সাদেক খানের ১৮, তার স্ত্রী ফেরদৌস খানের ৮টি ও ছেলে ফাহিম সাদেক খানের ২৪টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে এর মধ্যে।
Published : 03 Feb 2025, 05:08 PM
ঢাকা ১৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান, তার স্ত্রী ও ছেলের ৫০টি ব্যাংক হিসাবের ১৯ কোটি ৪১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এর মধ্যে সাদেক খানের ১৮, তার স্ত্রী ফেরদৌস খানের ৮টি ও ছেলে ফাহিম সাদেক খানের ২৪টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জৈষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব সোমবার এ আদেশ দেন।
আলাদা আবেদনে সাদেক খান ও তার স্ত্রী ফেরদৌস খানসহ ১০ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে একই আদালত।
দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দের জন্য আবেদন করে দুদক। পরে শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।”
দুদকের আবেদনে সাদেক খানের বিরুদ্ধে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার, ভূমি দস্যুতাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের’ অভিযোগ আনা হয়।
‘আয়ের সাথে সঙ্গতিহীন’ ৭ কোটি ৩০ লাখ ২০ হাজার ৬৬৪ টাকার সম্পদ অর্জন এবং ২৯টি ব্যাংক হিসাবে ৪৬৬ কোটি ৪৭ লাখ ৬২ হাজার ১৯০ দশমিক ৫০ টাকার ‘সন্দেহজনক’ লেনদেনের অভিযোগে সাদেকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।
তার ছেলে ফাহিম সাদেক খানের বিরুদ্ধে করা মামলায় ‘পিতার ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত এয়র সঙ্গে সঙ্গতিহীন ৬ কোটি ১২ লাখ ৮১ হাজার ১৫২ টাকার সম্পদ’ অর্জন এবং ৭০টি ব্যাংক হিসাবে ২০ কোটি ৫২ লাখ ৩৫ হাজার ৪০৯ টাকা জমার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্যদিকে সাদেকের স্ত্রী ফেরদৌস খানের বিরুদ্ধে মামলায় ‘স্বামীর ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন’ ৫ কোটি ৯৮ লাখ ৩২ হাজার ৫২১ টাকার সম্পদ অর্জন এবং ১৫১টি ব্যাংক হিসাবে ৭২ কোটি ৩২ লাখ ২৯ হাজার ১০৬ টাকার অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, “দুদকের পক্ষ থেকে সাদেক খান, তার স্ত্রীসহ দশজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়। এরপর শুনানি নিয়ে আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।”
গত ২৪ আগস্ট রাজধানীর নাখালপাড়া এলাকা থেকে সাদেক খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন। তবে তার স্ত্রী সন্তানকে এখানো গ্রেপ্তার করা হয়নি।
মতিউরের মেয়ের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মতিউর রহমানের মেয়ে ফারজানা রহমান ইপ্সিতার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুদকের আবেদনে ঢাকা মহানগর জৈষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব সোমবার এ আদেশ দেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, সম্পদ বিবরণীতে ২ কোটি ৪৫ লাখ ৩৪ হাজার ৬১১ কোটি টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপন করায় এবং জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন ৫৩ কোটি ৪১ লাখ ৩৮ হাজার ৩৯৩ টাকার সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগে ফারজানা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
“তিনি বর্তমানে দেশে অবস্থান করছেন। তাই সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামি ফারজানা রহমানের বিদেশ গমন রহিত করা আবশ্যক।”
এস আলমের শ্যালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
গাজীপুরের আরমান্ডা স্পিনিং মিলসের মালিক, কমার্স ব্যাংকের পরিচালক ও এস আলমের শ্যালক মোহাম্মদ আরশেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছে একই আদালত।
দুদকের পক্ষে উপ-সহকারী পরিচালক ফয়েজ আহমেদ নিষেধাজ্ঞার আবেদনটি করেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, মো. আরশেদ এবং তার স্ত্রী জেসমিন আরশেদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে।
“বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ আরশেদ দেশ ছেড়ে বিদেশ পলায়ন করতে পারেন। এ মূহূর্তে সে পালিয়ে গেলে অভিযোগসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র ধ্বংসসহ অনুসন্ধান কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
কেয়া গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
কেয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক পাঠানসহ ৬ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
অপর ৫ জন হলেন- সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের গুলশান শাখার তৎকালীন সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম,ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ক্রেডিট ইনচার্জ মোরশেদ আলম মামুন, একই শাখার সিনিয়র এসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ক্রেডিট ইনচার্জ (বর্তমানে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাখা প্রধান) রেজওয়ানুল কবির, অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ইনচার্জ অব ইমপোর্ট ডিপার্টমেন্ট (বর্তমানে সিনিয়র এসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এক্সপোর্ট ইনচার্জ) অমীয় কুমার মল্লিক এবং এভিপি ও ইনচার্জ অব এক্সপোর্ট ডিপার্টমেন্ট (বর্তমানে সিনিয়র এসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এক্সপোর্ট ইনচার্জ) আশরাফুল ইসলাম।
আবেদনে বলা হয়, আসামিরা সাউথইস্ট ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ৪৯৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ‘আত্মসাৎ’ করেন। তাদের বিরুদ্ধে গত ২ জানুয়ারি মামলা করে দুদক।
“মামলার তদন্তকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, আসামিরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন। তারা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করলে মামলার তদন্ত কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে বিধায় তাদের বিদেশ গমন রহিত করা প্রয়োজন।”
পুরোনো খবর
সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান গ্রেপ্তার
দুর্নীতির মামলা, সাবেক এমপি সাদেক খানের স্ত্রীর ১৫১টি ব্যাংক হিসাব