“ব্যর্থতার দায় নিয়ে সরকার পদত্যাগ না করে যে কোনো উপায়ে পুনরায় ক্ষমতায় থাকতে চায়। এটা চরম নির্লজ্জতা,” বলেন তিনি।
Published : 28 Nov 2023, 01:06 PM
দ্রব্যমূল্য, মুদ্রাস্ফীতি, ঋণ আর দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকার ‘চরম অযোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি বলেছেন, “এ সকল ব্যর্থতার দায় নিয়ে সরকারের আগেই পদত্যাগ করা উচিত ছিল। কিন্তু সরকার তা না করে যে কোনো উপায়ে পুনরায় ক্ষমতায় থাকতে চায়। এটা সরকারের চরম নির্লজ্জতা ও ফ্যাসিবাদী চরিত্রের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।”
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মঙ্গলবার সকালে বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও গণফোরামের নেতাদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বর্তমান সরকার ‘সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস’ করেছে মন্তব্য করে চরমোনাই পীর বলেন, “নির্বাচন কমিশনের মত মৌলিক প্রতিষ্ঠানে বারবার দলান্ধ ব্যক্তি বসানো হয়েছে। বিচার বিভাগকে সরকারের আজ্ঞাবহ বানানো হয়েছে।
“নির্বাচনে বিরোধী নেতাদের অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত করতে আদালতকে ব্যবহার করে গণহারে বিরোধী নেতাদের অপরাধী সাব্যস্ত করে রায় দেওয়া হচ্ছে। দুদককে বিরোধী নেতাদের দমন কমিশন বানানো হয়েছে। অডিটর জেনারেলের অফিসকে দলীয় দুর্নীতি আড়াল করতে ব্যবহার করা হচ্ছে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি, অর্থ ব্যবস্থা, পোশাকখাত ধ্বংস করা হচ্ছে।”
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে ‘জাতীয় সংলাপ’ নামের এই অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টির নেতা সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরাম নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, গণ অধিকার পরিষদের (রেজা কিবরিয়া) নেতা মিয়া মশিউজ্জামান, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূর ও এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্যে রেজাউল করিম বলেন, “দুঃখজনক বাস্তবতা হল, বাংলাদেশের সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও শক্তি কেন্দ্রগুলোকে নানাভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। পুলিশ-র্যাব-আনসার, বিজিবি, সামরিক বাহিনী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে কত নির্মমভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।”
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৭ জানুয়ারি। তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় আছে আর দুদিন। তবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সরকারের পদত্যাগ দাবিতে অনড় বিএনপি ও সমমমনা দলগুলো। ঘোষিত তফসিলকে ‘একতরফা’ অ্যাখ্যা দিয়ে সেটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে তারা।
গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের পর থেকে উত্তপ্ত রাজপথ। সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের দাবিতে ওই সময় থেকে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি দিয়ে আসছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। সমমনা দলগুলোও তাতে সমর্থন জানিয়েছে।
সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে মঙ্গলবারের সভায় তিনটি প্রস্তাব তুলে ধরেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির।
এগুলো হল-
>> ‘বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন’ ঘোষিত ‘একতরফা তফসিল’ বাতিল করে গ্রেপ্তার বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা।
>> ‘বিতর্কিত পার্লামেন্ট’ ভেঙ্গে দিয়ে ‘জাতীয় সরকারের অধীনে’ নির্বাচন দেওয়া হয়।
>> কার্যকরী সংসদ, রাজনৈতিক সংহতি এবং শতভাগ জনমতের প্রতিফলনের জন্য ‘সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন’ অধিক উত্তম পদ্ধতি, সেটি প্রবর্তন করা।