একাদশ সংসদ নির্বাচনের পরে টানা তিন বছর দলটির তহবিলে মন্দাভাব চলে।
Published : 30 Jul 2023, 05:04 PM
টানা তিন বছর টানাটানির পর ফের চাঙ্গা হয়ে হয়ে উঠেছে বিএনপির আয়ের খাতা; ২০২২ পঞ্জিকা বছরে প্রায় ৬ কোটি টাকা আয় দেখিয়েছে দলটি।
নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া বিএনপির আয়-ব্যয়ের হিসাব বলছে, গতবছর দলটি পৌনে চার কোটি টাকার বেশি খরচ করেছে। সব মিলিয়ে এখন ২ কোটি টাকার বেশি স্থিতি রয়েছে তাদের আর্থিক হিসাবে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী রোববার নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলমের কাছে দলের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেন।
নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের শর্ত অনুযায়ী দলগুলোকে তাদের বার্ষিক লেনদেনের হিসাব ইসিতে জমা দিতে হয়। সেই প্রতিবেদনে দশম সংসদ নির্বাচনের আগের তিন পঞ্জিকা বছরে আয়ের থেকে ব্যয় বেশি দেখিয়েছিল বিএনপি। ২০১৩ সালে পঞ্জিকা বছরে তাদের তহবিলে ঘাটতি ছিল প্রায় দেড় কোটি টাকা।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি একাদশ সংসদে অংশ নেয়। তার আগের বছর, অর্থাৎ ২০১৮ সালে এসে দলটির আয় কয়েক গুণ বেড়ে প্রায় ১০ কোটি টাকায় পৌঁছায়। ওই বছর শেষে দলীয় তহবিলে উদ্বৃত্ত ছিল ৬ কোটি টাকা।
এরপর ফের আয়ে ধস নামে। ২০১৯ সালে ৮৭ লাখ টাকা, মহামারীর মধ্যে ২০২০ সালে সোয়া ১ কোটি টাকা আর ২০২১ সালে ৮৪ লাখ টাকা আয় দেখায় দলটি।
এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগের বছর ২০২২ পঞ্জিকা বছরে আয়-ব্যয়ে ফের চাঙ্গাভাব দেখা দিয়েছে।
ইসিতে দলের আয় ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার পর রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ২০২২ সালে বিএনপির আয় হয়েছে ৫ কোটি ৯২ লাখ ৪ হাজার ৬৩২ টাকা। মোট ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৮৮ লাখ ৩৩ হাজার ৮০৩ টাকা। উদ্বৃত্ত ২ কোটি ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮২৯ টাকা।
তিনি জানান, জাতীয় নির্বাহী ও স্থায়ী কমিটির চাঁদা, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান এবং ব্যাংকের এফডিআরের অর্জিত ইন্টারেস্ট থেকে এ আয় হয়েছে।
আর অফিসের বিভিন্ন খরচ, পোস্টার-লিফলেট ছাপানো, বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র বাবদ খরচ, বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণ, নেতাকর্মীদের পরিবারের আর্থিক সহায়তা, ইফতার মাহফিল ও বিবিধ খাতে ব্যয় হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৪২টি। আইন অনুযায়ী পর পর তিন বছর দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিবন্ধিত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিরীক্ষা করিয়ে দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়।
ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টি বৃহস্পতিবার অডিট রিপোর্ট জমা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সোমবার ২০২২ পঞ্জিকা বছরের নিরীক্ষিত হিসাব প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
আয়ের চেয়ে কোটি টাকা ব্যয় বেশি বিএনপির
২০২২ সালে আয়-ব্যয় দুটোই বেড়েছে জাতীয় পার্টির