দুপুরে হেলিকপ্টারে করে ফজলে রাব্বীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে তার নিজের এলাকা গাইবান্ধার সাঘাটায়।
Published : 25 Jul 2022, 11:37 AM
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার জানাজায় অংশ নিয়েছেন তার সাবেক সহকর্মী, রাজনৈতিক সহযোদ্ধাসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।
সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ফজলে রাব্বী মিয়ার কফিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকা পৌঁছায়। বিমানবন্দর থেকে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে।
সেখানে বেলা পৌনে ১১টায় ফজলে রাব্বীর জানাজা হয়। পরে সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সেখানে রাখা হবে তার কফিন।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ছাড়াও সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সেখানে জানাজায় অংশ নেন।
জানাজা শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ফজলে রাব্বী কী মানুষ ছিলেন, কতোটা ভালো মানুষ ছিলেন, কতোটা তিনি জনপ্রিয় ছিলেন, সেটা নতুন করে ব্যাখ্যা করে বলার কিছু নেই। একটি নির্বাচনী এলাকা থেকে পরপর সাত সাত বার তিনি নির্বাচিত হন। এতেই বোঝা যায় তার জনপ্রিয়তা ছিল খুবই তুঙ্গে।
“ফজলে রাব্বী অত্যন্ত বিনয়ী, সদালাপী, নির্লোভ, নিরহংকারী মানুষ ছিলেন। সবমিলিয়ে রাজনীতিতে ছিলেন একজন ভালো মানুষ, একজন ভালো নেতা ছিলেন। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি অত্যন্ত অনুগত। ওনার মতো এমন নেতা আমার মধ্য থেকে চিরতরে চলে যাওয়াটা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক বিষয়।”
প্রয়াত ফজলে মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন জানিয়ে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে ১৪/১৫ বছর সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের একই বিল্ডিংয়ে বসেছি। এমন ভালো মানুষ আর দেখিনি। আল্লাহ ওনাকে জান্নাতবাসী করুক।”
সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান বলেন, “জাতীয় সংসদের একজন পার্লামেন্টিরিয়ান হিসেবে তার জুড়ি নেই। পার্লামেন্টিরিয়ান হিসেবে তার যোগ্যতা, তিনি যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা অবিস্মরণীয়। আমরা তাকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করি। তার রুহের মাগফেরাত কামনা করি।“
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া আইন অঙ্গনের পথিকৃৎ ছিলেন। উনার কাছে এসে কেউ ফিরে যেত না। তিনি জনগণের আইনজীবী ছিলেন। তিনি কখনো ফির জন্য দেনদরবার করতেন না।
“আইন অঙ্গনে দীর্ঘ পদচারণায় কোনোদিন তার বিরুদ্ধে কেউ টুঁ-শব্দটিও করেনি। সাধারণ মানুষের সাথে তিনি এমনভাবে মিশে যেতেন, তার ফলশ্রুতিতে, তিনি তার এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। বারবার নির্বাচিত হয়েছেন। ডেপুটি স্পীকার হয়েছেন।”
দুপুরে হেলিকপ্টারে করে ফজলে রাব্বীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার নিজের এলাকা গাইবান্ধার সাঘাটায়। সেখানে ভরতখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ওজানাজা শেষে কফিন নিয়ে যাওয়া হয়েছে গটিয়া গ্রামে। সেখানে আরেক দফা জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান বলেন, “জাতীয় সংসদের একজন পার্লামেন্টিরিয়ান হিসেবে তার জুড়ি নেই। পার্লামেন্টিরিয়ান হিসেবে তার যোগ্যতা, তিনি যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা অবিস্মরণীয়। আমরা তাকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করি। তার রুহের মাগফেরাত কামনা করি।“
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া আইন অঙ্গনের পথিকৃৎ ছিলেন। উনার কাছে এসে কেউ ফিরে যেত না। তিনি জনগণের আইনজীবী ছিলেন। তিনি কখনো ফির জন্য দেনদরবার করতেন না।
“আইন অঙ্গনে দীর্ঘ পদচারণায় কোনোদিন তার বিরুদ্ধে কেউ টুঁ-শব্দটিও করেনি। সাধারণ মানুষের সাথে তিনি এমনভাবে মিশে যেতেন, তার ফলশ্রুতিতে, তিনি তার এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। বারবার নির্বাচিত হয়েছেন। ডেপুটি স্পীকার হয়েছেন।”
দুপুরে হেলিকপ্টারে করে ফজলে রাব্বীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার নিজের এলাকা গাইবান্ধার সাঘাটায়। সেখানে ভরতখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ওজানাজা শেষে কফিন নিয়ে যাওয়া হয়েছে গটিয়া গ্রামে। সেখানে আরেক দফা জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে সাতবারের সংসদ সদস্য ফজলে রাব্বী মিয়া শুক্রবার বেলা ৪টায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে মারা যান। ৭৬ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
পেশায় আইনজীবী ফজলে রাব্বী মিয়ার জন্ম ১৯৪৬ সালে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার গাটিয়া গ্রামে।
১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খান সামরিক আইন জারি করলে তার বিরোধিতার আন্দোলনে নেমে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন ফজলে রাব্বী মিয়া। তখন তিনি কেবল অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
পরে তিনি আওয়ামী লীগে সক্রিয় হন তিনি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধা হিসেবে অংশ নেন।
ফজলে রাব্বী প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির মনোনয়নে। পরে তিনি আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন।
১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি । ১৯৮৯ সালে তিনি আইন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন।
২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদে যান। পঞ্চম ও সপ্তম সংসদে তিনি বিরোধীদলীয় হুইপ ছিলেন।
নবম সংসদে ফজলে রাব্বী সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি, কার্য উপদেষ্টা কমিটি, কার্য প্রণালী বিধি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দশম সংসদে ডেপুটি স্পিকারের চেয়ারে বসেন ফজলে রাব্বী মিয়া। একাদশ সংসদেও টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এসময় তিনি কার্য উপদেষ্টা কমিটি ও পিটিশন কমিটির সদস্য এবং লাইব্রেরি কমিটির সভাপতি ছিলেন।
ফজলে রাব্বী মিয়া তিন মেয়ে রেখে গেছেন। ২০২০ সালে তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম মারা যান।