প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার খুনিদের পাশে যারা ছিল, যারা হত্যার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে, সবাই সমানভাবে দোষী।
Published : 16 Aug 2021, 10:21 PM
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “এই ঘটনা (জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা) যারা ঘটিয়েছে, পাশে যারা ছিল, আর যারা এভাবে ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে, সবাই কিন্তু সমানভাবে দোষী।
“আমি আরও অনেক ঘটনা জানি। কিন্তু আমি শুধু আগে হত্যার বিচার করাটা খুবই জরুরি ছিল, সেটা করেছি। ধীরে ধীরে একদিন কারা জড়িত সেটাও বের হবে এবং সেদিনও খুব বেশি দূরে না।”
বাংলাদেশের স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। তার দুই মেয়ে শেখ হসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।
দুই যুগ পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়। সেই বিচারের রায় এবং দণ্ডিত অধিকাংশের দণ্ড কার্যকর হলেও হত্যার পেছনে ষড়যন্ত্র ছিল বলে বরাবরই বলা হচ্ছে।
এই ষড়যন্ত্র উদ্ঘাটনে মহামারী শেষেই একটি কমিশন গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
“আর আমাদের দেশের সেই সময়ের পত্র-পত্রিকা যদি পড়েন আপনারা … বেশিক্ষণ খোঁজার দরকার নাই। তখনকার বক্তব্য সেগুলো একটু খুঁজে বের করেন। অনেক খবর আপনাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে।”
স্বাধীনতার এক বছর না যেতেই বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা শুরু এই ষড়যন্ত্রের অংশ বলেই মনে করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
“কারা লিখেছিল? কাদের খুশি করতে? কারা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য একটা অবস্থা তৈরি করছিল?”
জাতির পিতার খুনি আব্দুর রশীদ ও সৈয়দ ফারুক রহমানের বিবিসিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “তাদের একটা চেষ্টা ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার। সেইভাবে অনেক অপপ্রচার চালিয়েও তাকে জনগণের কাছ থেকে দূরে সরাতে পারে নাই। সরাতে পারে নাই বলেই তারা এই হত্যাকাণ্ডটা ঘটিয়েছে।”
আজীবন সংগ্রামী বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর রাষ্ট্র গঠনে যখন আত্মনিয়োগ করেছিলেন, তখনই ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার হয় বলে জানান শেখ হাসিনা।
“যখন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে … খুবই স্বাভাবিক স্বাধীনতাবিরোধী দেশের ভেতরে ও বাইরে বা যাদেরকে আমরা যুদ্ধে পরাজিত করেছি এবং তাদের দোসর, তারা এটা মেনে নিতে পারেনি। সেখানেই তারা প্রতিশোধটা নিতে চেয়েছিল। সেই প্রতিশোধ এই পনেরই অগাস্ট।”
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়াই এখন ব্রত হিসেবে নিয়েছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা, তাদের ক্ষুধা-দারিদ্র থেকে মুক্তি দেওয়া, তাদের জীবনটা উন্নত করা, প্রত্যেকটা ঘরে আলো জ্বালা, তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা, খাদ্যের ব্যবস্থা বা চিকিৎসার ব্যবস্থা, সেটা যখন করতে পারব, আমি মনে করব এই হত্যার প্রকৃত প্রতিশোধ সেই দিনই আমরা নিতে পারব।”