ফখরুল ও আব্বাসের জামিন তৃতীয়বারও নাকচ

গত ৯ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে কারাগারে আছেন বিএনপির এ দুই জ্যেষ্ঠ নেতা।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2022, 10:48 AM
Updated : 15 Dec 2022, 10:48 AM

নয়া পল্টনে সংঘর্ষের মামলায় কারাবন্দি বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন তৃতীয়বারও নাকচ হয়ে গেছে।

তাদের জামিন আবেদনের শুনানি করে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস গত ৯ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে কারাগারে আছেন। এর আগে দুই দফা তাদের জামিন আবেদন নাকচ করেছিল হাকিম আদালত। 

তাদের আইনজীবীরা বুধবার আবারও জামিন চেয়ে বিশেষ আবেদন করেছিলেন। বৃহস্পতিবার সে বিষয়ে শুনানি হয়। 

বিএনপি নেতাদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহ এবং মহিউদ্দিন চৌধুরী।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে পিপি আবদুল্লাহ আবু ও আজাদ রহমান জামিনের বিরোধিতা করে যুক্তি দেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নাকচ করে আদেশ দেন।

শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, একই অভিযোগে এজাহারনামীয় আসামি আমানউল্লাহ আমান, আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল জামিনে রয়েছেন; সুতরাং আসামিদের জামিন দেওয়া যেতে পারে।

আইনজীবীরা উচ্চ আদালতের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত তুলে ধরে শুনানিতে বলেন, মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস এ মামলায় সন্দেহভাজন আসামি। ঘটনার সময় তারা পুলিশের সঙ্গে ছিলেন, পরে তারা সমাবেশের জায়গা দেখতে যান। এজাহারের একজন আসামি ইউনুস মৃধা ঘটনার সময় কারাগারে ছিলেন। অথচ তাকে এজহারে নাম দেওয়া হয়েছে ঘটনার সঙ্গে জড়িত দেখিয়ে।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আসামিদের সামাজিক, জাতীয় ও রাজনৈতিদক পরিচয় তুলে ধরেন। এর বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু বলেন, পুলিশের উপর হামলা চালানো হয় ওই দুই আসামির ‘নির্দেশে’।

এ মামলার অন্য ৬০ আসামির জামিন শুনানির জন্য আগামী রোববার দিন রাখা ধার্য রেখেছে আদালত।

গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ ও স্থান নির্ধারণ নিয়ে উৎকণ্ঠা-উত্তেজনার মধ্যে ৭ ডিসেম্বর নয়া পল্টনে জমায়েত হওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু ও শতাধিক আহত হয়।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে হাতবোমা ছোড়া হয়েছে অভিযোগ তুলে তখন ওই কার্যালয়ের ভেতরে অভিযান চালায় পুলিশ, গ্রেপ্তার করা হয় কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতাসহ কয়েকশ নেতা-কর্মীকে।

সেদিন ফখরুলকে গ্রেপ্তার না করলেও পরদিন রাতে বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়, একই রাতে আটক করা হয় মির্জা আব্বাসকেও।

পরদিন ৯ ডিসেম্বর পুলিশের উপর হামলা ও উস্কানি দেওয়ার মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঠানো হয় আদালতে। আদালতে তাদের পক্ষে জামিন আবেদন হলেও তা নাকচ করে পাঠানো হয় কারাগারে। এরপর ১২ ডিসেম্বরও তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়।

বিএনপি কার্যালয়ে ৭ ডিসেম্বরের অভিযানে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার মধ্যে কেবল আমান ও জুয়েল জামিনে ছাড়া পেয়েছেন।

পুরনো খবর 

Also Read: ফখরুল-আব্বাসের জামিনের জন্য আবার আবেদন

Also Read: কারাগারে ফখরুল-আব্বাসকে ডিভিশন দেওয়া হয়েছে, জানাল রাষ্ট্রপক্ষ

Also Read: জামিন মেলেনি, ফখরুল ও আব্বাস কারাগারে

Also Read: 'উৎকণ্ঠা-উত্তেজনার' পারদ কী নামল সমাবেশ শেষে

Also Read: নয়া পল্টনে সংঘর্ষ: উসকানির অভিযোগে গ্রেপ্তার ফখরুল ও আব্বাস

Also Read: রিমান্ড শেষে বিএনপির ২৩ নেতাকর্মী কারাগারে