক মাধ্যমে বক্তব্যটি বিকৃত আকারে ‘সাপ মারতে পারলে’ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
“ফরিদপুর সদর উপজেলাধীন কেউ যদি নিজেকে রক্ষাকারী পোশাক সম্বলিত হয়ে এবং সব ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করে জনস্বার্থে রাসেলস ভাইপার সাপটি জীবিত ধরতে পারেন, তাহলে তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।”
এর আগে বৃহস্পতিবার দলীয় সভায় ইশতিয়াক আরিফ বলেছিলেন, ফরিদপুরে বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে চরাঞ্চলে প্রাণঘাতী রাসেলস ভাইপার সাপের আনাগোনা দেখা দিয়েছে। সাপের ভয়ে ক্ষেতে কাজ করতে যাচ্ছে না শ্রমিকরা। সবার মাঝেই আতঙ্ক বিরাজ করছে।
“ফরিদপুর কোতোয়ালি এলাকায় কেউ যদি রাসেলস ভাইপার সাপ মারতে পারেন তাহলে তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে, প্রতিটি সাপ মারার জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হবে। যত জন যে কয়টি সাপ মারতে পারবে প্রত্যেক সাপ প্রতি ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
“সাম্প্রতিক সময়ে এ সাপ থেকে মানুষকে রক্ষা করার চেষ্টা আমাদের। মানুষের জীবন রক্ষার্থে এ ঘোষণা দেওয়া হল।”
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “মানুষের জানের নিরাপত্তার জন্য আমাদের এই উদ্যোগ।
“চরাঞ্চলের মানুষ নানা দুর্যোগ-দুর্ভোগের মধ্যে থাকেন। তারমধ্যে এই সাপের দংশনের আতঙ্কে তার অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই তাদের রক্ষায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, রাসেলস ভাইপার সাপ সংরক্ষিত। এ বন্যপ্রাণী মারলে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে।
বিষয়টি তুলে ধরে শুক্রবার যোগাযোগ করা হলে এ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমি রাসেলস ভাইপার মারার ঘোষণা দিইনি। এটা ভুলভাবে প্রচার হয়েছে। আমি কোনো সাপ মারার কথা বলিনি। সচেতন হওয়ার জন্য বলছি। সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার হয়েছে।”
এ বিষয়ে দলীয়ভাবেও বিবৃতি দেওয়া হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, কীভাবে রাসেলস ভাইপারের উপদ্রুব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে, সরকারই সে উদ্যোগ নেবে।
পুরনো খবর
রাসেলস ভাইপার মারলে অর্ধলক্ষ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা আওয়ামী লীগ নেতার