সংলাপে আনতে বিএনপিকে ফের ইসির চিঠি

বর্তমান ইসির ডাকে একবারও সাড়া দেয়নি বিএনপি।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2023, 02:32 PM
Updated : 23 March 2023, 02:32 PM

বর্তমান ইসি দায়িত্ব নেওয়ার পর কোনো সংলাপেই যায়নি বিএনপি; তবে তাদের আলোচনায় বসাতে হাল ছাড়ছেন না সিইসি।

সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে বৃহস্পতিবার বিএনপিকে আবার চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিএনপি মহাসচিবকে (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) আজ সিইসির দপ্তর থেকে একটা চিঠি পাঠানো হয়েছে।”

তবে কী বিষয়ে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে, তা বলতে চাননি তিনি।

নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, বিএনপিসহ যেসব রাজনৈতিক দলকে আগের সংলাপগুলোতে পায়নি ইসি, তাদের পুনরায় আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।

“বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তাদের দলের অন্যান্য নেতাসহ প্রয়োজনে সমমনা দলগুলোকে ইসির পক্ষ থেকে প্রধান ইলেকশন কমিশনার ডিও পত্রের মাধ্যমে আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য সাদর আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।”

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের পক্ষ থেকে এই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

ইসির সংলাপ বিএনপি ছাড়াও বর্জন করে মুসলিম লীগ-বিএমল, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, জেএসডি, এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, সিপিবি, বিজেপি।

গত বছরের শুরুতে হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন ইসি দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই দফায় সংলাপ করে। তবে বিএনপি এবং এর মিত্র রাজনৈতিক দলগুলো কোনো সংলাপে যায়নি।

বিএনপিকে না পাওয়ার পর সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, তারা সংলাপ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে এই দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েই যাবেন।

Also Read: জোর করে তো আনতে পারব না, তবে ডেকে যাব: সিইসি

বিএনপি এখন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে। এর বাইরে কোনো বিষয় নিয়ে ইসির সঙ্গে সংলাপে যেতে নারাজ তারা।

ইসি বলছে, নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে, তা ঠিক করার এখতিয়ার তাদের নেই। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, নির্দলীয় সরকার ফিরিয়ে আনার কোনো সুযোগ নেই। 

রাজনৈতিক অঙ্গনে এই পাল্টাপাল্টি চলার মধ্যে সংলাপে বিএনপিকে আনার নতুন উদ্যোগ নিলেন সিইসি।।

বিএনপি মহাসচিবকে শুভেচ্ছা জানিয়ে চিঠিতে তিনি লিখেছেন,

….. আমরা সম্যক অবগত আছি যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রথম থেকেই বর্তমান নির্বাচন কমিশনের উপর অনাস্থা ব্যক্ত করে এই কমিশনকে প্রত্যাখ্যান করে এসেছে। আপনারা নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ব্যতীত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তও বারংবার ব্যক্ত করেছেন।

আপনাদের নিজস্ব দলীয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কৌশল বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনোরূপ মন্তব্য নেই। তবে, নির্বাচন কমিশন আপনাদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হলেও মনে করে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃবৃন্দের সাথে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান উপলক্ষে আনুষ্ঠানিক না হলেও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা ও মতবিনিময় হতে পারে।

আমি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আপনাকে আপনার দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দসহ প্রয়োজনে সমমনা দলসমূহের নেতৃবৃন্দসহ নির্বাচন কমিশনে সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সম্মত হলে দিন-ক্ষণ আলোচনা করে নির্ধারণ করা যেতে পারে। প্রত্যুত্তর প্রত্যাশা করছি।

চিঠিতে বিএনপি মহাসচিবের কাছে উত্তর প্রত্যাশা করেছেন সিইসি।

বিএনপি কী ভাবছে- তা জানতে বৃহস্পতিবার কয়েকবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মোবাইলে কল করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।

তিনি কয়েকদিন আগেও বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে তার দলের কোনো আগ্রহ নেই।

এই বছরের শেষ কিংবা আগামী বছরের শুরুর দিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে ইসি। সেই নির্বাচনে সব দলকেই চাইছে তারা।

ভোটের আগে দলগুলোর সঙ্গে আরেক দফা সংলাপের ইঙ্গিত সম্প্রতি দিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

আরেক নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা একদিন আগে বলেছিন, “সংলাপ কাজের সুবিধা জন্য হয়। এটা করার জন্য আইনে কিছু বলা নেই। এইটুকু বলতে পারি প্রয়োজন হলে নিশ্চয় আমরা বসব।”

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের পরিবেশ নিশ্চিতের উপরই ইসি সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান সম্প্রতি বলেছিলেন, “দলগুলোকে ভোটে নিয়ে আসাটা ইসির দায়িত্ব নয়। ভোট করবে তারা, ভোটে আসবে তাদের তাগিদে। পরিবেশ পরিস্থিতি সৃষ্টি করাই কমিশনের দায়িত্ব। সবাইকে ভোটে আসার জন্য শেষ দিন পর্যন্ত চেষ্টা করে যাব।