ফুটপাত ধরে পথচারীদের চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না, বলা হচ্ছে পথ ঘুরে যেতে। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট।
Published : 05 Nov 2023, 01:20 PM
ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের পর থেকে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যে তালা ঝুলছে, নয় দিন পরও সেটি খোলেনি।
ওই ঘটনার পর থেকেই বিএনপি কার্যালয়ের সামনে টানা পাহারা দিয়ে আসছে পুলিশ। শনিবার রাতে কার্যালয়ের সামনে সড়কের দুই পাশে বসানো হয় কাঁটাতারের ব্যারিকেড। ফুটপাত ধরেও পথচারীদের চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না, বলা হচ্ছে পথ ঘুরে যেতে। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট।
বিএনপির চলমান অবরোধের মধ্যে রোববার নয়া পল্টনের সড়কে প্রাইভেট কার, সিএনজি ও রিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। সেখানে এক রিকশাচালক মোমিন মিয়া জানান, অবরোধের কারণে যাত্রী পাচ্ছেন কম। কাছের গন্তব্যে অনেকে চলছেন পায়ে হেঁটেই।
নয়া পল্টনের একটি গলিতে চায়ের দোকানি সুরজ মিয়ার ভাষ্য, “কড়া অবরোধ হচ্ছে ভাই। আমার প্রতিদিন চা বিক্রি হত একশ থেকে দেড়শ কাপ। এখন অর্ধেকের কম বিক্রি হয়। সকাল থেকে আজ (রোববার) মাত্র ২৮ কাপ চা বিক্রি করেছি।
“যারা চা খেয়েছেন, তাদের বেশিরভাগ পুলিশ বা সাংবাদিক। সাধারণ মানুষজন কম। গ্রেপ্তারের ভয়ে কেউ এই সড়কে চলছে না।”
বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, নয়া পল্টনের সড়কে যানবাহন ‘স্বাভাবিকভাবে’ চলাচল করছে। মানুষের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করতে ও নিরাপত্তা দিতে পুলিশ বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশ সংঘর্ষের কারণে পণ্ড হয়ে যায়। পরদিন হরতাল ডাকে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী।
এরপর ৩১ অক্টোবর এবং ১ ও ২ নভেম্বর ডাকে অবরোধের কর্মসূচি। প্রথম দফার ওই অবরোধে ঢাকাসহ সারাদেশে ৩১টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়। প্রাণ যায় তিনজনের। রোববার সকাল থেকে দ্বিতীয় দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ডেকেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী।
নয়া পল্টনে সমাবেশের পরদিন সকালেই গ্রেপ্তার হন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে বিভিন্ন সময়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, দলের ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শাহজাহান ওমর, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও আরেক নেতা আমিনুল হকসহ অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
গ্রেপ্তার-আটকের এসব ঘটনায় দেশকে কারাগারের সঙ্গে তুলনা করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রোববার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “একদিকে সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন বিএনপিকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। অপরদিকে সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারে ক্র্যাকডাউন শুরু হয়েছে।
“ধারাবাহিকভাবে নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তারে প্রচণ্ড ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে এবং জনগণ আরও বলিয়ান হচ্ছে। বর্তমান সরকারের পদত্যাগসহ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা বাস্তবায়ন ছাড়া জনগণ রাজপথ ছেড়ে ঘরে ফিরে যাবে না।”
গ্রেপ্তার নেতাদের অবিলম্বের মুক্তির দাবিও জানিয়েছেন রিজভী।