পুলিশ বলছে- “জামায়াতকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তারা অনুমতি ছাড়াই মঞ্চ তৈরি করছে।”
Published : 28 Oct 2023, 03:43 PM
মতিঝিলের শাপলা চত্বরে যেতে না পারলেও কাছাকাছি আরামবাগ মোড়ে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী।
শনিবার দুপুর ২টার দিকে আরামবাগ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে জামায়াতের সমাবেশ শুরু হয়। একই সময়ে নয়া পল্টনে বিএনপিও সমাবেশ শুরু করে। তবে কাকরাইলের সংঘর্ষের পর বিএনপির সমাবেশ পণ্ড হয়ে গেছে।
বিকাল ৩টার পর সমাবেশ শেষ করে আরামবাগ এলাকা থেকে চলে যান জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। এরপর বিএপির কর্মী-সমর্থকরা ওই এলাকায় অবস্থান নিয়ে ভাঙচুর করে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড অঞ্চল-২ এর বর্জ্যব্যবস্থনা অফিসের কয়েকটি দোকানে আগুন দেন বিএনপি কর্মীরা। ফরিকেরপুল এলাকার কয়েকটি দোকানেও আগুন দেওয়া হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ে।
পরে শাপলা চত্বরের দিক থেকে এসে বিপুল সংখ্যক পুলিশ বিএনপিকর্মীদের ধাওয় দিয়ে নয়া পল্টনের দিকে সরিয়ে দেয়।
রাজধানীতে শনিবার একই দিনে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি ও আওয়ামী লীগ। জামায়াতও একই দিনে সমাবেশের ঘোষণা দেয়। পুলিশ বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে অনুমতি দিলেও নিবন্ধনহীন জামায়াতকে অনুমতি না দেওয়ার কথা জানানো হয় শুক্রবার।
শনিবার সকালে জামায়াতের নেতাকর্মীরা তাদের ঘোষিত সমাবেশস্থল মতিঝিলের শাপলা চত্বরের দিকে অগ্রসর হয়। তবে শাপলা চত্বরে প্রবেশের সবগুলো পথে কাঁটাতারের ব্যারিকেড বসায় পুলিশ। জামায়াত নেতাকর্মীরা তখন জড়ো হন আরামবাগের সড়কে।
উত্তেজনার পরিস্থিতিতে সেখানে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে দুটি পিকআপ ভ্যান যুক্ত করে সমাবেশ মঞ্চ প্রস্তুত করে জামায়াত। ব্যারিকেড ভেঙে তারা নটরডেম কলেজের সামনে হয়ে শাপলা চত্বরের দিকে কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে নায়েব আলী শেখ নামে এক জামায়েত কর্মী আহত হন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক প্রতিবেদক জানান, আরামবাগ থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সড়কে পর পর তিনটি কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিয়েছিল পুলিশ। প্রথমটি নটরডেম কলেজের সামনে, দ্বিতীয়টি আরেকটু দক্ষিণে বাস কাউন্টারগুলোর কাছাকাছি এবং তৃতীয় ব্যারিকেড মতিঝিল শাপলা চত্বরের কাছে। তবে শেষ পর্যন্ত আরামবাগ মোড়েই সমাবেশ করে জামায়াত।
জামায়াতের সমাবেশে দলের ভারপ্রাপ্ত আমির মুজিবুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এটিএম মাসুম, নায়েবে আমির সামছুল ইসলাম, সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সহকারী সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য হামিদুর রহমান আযাদ, আব্দুল হালিম, মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতের মহানগর উত্তরের সভাপতি আব্দুর রহমান মুসা এবং দক্ষিণের সভাপতি নুরুল ইসলাম বুলবুলও সমাবেশে অংশ নেন।
সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলছিলেন, সমাবেশ করতে জামায়াতে ইসলামীকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। আর পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছিলেন, জামায়াতের কর্মীদের সরিয়ে দিতে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আর পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “আমরা তাদের (জামায়াতে ইসলামী) ডেসপাস করার জন্য বলেছি (পুলিশকে)। আমরা কীভাবে ডেসপাস করব এটা আমাদের কৌশলগত বিষয়।”
তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন বলেছিলেন, “জামায়াতকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তারা অনুমতি ছাড়াই মঞ্চ তৈরি করছে। তবে তারা যদি ভায়োলেন্স না চালায় তা হলে বাধা দেওয়া কোন সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত নেই। তবে ভায়োলেন্স করলে আমরা অ্যাকশনে যাব।”