১৫০ শতাংশ জমিতে বরই চাষে শ্রমিক, কীটনাশক, সার, জাল ও পরিবহন খরচসহ এক মৌসুমে ৪ লাখ টাকা ব্যয় হওয়ার কথা জানান ওই চাষি।
Published : 14 Dec 2024, 08:23 AM
ভোলার লালমোহন উপজেলার হোসেন মিয়া চার বছর ধরে চাষ করছেন বরই।
বিগত বছরগুলোতে বরই চাষে আশানুরূপ সফলতা পাওয়ায় এবার বাড়িয়েছেন চাষের জমির পরিমাণ।
লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ বাড়ির আঙিনায় এ বছর ১৫০ শতাংশ জমিতে বরই চাষ করেছেন তিনি। তার বাগানে এখন থোকায় থোকায় ঝুলছে বরই।
রয়েছে চায়না টক-মিষ্টি, বল সুন্দরী ও আপেল কুল জাতের বরই। এ বছর বাগান থেকে অন্তত ২২ লাখ টাকার বরই বিক্রির আশা করছেন এই চাষি।
হোসেন মিয়া বলেন, “গত ৩ বছর ১০০ শতাংশ জমিতে বরইয়ের চাষ করেছিলাম; সন্তোষজনক ফলন পেয়েছি। তাই এ বছর জমির পরিমাণ আরো ৫০ শতাংশ বাড়িয়েছি। এবার মোট ১৫০ শতাংশ জমিতে বরই চাষ করেছি। গাছে ভালো ফলন রয়েছে।”
এরই মধ্যে চায়না টক-মিষ্টি জাতের বরই তুলে পাইকারি ও খুচরায় বিক্রি শুরু করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “অন্য জাতের বরইগুলো চলতি মাসের শেষের দিকে তোলা শুরু করব। আগামী মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাগান থেকে বরই বিক্রি করতে পারব।”
তিনি বলেন, “যেহেতু বাগানে ফলন ভালো রয়েছে, তাই আশা করছি, এই মৌসুমে আল্লাহর রহমতে ২২ লাখ টাকার বরই বিক্রি করতে পারব।”
‘ফরমালিনমুক্ত ও টাটকা’ পেতে যেকেউ তার বাগানে গিয়ে সরাসরি বরই কিনতে পারবেন বলে জানান তিনি।
এ ছাড়া নতুন বরই চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতাও করেন হোসেন মিয়া।
চাষি হোসেনের ভাষ্য, “আমি চাই, আমার এলাকাসহ এই জেলার সব মানুষ যেন ফরমালিনমুক্ত টাটকা বরই খেতে পারেন।”
হোসেনের বরই বাগানে বর্তমানে পাঁচজন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন।
শ্রমিক কবির, তৈয়ব ও আশরাফ আলী জানান, তারা কয়েক বছর ধরেই হোসেন মিয়ার বরই বাগানে কাজ করছেন। নিয়মিত পারিশ্রমিকও পাচ্ছেন। সন্তোষজনক পারিশ্রমিক পেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে সংসার চালাচ্ছেন।
বাগান মালিক হোসেনের দাবি, শ্রমিক, কীটনাশক, সার, জাল ও পরিবহন খরচসহ এ মৌসুমে তার ব্যয় হবে ৪ লাখ টাকার মত।
তাকে দেখে এরই মধ্যে নতুন করে বরই চাষের স্বপ্ন বুনছেন স্থানীয় অনেকে।
স্থানীয় মাকসুদুর রহমান, নূরে আলম ও নোমান বলেন, হোসেনের সফলতা দেখে তারাও বরই চাষের কথা ভাবছেন। শিগগিরই চাষের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন।
লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মেহেদি হাসান বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে হোসেন মিয়াকে নিয়মিত প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।
“হোসেন মিয়ার মত নতুন করে যারা বরই বাগান করতে আগ্রহী উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাদেরও প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ সহযোগিতা করা হবে,” বলেন উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মেহেদি।