দেশে পৌঁছেছে ডেপুটি স্পিকারের মরদেহ

জাতীয় ঈদগাহ মাঠে সকাল সাড়ে ১০টায় ফজলে রাব্বী মিয়ার জানাজা হবে। দুপুরে হেলিকপ্টারে করে কফিন নিয়ে যাওয়া হবে তার নিজের এলাকা গাইবান্ধার সাঘাটায়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2022, 04:27 AM
Updated : 25 July 2022, 04:27 AM

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার মরদেহ যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে পৌঁছানোর পর জাতীয় ঈদগাহে নিয়ে যাওয়া হয়েছে জানাজার জন্য।

সংসদ সচিবালয়ের উপ পরিচালক (গণসংযোগ) স্বপন বিশ্বাস জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ফজলে রাব্বী মিয়ার কফিন ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলম, সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান ফজলে রাব্বি মিয়ার পরিবারের সদস্য এবং সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।

বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে সকাল ৯টার পর প্রয়াত ডেপুটি স্পিকারের কফিন নিয়ে একটি ফ্রিজিং ভ্যান রওনা হয় সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহর উদ্দেশ্যে।

জাতীয় ঈদগাহ মাঠে সকাল সাড়ে ১০টায় ফজলে রাব্বীর জানাজা হবে। পরে সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সেখানে রাখা হবে তার কফিন।

দুপুরে হেলিকপ্টারে করে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ফজলে রাব্বীর নিজের এলাকা গাইবান্ধার সাঘাটায়। সেখানে ভরতখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ওজানাজা শেষে কফিন নিয়ে যাওয়া হবে গটিয়া গ্রামে। সেখানে আরেক দফা জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে সাতবারের সংসদ সদস্য ফজলে রাব্বী মিয়া শুক্রবার বেলা ৪টায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে মারা যান। ৭৬ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।

পেশায় আইনজীবী ফজলে রাব্বী মিয়ার জন্ম ১৯৪৬ সালে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার গাটিয়া গ্রামে।

১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খান সামরিক আইন জারি করলে তার বিরোধিতার আন্দোলনে নেমে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন ফজলে রাব্বী মিয়া। তখন তিনি কেবল অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

পরে তিনি আওয়ামী লীগে সক্রিয় হন তিনি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধা হিসেবে অংশ নেন।

ফজলে রাব্বী প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির মনোনয়নে। পরে তিনি আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন।

১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি । ১৯৮৯ সালে তিনি আইন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন।

Also Read: ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বীর আসন শূন্য ঘোষণা

Also Read: সোমবার দেশে আসছে ডেপুটি স্পিকারের মরদেহ

Also Read: মারা গেছেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া

২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদে যান। পঞ্চম ও সপ্তম সংসদে তিনি বিরোধীদলীয় হুইপ ছিলেন।

নবম সংসদে ফজলে রাব্বী সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি, কার্য উপদেষ্টা কমিটি, কার্য প্রণালী বিধি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

দশম সংসদে ডেপুটি স্পিকারের চেয়ারে বসেন ফজলে রাব্বী মিয়া। একাদশ সংসদেও টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এসময় তিনি কার্য উপদেষ্টা কমিটি ও পিটিশন কমিটির সদস্য এবং লাইব্রেরি কমিটির সভাপতি ছিলেন।

ফজলে রাব্বী মিয়া তিন মেয়ে রেখে গেছেন। ২০২০ সালে তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম মারা যান।