“গণমাধ্যমে বিষয়টা সঠিকভাবে উপস্থাপন হয়নি”, বলেন বিএনপি নেতা।
Published : 20 Nov 2024, 06:16 PM
বিএনপি কাউকে নির্বাচনে আনতে চায়-এমন কথা বলেনি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে আসা বক্তব্য সঠিকভাবে উপস্থাপন হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।
বুধবার দুপুরে ফেনীর ফুলগাজীতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পৈত্রিক বাড়িতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী ও জনসাধারণের মাঝে শিক্ষা উপকরণ ও ঢেউটিন বিতরণের পর বিএনপি নেতা এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, “আমরা কাউকে নির্বাচনে আনতে চাই এমনটা বলিনি। গণমাধ্যমে বিষয়টা সঠিকভাবে উপস্থাপন হয়নি।
“আমরা বলেছি, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল। তারা নির্বাচন করবে কি করবে না তা নির্ধারণ করবে জনগণ। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে কারা রাজনীতি করবে আর কারা করবে না। আমরা সেখানে কিছুই না।”
গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা, এই বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি নতুন আলোচনা তৈরি হয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য হিন্দুতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের পর।
আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না-ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমটির এই প্রশ্নে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেন, “এটা ইতোমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইনি, এবং বিএনপি (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল) বলেছে, সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। সুতরাং তারা ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছে। আমরা দেশের একটি প্রধান দলের মতামত অগ্রাহ্য করতে পারি না।”
‘তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণে আপনার কোনো আপত্তি নেই?- এই প্রশ্নে তিনি আবার বলেন, “আমি রাজনীতিবিদ নই যে এ দল বা অন্য দল বেছে নেব। আমি রাজনীতিবিদদের ইচ্ছা বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করছি।”
এই সাক্ষাৎকার প্রকাশ হওয়ার পর সরকার পতন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া এসেছে। বিচারের আগে আওয়ামী লীগকে ‘পুনর্বাসনের’ চেষ্টা হলে ‘দ্বিতীয় বিপ্লবের’ হুঁশিয়ারিও এসেছে একাধিক সমন্বয়কের পক্ষ থেকে।
‘সরকারকে সময় দিতে হবে’
আগের দিন ঢাকায় এক আলোচনায় দ্রুত নির্বাচন দাবি করলেও ফেনীতে গিয়ে সরকারকে সময় দেওয়ার কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, “নতুন সরকার কাজ শুরু করেছে রাতারাতি সব পরিবর্তন সম্ভব না। নতুন সরকারকে জঞ্জাল পরিষ্কারে সময় দিতে হবে। সরকারকে ‘যৌক্তিক সময়ের মধ্যে’ সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাবে।”
আরও পড়ুন:
সাধারণ মানুষের কথায় 'ব্যাড সাইন', দ্রুত ভোট চান ফখরুল
আওয়ামী লীগের রাজনীতি: গণভোট চায় ছাত্র অধিকার পরিষদ
'কোথাও একটা ষড়যন্ত্র' চলছে, নেতাকর্মীদের তারেকের সতর্কতা
শেখ হাসিনা একা নন আওয়ামী লীগের ‘দস্যুরাও’ পালিয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি নেতা দেশের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও তাগিদ দেন।
খালেদা জিয়াকে প্রশংসায় ভাসান বিএনপি নেতা। বলেন,“শুধু ফেনী না, দেশের মানুষ তাকে ‘মায়ের মত’ জানে। গণতন্ত্র ও অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের নেত্রী সংগ্রাম করেছেন। ‘মিথ্যে মামলায়’ ছয় বছর জেল খেটেছেন। জেলে তার কক্ষ নোংরা ও স্যাঁতস্যাঁতে ছিল। ইঁদুর চলাচল করত। ‘বাসি ও পচা’ খাবার খেতে দিত। এরপরও নেত্রী আপস করেনি।”
ফুলগাজীর শ্রীপুরে খালেদা জিয়ার পৈত্রিক বাড়ির প্রাঙ্গণে এই আয়োজনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন, কেন্দ্রীয় নেত্রী রেহানা আক্তার রানু, চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লবও উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ জনের মাঝে ঢেউটিন এবং ২০০ শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়।