দাঁত মাজার অবহেলা থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল

দুইবেলা দাঁত ব্রাশ করার মাধ্যমে ‘ক্যাভিটি’ আর মুখের দুর্গন্ধ দূর হওয়ার পাশাপাশি আরও অনেক রোগের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে থাকে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2020, 09:38 AM
Updated : 24 May 2020, 09:38 AM

দুইবেলা দাঁত ব্রাশ করার উপদেশ পায়নি এমন মানুষ খুঁজে যাওয়া সম্ভব না। তারপরও অনেকেই সেটুকু করেন না।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের তথ্যানুসারে স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, দুইবেলা দাঁত ব্রাশ করার মাধ্যমে ‘ক্যাভিটি’ আর মুখের দুর্গন্ধ দূর হওয়ার পাশাপাশি আরও অনেক রোগের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রতিটি দাঁতের গোড়াকে সুরক্ষিত রাখে ‘বায়োলজিকাল উইডথ’ নামক নরম ‘টিস্যু’। দাঁত থেকে জীবাণুকে শরীরের ভেতরে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখার মাধ্যমে এই সুরক্ষা কবচ স্বাস্থ্যকর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখে।

তাই মুখগহ্বরের সুস্বাস্থ্য ও উন্নত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পেতে মুখের ভেতর পরিষ্কার রাখতে হবে। এই কাজের কয়েকটি অংশ আছে। প্রথমত, খাদ্যাভ্যাস হতে হবে স্বাস্থ্যকর, যাতে রোগবালাই দূরে থাকে। পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসে পুষ্টি উপাদান বেশি আর শর্করা কম থাকলে দাঁতের ক্ষয়সাধনকারী ‘প্লাক’ তৈরি করার উপাদান মুখে তৈরি হবে কম।

প্লাক কী?

মুখের ব্যাক্টেরিয়া, খাবার ও পানীয়র শর্করা ইত্যাদি সবকিছুর উপজাত হিসেবে তৈরি হয় ‘প্লাক’। যে কারণে দাঁত ক্ষয়ে যেতে থাকে এবং দেখা দেয় মাড়ির বিভিন্ন রোগ।

‘আমেরিকান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন’য়ের মতে, প্রত্যেকেরই উচিত দুইবেলা দাঁত ব্রাশ করা, সঙ্গে ‘ফ্লস’ও। যাদের ডায়াবেটিস কিংবা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাজনীত বিভিন্ন কোনো রোগ আছে তাদের দাঁত ব্রাশ ও ফ্লস ব্যবহার করারও মাত্রা আরও বেশি হওয়া উচিত।

বড়দের জন্য দুই মিনিট দাঁত ব্রাশ করা যথেষ্ট হলেও শিশুদের জন্য তা বাড়াবাড়ি।

তাই শিশুদের ব্রাশ করার সময় খেলতে চাইলে বাধা না দিয়ে উৎসাহ দিন। সেই সঙ্গে বছরে কমপক্ষে দুইবার সবার দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

নিয়মিত ব্রাশ না করার পরিণতি

দাঁত ব্রাশ আর চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়মিত না নেওয়া হলে মুখে ব্যাক্টেরিয়াজনীত প্রদাহ দেখা দিতে পারে। এই ব্যাক্টেরিয়া পরে মুখ থেকে রক্তে মিশবে সংক্রমিত মাড়ি কিংবা দাঁতের ক্ষয় কিংবা ভাঙা অংশগুলোর মাধ্যমে।

এমনটা হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় হয়ে যকৃত থেকে নিঃসরণ করবে ‘টি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন (সিপিআর)’।

যেকোনো প্রদাহ হলেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এই সাড়া দেয়। তবে এই উপাদান ক্রমাগত নিঃসৃত হতে থাকলে দেখা দিতে পারে স্বাস্থ্য সমস্যা।

মুখে প্রদাহ ব্যাক্টেরিয়াজনীত প্রদাহ হলে ‘টি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন (সিপিআর)’ ক্রমাগত নিঃসৃত হতে পারে।

যাদের ঝুঁকি বেশি

প্রাপ্তবয়ষ্কদের দাঁত ক্ষয় হওয়া ঝুঁকি বেশি বলে মনে করা হয়।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, “প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু স্কুলে ভর্তি হওয়া আগেই দাঁত ক্ষয় ও নষ্ট হয়ে যাওয়ার শিকার হয়। আর একারণে ভবিষ্যতে তাদের অন্যান্য অনেক রোগবালাইয়ের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই দিনে দুবার দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাসটি রপ্ত করতে হবে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে।”

শিশুর দাঁতের যত্নে করণীয়

নবজাতকের দাঁতের যত্ন শুরু করা উচিত একেবারে শুরু থেকেই। দাঁত গজানোর আগে ভেজা কাপড় দিয়ে তার মাড়ি মুছে দিতে হবে যাতে ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া মাড়ির ক্ষতি করতে না পারে।

বড় হওয়ার সঙ্গে তাদের দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস গড়তে হবে, যাতে পরিণত বয়সে মুখগহ্বরের যত্নের ব্যাপারগুলো স্বভাবে পরিণত হয়।

শিশুদের জন্য দাঁত ব্রাশ করাকে মজাদার করে তুলতে পারলেই অভ্যাসটা গড়ে তোলা সহজ হবে। তাদের জন্য বিশেষ ব্রাশ, টুথপেস্ট কিনতে পারেন।

আরও পড়ুন