মারা গেছেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া

নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে দীর্ঘ নয় মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2022, 10:20 PM
Updated : 23 July 2022, 03:53 AM

যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া মারা গেছেন।

স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা ৪টায় নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে তিনি মারা যান বলে জানিয়েছেন তার বড় মেয়ে ফাহিমা রাব্বী রিটা।

ডেপুটি স্পিকার দীর্ঘ নয় মাস দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।

মৃত্যুর সময় হাসপাতালে বড় মেয়ে রিটা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত ডেপুটি স্পিকারের একান্ত সচিব তৌফিকুল ইসলাম।

ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীও শোক জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন।

সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদেরও শোক জানিয়েছেন।

পেশায় আইনজীবী ফজলে রাব্বী মিয়ার জন্ম ১৯৪৬ সালে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার গাটিয়া গ্রামে।

জাতীয় পার্টির হয়ে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া ফজলে রাব্বী পরে আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন। রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে এই দলেই ছিলেন তিনি।

তিনি ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৯ সালে তিনি আইন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন।

২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদে যান। পঞ্চম ও সপ্তম সংসদে তিনি বিরোধীদলীয় হুইপ ছিলেন।

নবম সংসদে ফজলে রাব্বী সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি, কার্য উপদেষ্টা কমিটি, কার্য প্রণালী বিধি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

দশম সংসদে ডেপুটি স্পিকারের চেয়ারে বসেন ফজলে রাব্বী মিয়া। একাদশ সংসদেও টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এসময় তিনি কার্য উপদেষ্টা কমিটি ও পিটিশন কমিটির সদস্য এবং লাইব্রেরি কমিটির সভাপতি ছিলেন।

নবম সংসদে সাবেক স্পিকার বিএনপির জমিরউদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের জন্য সর্বদলীয় তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন ফজলে রাব্বী।

অষ্টম সংসদের সময়কালে বৈদ্যুতিক বাতি কেনা, লিফট ব্যবস্থাপনা, বাগানের ঘাস কাটা ও আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ওই বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়।

ফজলে রাব্বী মিয়া তিন মেয়ে রেখে গেছেন। ২০২০ সালে তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম মারা যান।

১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খান সামরিক আইন জারি করলে তার বিরোধিতার আন্দোলনে নেমে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন ফজলে রাব্বী মিয়া। তখন তিনি কেবল অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

পরে আওয়ামী লীগে সক্রিয় হন তিনি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধা হিসেবে অংশ নেন প্রয়াত ফজলে রাব্বী মিয়া।