খাদ্যাভ্যাস আর জীবনযাত্রায় ছোট-খাট পরিবর্তনে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানো যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক’স উইমেন’স কার্ডিওভাস্কিুলার সেন্টার’য়ের পরিচালক ও ‘প্রিভেন্টিভ কার্ডিওলজিস্ট’ ডা. লেসলি চো দাবি করেন, “উচ্চ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের জন্য উপায় রয়েছে।”
ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “এছাড়া দারুণ খবর হল ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই হৃদরোগ প্রতিরোধ করা যায়।”
‘স্যাচুরেইটেড’ ও ‘ট্রান্স ফ্যাট’ সম্পর্কে সাবধান থাকা
স্যাচুরেইটেড ও ট্রান্স ফ্যাট এড়িয়ে চলা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।
ডা. চো বলেন, “খাবারের বৈচিত্র্য কমানোর মধ্য দিয়ে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এর মানে হল পণ্যের লেবেল পড়ে খাবার গ্রহণ করতে হবে। প্রতি পরিবেশনে দুই গ্রামের কম চর্বি গ্রহণ করতে হবে। আর দৈনিক ক্যালরি গ্রহণের মাত্রার সাত শতাংশ হতে হবে।”
“ট্রান্স ফ্যাট শরীরে খারাপ প্রভাব রাখে। এটা কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রদাহও বৃদ্ধি করে। ফলে ধমনীতে প্রদাহ বেড়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি দেখা দেয়।”
পেটের মেদ কমানো
পেটের মেদ সরাসরিভাবে উচ্চ কোলেস্টেরলের সঙ্গে জড়িত।
ক্লিনিক্যাল মেডিসিনের অধ্যাপক এবং ‘হিউস্টন মেথডিস্ট প্রাইমারি কেয়ার গ্রুপ সেইম ডে ক্লিনিকস’য়ের মেডিকেল পরিচালক জোশুয়া সেপটিমাস একই প্রতিবেদনে বলেন, “শরীরের মাঝামাঝি স্থানের স্থূলতার কারণে প্রদাহ বৃদ্ধি পায়। এর ফলে রক্তনালীতে কোলেস্টেরল তৈরি হয়।”
“এটা দেহে অনিয়ন্ত্রিত ‘প্লাক’ তৈরির ব্যাপারেও নির্দেশ করে। মনে রাখতে হবে একবার অনিয়ন্ত্রিত ‘প্লাক’ হয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে থাকে।”
ওজন কমানো
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে ওজন কমানো।
ডা. চো বলেন, “সামান্য পরিমাণ ওজন কমালে দেহে ‘এইচডিএল’ বা ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় এবং ‘এলডিএল’ বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।”
পাঁচ থেকে সাড়ে ৪ কেজি ওজন কমলেই দেহের সার্বিক কোলেস্টেরলের মাত্রা ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমে।
ধূমপান না করা
“শুধু কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেই সাহায্য করে না, পাশাপাশি প্রদাহ ও ধমনী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচে”, বলেন ডা. সেপটিমাস।
ধূমপান প্রদাহ বাড়ায় এবং ধমনীতে ক্ষয় সৃষ্টি করে। এর ফলে কোলেস্টেরলের অনিয়ন্ত্রিত ‘প্লাক’ সৃষ্টি করে। আর তা ফেটে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
নিয়মিত শরীরচর্চা
নিয়মিত শরীরচর্চা কোলেস্টেরলের মাত্রা শুধু কমায় না, কম রাখতেও সাহায্য করে।
ডা. চো বলেন, “কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে চাইলে শরীরচর্চা শুরু করা সবচেয়ে ভালো উপায়। তবে এতে সম্পূর্ণ কাজ না হলে শরীরচর্চার পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।”
শরীরচর্চা শুরু করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষ করে যদি উচ্চ কোলেস্টেরল থাকে। না হলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্টো বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন: