তারেক-জোবায়দার মালামালের ‘হদিস পায়নি’ পুলিশ

দুদকের এ মামলায় তারেক ও জোবায়দাকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার আদেশ দিয়ে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2023, 09:27 AM
Updated : 19 Jan 2023, 09:27 AM

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের আদেশের অগ্রগতি প্রতিবেদনে পুলিশ জানিয়েছে, পলাতক এই দুই আসামির মালামালের কোনো হদিস তারা পায়নি। 

ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর দুদকের এ মামলায় এই দম্পত্তিকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার আদেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি (গেজেট) প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

এদিন তারেক-জোবায়দার সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন জমার তারিখ ছিল। দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসি তাদের কোনো মালামাল পাওয়া যায়নি বলে আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন।“

এরপর বিচারক তাদেরকে (তারেক-জোবায়দা) আদালতে হাজির হতে বিজি প্রেসের মাধ্যমে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন এবং এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়ে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি মামলার  পরবর্তী দিন ধার্য করে দেন।

আমিনুল ইসলাম বলেন, “বিজি প্রেসের মাধ্যমে তারেক-জোবায়দাকে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ এসেছে । তবে কোনো পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কথা বলা হয়নি।“

এর আগে গত ১ নভেম্বর একই আদালত তারেক ও জোবায়দার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। পরোয়ানা জারির পরও তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের দেখা না পাওয়ায় গত ৫ জানুয়ারি তাদের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেয় আদালত।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক ২০০৮ সালে কারামুক্তির পর স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান। তারা এখন সেখানেই থাকেন।

জোবায়দা চিকিৎসক হিসেবে সরকারি চাকরিতে ছিলেন। ছুটি নিয়ে যাওয়ার পর আর কর্মস্থলে না ফেরায় ২০১৪ সালে তাকে বরখাস্ত করে সরকার।

বিদেশে থেকেই বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তারেক, তার মা খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাগারে যাওয়ার পর থেকে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

এর মধ্যেই চারটি মামলায় তার বিরুদ্ধে সাজার রায় এসেছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে দুই বছর, অর্থ পাচারের দায়ে সাত বছর, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং একুশে অগাস্টের গ্রেনেড মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে আছেন তারেক।

দুদকের এই মামলাটি হয় সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে, তখন তারেক গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। মামলায় তারেক ও জোবায়দার বিরুদ্ধে ৪ কোটি ৮১ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।

২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। এ মামলার বৈধতার প্রশ্নে তিনটি রিট আবেদন করেছিলেন আসামিরা, হাই কোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলও দিয়েছিল। দীর্ঘ বিরতির পর সেই রুলের উপর শুনানি করে ২০২১ সালে ২৬ জুন তা খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট।

সেই সাথে এ মামলার নথিপত্র ঢাকার মহানগর বিশেষ জজ আদালতে পাঠাতে এবং জজ আদালতে দ্রুত এ মামলার নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত। পাশাপাশি তারেক-জোবাইদাকে ‘পলাতক’ বিবেচনা করে, তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী এ মামলা পরিচালনা করতে পারবে না বলে হাই কোর্টের রায়ে জানানো হয়।

ওই আদেশের ফলে দীর্ঘ ১৪ বছর পর মামলাটি বিচারের পথ খোলে।

পুরনো খবর:

Also Read: তারেক-জোবায়দার সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ

Also Read: তারেক-জোবায়দার সম্পত্তি ক্রোকের আদেশে সাদা দলের উদ্বেগ

Also Read: তারেক-জোবাইদার রিট খারিজ, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ

Also Read: তারেক ও জোবাইদার বিরুদ্ধে আরও এক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা