হাছান মাহমুদ বলেন, “মানুষ হাস্যরস করে বলে, এটা এবারের ২৮ তারিখ নাকি আগামী বছরের না কি তার পরের বছরের?”
Published : 19 Oct 2023, 07:33 PM
আগামী ২৮ অক্টোবর থেকে আন্দোলনের ‘মহাযাত্রা শুরু করার বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে ঘোষণা দিয়েছেন, তার জবাব এসেছে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের পক্ষ থেকে।
তিনি বলেছেন, "২৮ অক্টোবর সরকারের নয় বরং বিএনপিরই পতন যাত্রা শুরু হবে এবং সহসাই তাদেরকে নির্বাচনপরবর্তী আন্দোলনের ঘোষণা দিতে হবে।"
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ক্ষমতাসীন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, "বিএনপি কিছু দিন আগে বলেছিল অক্টোবর মাসে ফাইনাল খেলা। তারপর বলল, পূজার পরে। আবার বিএনপি মহাসচিব গতকাল বলেন, ২৮ তারিখ তারা সরকারের পতনের দাবিতে সমাবেশ করবেন। আর আজকে নাকি তার আগেই সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
“এখন মানুষ হাস্যরস করে বলে, এটা এবারের ২৮ তারিখ না কি আগামী বছরের না কি তার পরের বছরের?”
গত প্রায় ১৫ বছর ধরে এই আন্দোলনের ‘হুমকির মধ্যে’ আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “বাস্তবতা হচ্ছে বিএনপির কর্মীরা ছাড়া জনগণের সেখানে কোনো সম্পৃক্ততা নাই।”
আগের দিন নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ থেকে মির্জা ফখরুল ২৮ অক্টোবর ঢাকায় ‘মহাসমাবেশ’ করার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “এই মহাসমাবেশ থেকে আমাদের মহাযাত্রা শুরু হবে। ইনশাআল্লাহ তারপরে সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা আর থেমে থাকব না।”
একই দিন বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের সমাবেশ থেকে বিএনপিকেও ‘শেষ বার্তা’ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সেই বার্তা হচ্ছে, ‘নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন শেখ হাসিনা। আগামী নির্বাচনে জিতে তিনিই হবেন প্রধানমন্ত্রী।’
তথ্য মন্ত্রী বলেন, "গতকাল ঢাকা শহরে দুটি বড় সমাবেশ হয়েছে, যার মাঝে দূরত্ব ছিল মাত্র দুই কিলোমিটার। কিন্তু এ নিয়ে ঢাকা শহরে বিন্দুমাত্র কোনো গণ্ডগোল হয়নি। রাজনীতির চর্চাটা এ রকমই হওয়া প্রয়োজন।”
ফিলিস্তিন নিয়ে বিএনপি ‘চুপ কেন’
গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণ নিয়ে বিএনপি কেন কথা বলছে না, সে প্রশ্ন তোলে হাছান মাহমুদ বলেন, “সমস্ত পৃথিবী প্রতিবাদ করেছে। ফ্রান্স থেকে শুরু করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও সেই হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী গতকাল এবং এর আগেও প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং আমি সরকারের তথ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথম থেকেই এই হত্যাযজ্ঞ-যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।
“কিন্তু বিএনপি এ প্রসঙ্গে একটি কথাও বলেনি। তার মানেটা কী? আজকে যে পুরো পৃথিবী এর বিরুদ্ধে কথা বলছে সেটি তাদের কানে পৌঁছায় না? এটি অত্যন্ত দুঃখজনক, আশ্চর্যজনক।
“প্রতিবাদ না জানিয়ে বিএনপি কার্যত এই বর্বরতা, এই শিশুহত্যার পক্ষ অবলম্বন করেছে, ইসরাইলের পক্ষ অবলম্বন করেছে।"
জামায়াতও ‘নিশ্চুপ’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “এরা আসলে ধর্মটাকে ব্যবহার করে মানুষের কোমল হৃদয়ে আঘাত হানার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার সোপান হিসেবে। এরা হচ্ছে ধর্ম ব্যবসায়ী। আজকে তাদের এই নিশ্চুপ থাকা ইসরাইলকে সমর্থন করার সামিল।"
মন্ত্রী কথা বলছিলেন ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিল সদস্যদের সন্তানদের মেধাবৃত্তি ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। শিক্ষার্থীদের হাতে মেধাবৃত্তি ও সংবর্ধনা স্মারকও তুলে দেন তিনি।
শিশু কিশোরদেরকে হাছান বলেন, "জীবনটাকে সংগ্রাম হিসেবে নিতে হবে। জীবন সংগ্রামে তোমরা অন্যদের পথ প্রদর্শক হবে। তোমরা নিজেরা স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাবে এবং তোমাদের হাত ধরে দেশও স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাবে।"
‘সাবাশ সোনার বাংলাদেশ’’
একই দিন সচিবালয়ে আরেক অনুষ্ঠানে গীতিকার হাসানুজ্জামান মাসুমের কথা, বাপ্পা মজুমদারের সুর ও সংগীত এবং গাজী শুভ্রর নির্দেশনায় বরেণ্য ১০ জন শিল্পীর গাওয়া দেশাত্মবোধক আধুনিক গান ‘সাবাশ সোনার বাংলাদেশ’ সংগীত উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।
নকীব খান, ফাহমিদা নবী, বাপ্পা মজুমদার, এলিটা করিম, দিলশাদ নাহার কণা, সোমনূর মনির কোনাল, কিশোর দাস, জামান সাইফ, সাজ্জাদ হোসেন শাওন ও ইমরান মাহমুদুল এতে কণ্ঠ দিয়েছেন।
সচিবালয়ের তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে সেই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ভিডিও সংগীতটির উদ্যোক্তা গীতিকার হাসানুজ্জামান মাসুম এবং শিল্পী প্রতিনিধি হিসেবে ফাহমিদা নবী।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, " আমি গানের একজন ভালো শ্রোতা। এই গানটির মিউজিক কম্পোজিশন খুবই ভালো। গানটির মধ্যে আত্মমর্যাদার কথা রয়েছে। এই দেশটা আমাদের এবং আমাদের দেশ কীভাবে চলবে সেই সিদ্ধান্ত নেবে দেশের মানুষ, বাইরের কেউ নয়। সেই কথাটা এই গানের মধ্যে আছে।"
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, "জাতিগত উন্নয়নের জন্য এ ধরনের সংস্কৃতি চর্চাকে এগিয়ে নিতে হবে।"