সকালে নাস্তার আগে নাকি পরে দাঁত মাজা উচিত তা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক।
কারণ দিনে দুবার দাঁত মাজা উপকারী, বিশেষজ্ঞদের এরকম পরামর্শ প্রায়ই শোনা যায়। তবে দিনের ঠিক কোন সময়ে দাঁত মাজতে হবে তা সুনির্দিষ্ট করা নেই।
দন্ত বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সকালের নাস্তা খাওয়ার আগে দাঁত ব্রাশ করা উচিত। কারণ এটা প্লাক ও অ্যাসিড উপজাত দূর করতে সহায়তা করে।
সকালে উঠে ব্রাশ করা ঘুমের সময় জমে থাকা মুখের প্লাক বায়োফিল্ম (দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী) দূর করে।
প্রতি ১২ ঘণ্টা পর পর মুখের প্লাক দূর করা উচিত। তাই ঘুম থেকে উঠে ব্রাশের মাধ্যমে দাঁত ও জিহবা পরিষ্কার করা সবচেয়ে ভালো দিক।
তাছাড়া, খাওয়ার আগে ব্রাশ করা দাঁতকে খাবারের অ্যাসিড থেকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে।
রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে, যুক্তরাষ্ট্রের সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ হানা হং বলেন, “ব্রাশ না করে খাবার খাওয়া মানে হল, দাঁতের প্লাকসহ খাবার খাওয়া। খাবারের সঙ্গে প্লাক মিশে আরও ব্যাক্টেরিয়া ও অ্যাসিড উপজাত তৈরি করে। খাবার খাওয়ার পরপরই ব্রাশ করা মানে হল মুখে থাকা অ্যাসিডের ওপর স্ক্রাব করা। যা এনামেলের ক্ষয় ঘটায় এবং দাঁত ভঙ্গুর হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।”
তবে খুব বেশি মিষ্টি-জাতীয় নাস্তা করা হলে, যেমন- ডোনাট বা শর্করার সিরিয়াল খাওয়া হলে খাবারের পরে দাঁত মাজা উচিত। নয়ত এতে থাকা চিনি দাঁতে ক্যাভিটি সৃষ্টি করে ও ক্ষতি করতে পারে।
যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সকালের নাস্তায় ফলের রস, চা, কফির মতো উপাদান থাকে যা অ্যাসিডিক তাই। খাবারের আগে দাঁত ব্রাশ করাই বেশি নিরাপদ।
নিউ ইয়র্কের ‘পার্ক স্লপ ডেন্টিস্ট্রি সেভেন্থ অ্যাভিনিউ’য়ের দন্তচিকিৎসার পরিচালক অ্যাঞ্জেলিক ফ্রেকিং বলেন, “চা কফি পানের পরে তার ঘ্রাণ যদি অস্বস্তি সৃষ্টি করে থাকে তাহলে মুখ ভালো মতো কুলকুচি করে নেওয়া যেতে পারে, এতে অ্যাসিড ধুয়ে যাবে।”
“আর কেউ যদি খাবার পরে ব্রাশ করতেই চান তাহলে অন্তত ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করে ব্রাশ করা উচিত। এতে করে মুখের লালা প্রাকৃতিকভাবে সচল হয় এবং দাঁতের এনামেল স্বাভাবিক অবস্থায় আসে।”
মোদ্দা কথা হল, সকালে নাস্তা করার আগে দাঁত মাজা সবচেয়ে ভালো। আর সঠিক নিয়ম মেনে চললে খাওয়ার পরেও দাঁত মাজা যেতে পারে।
ডা ফ্রেকিং বলেন, “ধারাবাহিকতা ভালো অভ্যাসের চাবিকাঠি। তাই যারা সকালের নাস্তার পর মুখ থেকে ডিম ও পেঁয়াজের গন্ধ দূর করতে চান তারা একটু চেষ্টা করলে এই অভ্যাস আত্মস্ত করে নিতে পারবেন।”
আরও পড়ুন