কারাগারে ফখরুল-আব্বাসের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা চেয়ে হাইকোর্টে রিট

মঙ্গলবার বিকালে এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2022, 08:26 AM
Updated : 13 Dec 2022, 08:26 AM

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে কারাগারে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন হয়েছে।

মির্জা ফখরুলের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম এবং মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস মঙ্গলবার হাই কোর্টে আলাদাভাবে এ দুটি রিট আবেদন করেন।

তাদের আইনজীবী কায়সার কামাল জানান, বিকাল সাড়ে ৩টায় বিচারক কামরুল কাদের চৌধুরী ও মোহাম্মদ আলীর বেঞ্চে আবেদন দুটির ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ আইনজীবী বলেন, “সাবেক মন্ত্রী বা সংসদ সদস্য হিসেবে তারা কারাগারে প্রথম শ্রেণি বা যেটাকে ডিভিশন বলা হয়, সেটা পাওয়ার আইনগত অধিকার রাখেন। তাদের যেদিন গ্রেপ্তার করে কারাগারে তোলা হয়, সেদিন তাদের আইনজীবীরা আবেদন করেছিলেন তাদের যেন ডিভিশন দেওয়া হয়।

“বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নির্দেশনা দিয়েছিলেন তাদের ডিভিশন দেওয়ার জন্য। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ সেই আদেশ অমান্য করে তাদের এখনও ডিভিশন দেননি। তাতে তাদের সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার খর্ব হয়েছে বলে তারা মনে করেন। সেজন্য তাদের স্ত্রীরা আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন রিট পিটিশনের মাধ্যমে যাতে আদালত তাদের ডিভিশনের ব্যাপারে একটি নির্দেশনা দেন।“

নয়া পল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন থানার মামলায় কারাগারে আছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

গত ৯ ডিসেম্বর তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হলে ঢাকার হাকিম আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। আইনজীবীদের আবেদনে সেদিন কারাবিধি অনুযায়ী আসামিদের ডিভিশন দেওয়ারও আদেশ দেয় আদালত।

মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তারের আগের দিন ৮ ডিসেম্বর বিএনপির ৪৫১ নেতাকর্মীকে তিন মামলায় কারাগারে পাঠায় হাকিম আদালত।এছাড়া ২৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ রিমান্ডে পাঠানো হয়।

তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়, নয়া পল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর। গ্রেপ্তারদের মধ্যে জামিন পান কেবল বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল।

পল্টন থানার মামলায় যাদের কারাগারে পাঠানো হয়, তাদের মধ্যে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস ছালাম, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবীর খোকন, চেয়ারপারসেন বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসও ছিলেন।

প্রথম দফা জামিন নাকচ হওয়ার পর রোববার ২২৪ বিএনপি নেতাকর্মীর জামিন চেয়ে আবারও আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা। সোমবার শুনানি শেষে তা নাকচ করে দেন ঢাকার মহানগর হাকিম শফিউদ্দিন।

বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ ঘিরে গত কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা চলছে দেশের রাজনীতিতে। নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ করতে চেয়েছিল বিএনপি। কিন্তু পুলিশ তাদের অনুমতি দিয়েছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের। এ নিয়ে অনড় অবস্থানে ছিল দুই পক্ষ।

এর মধ্যে গত বুধবার বিএনপি কর্মীরা নয়া পল্টনে জড়ো হলে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের মধ্যে আহত স্বেচ্ছাসেবক দলের এক ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতার মৃত্যু হয় হাসপাতালে।

এরপর বিএনপি অফিসে অভিযান চালিয়ে হাতবোমা পাওয়ার কথা বলা হয় পুলিশের তরফ থেকে। গ্রেপ্তার করা হয় প্রায় পাঁচশ নেতাকর্মীকে, দায়ের করা হয় মোট চারটি মামলা।

অনেক টানাপড়েন শেষে পুলিশের অনুমতি পেয়ে ১০ ডিসেম্বর বিএনপি সমাবেশ করে যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগ মাঠে। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা থাকলেও শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয় সেই সমাবেশ। নেতাদের মুক্তিসহ ১০ দফা দাবি ও বিক্ষোভের নতুন কর্মসূচি দিয়ে বাড়ি ফিরে যান বিএনপি নেতা-কর্মীরা।

আরও পড়ুন:

Also Read: কারাগারে ফখরুল-আব্বাসদের ‘ডিভিশনের’ জন্য হাই কোর্টে যাবেন আইনজীবীরা

Also Read: নয়া পল্টনে সংঘর্ষ: উসকানির অভিযোগে গ্রেপ্তার ফখরুল ও আব্বাস

Also Read: রিমান্ড শেষে বিএনপির ২৩ নেতাকর্মী কারাগারে

Also Read: নয়া পল্টনের কার্যালয় খুলেছে, ঢুকে ‘হতভম্ব’ বিএনপি নেতারা

Also Read: ফখরুল ও আব্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে: ডিবির হারুন

Also Read: ফখরুল ও আব্বাস ‘আটক’, জরুরি বৈঠকে বসছে বিএনপি

Also Read: ফখরুল ও আব্বাস ‘আটক’, বলছে পরিবার, ডিএমপি কমিশনার ‘অবগত নন’