সাদেক খান পরিবারের তিনজনের নামে ২৫০ ব্যাংক হিসাব রয়েছে, বলছে দুদক।
Published : 08 Jan 2025, 08:35 PM
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্য ও তাদের স্ত্রী-সন্তানের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ’ অর্জনের মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
বুধবার দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ঢাকা ১৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) সাদেক খান, তার স্ত্রী ফেরদৌসী খান ও ছেলে ফাহিম সাদেক খানের বিরুদ্ধে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা-১ এ আলাদা মামলা করা হয়েছে।
এই পরিবারের ২৫০টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পেয়েছে দুদক। তার মধ্যে সাদেক খানের স্ত্রীর নামেই রয়েছে ১৫১টি হিসাব।
এদিন দিনাজপুর ৩ আসনের সাবেক এমপি ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম এবং তার স্ত্রী নাদিরা সুলতানার নামেও দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা-১ এ আলাদা মামলা করেছে সংস্থাটি।
দুদকের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাদেক খানের ২৯টি ও তার ছেলে ফাহিম সাদেক খানের ৭০টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া গেছে।
এই কর্মকর্তা বলেন, সাদেক খানের স্ত্রী একজন গৃহিণী। তার নামে ১৫১ টি ব্যাংক হিসাব থাকা সন্দেহজনক।
সাদেক খানের বিরুদ্ধে ‘বৈধ’ উৎসের বাইরে ৭ কোটি ৩০ লাখ ২০ হাজার ৬৬৪ টাকার সম্পদ অর্জন ও তার ব্যাংক হিসাবগুলোতে ৪৬৬ কোটি ৪৭ লাখ ৬২ হাজার ১৯০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ফেরদৌসী খান ও ফাহিম খানের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৯৮ লাখ ৩২ হাজার ৫২১ টাকা ও ৬ কোটি ১২ লাখ ৮১ হাজার ১৫২ টাকার ‘অবৈধ’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ফেরদৌসী খানের সব ব্যাংক হিসাবে ৭২ কোটি ৩২ লাখ ২৯ হাজার ১০৬ টাকা লেনদেন ও ফাহিম খানের ব্যাংক হিসাবগুলোতে ৩৬ কোটি ১৪ লাখ ৩৮ হাজার ১৩৮ টাকার লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ২০২৪ সালের ২৪ অগাস্ট সাদেক খানকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর তার সম্পদ অনুসন্ধানে নামে দুদক।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোহাম্মদপুর-আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানার একাংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা ১৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন সাদেক খান।
অন্যদিকে ইকবালুর রহিমের বিরুদ্ধে ১২ কোটি ২২ লাখ ৯৯ হাজার ৬২০ টাকার ‘অবৈধ’ সম্পদ অর্জন এবং ১২ ব্যাংকের ২৪টি হিসাবে ৭১ কোটি ১ লাখ ৬ হাজার ৭০৩ টাকা লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
তার স্ত্রী নাদিরা সুলতানার বিরুদ্ধে ৭৪ লাখ ৮২ হাজার ৫৪২ টাকার ‘অবৈধ’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
২০২৪ সালের অগাস্টে ইকবালুর রহিমের সম্পদ অনুসন্ধানে নামে দুদক।
জাতীয় সংসদের সাবেক এই হুইপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ নামে ঢাকার উত্তরায় বাড়ি, উত্তরা মডেল টাউনে ৫ কাঠা জমির উপর বাড়ি, ধানমন্ডিতে ফ্ল্যাট, ২টি গাড়ি, নিজের নামে দিনাজপুরের উথরাইল, পুচকুর, রামপুর ও জালালপুরে বিপুল জমি কিনেছে। বিদেশে তার ‘অবৈধ’ সম্পদের থাকার অভিযোগও রয়েছে।