Published : 04 Jan 2023, 06:42 PM
প্রাণঘাতি রোগ হিসেবে পরিচিত ‘ব্রেইন স্ট্রোক’। এর থেকে রেহাই পেতে চাই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রিয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা জানাচ্ছে, কোনো কারণে মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হলে বা মস্তিষ্কের ধমনী ক্ষতিগ্রস্ত বা ফেটে গেলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়।
প্রথম অবস্থায় মৃত্যু ঝুঁকি থেকে বাঁচলেও ‘ব্রেইন স্ট্রোক’য়ের ফলে মস্তিষ্কের ক্ষয় বা কার্যক্ষমতা হারাতে পারে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে অসাড়তায় ভুগে মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে।
যারা ঝুঁকিতে রয়েছেন
যুক্তরাষ্ট্রের মায়ো ক্লিনিক জানাচ্ছে, ৫৫ বা বেশি বয়সিদের মধ্যে যাদের নানান ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস এবং বংশগতিতে স্ট্রোক, কোলেস্টেরল বা ক্ষণস্থায়ী স্ট্রোকের ইতিহাস আছে, তাদের এই ঝুঁকি বেশি।
এছাড়াও, মাত্রাতিরিক্ত অনিদ্রার সমস্যা থেকেও ‘ব্রেইন স্ট্রোক’য়ে ঝুঁকি বাড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া অর্গানাইজেশন’য়ের সমীক্ষানুযায়ী, শতকরা ৮০ শতাংশ লোকের স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’।
এই সমস্যায় ঘুমের মধ্যে শ্বাস বার বার বন্ধ হয়ে যায় এবং জোরে নাক ডাকা শুরু হয়। সমীক্ষায় ঘুমের সমস্যার সঙ্গে ব্রেইন স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাব্য আভাস দেওয়া হয়।
এই সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, একবার ব্রেইন স্ট্রোকের পরে প্রায় ৭০ শতাংশ রোগীদের মাঝে ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’র সমস্যা দেখা দেয়।
সমীক্ষায় আরও জানা গেছে, প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ জানে না তাদের মাঝে ঘুমের সমস্যা দেখা দিয়েছে। যতক্ষণ না তা মস্তিষ্কের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এই কারণেই বিশেষজ্ঞরা ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’কে ‘ব্রেইন স্ট্রোক’য়ের জন্য হুমকির কারণ বলে বিবেচনা করেন।
স্লিপ অ্যাপনিয়া’র লক্ষণ
মায়ো ক্লিনিক জানাচ্ছে, দুই ধরনের ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ রয়েছে; ‘অবস্ট্র্যাক্টিভ’ এবং ‘সেন্ট্রাল’।
আর লক্ষণগুলো হল- জোরে নাঁক ডাকা, ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসা, ঘুমের মধ্যে মুখ দিয়ে বাতাস নেওয়া, ঘুম থেকে ওঠার পরে মুখের শুষ্কতা, সকালে মাথা ব্যথা, অনিদ্রা বা ‘ইনসমনিয়া’, দিনে অতিরিক্ত ঘুম পাওয়া বা ‘হাইপারসোমনিয়া’, জেগে থাকার সময়েও মনোযোগের ঘাটতি, বিরক্তিভাব।
যেসব লক্ষণে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি
মস্তিষ্কের কোনো অংশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে রক্ত সঞ্চালন কমে যায় ফলে ‘ব্রেইন স্ট্রোক’ হয়। এটা দেহের বিভিন্ন অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
কথা ও আবেগ প্রকাশে জটিলতা, মুখ-হাত বা পায়ে অসাড়তা বা অবশবোধ, দেখতে সমস্যা, মাথা ব্যথা, হাঁটায় সমস্যা।
ঝুঁকি কমানোর উপায়
ঝুঁকি সৃষ্টিকারী কারণগুলো জানা প্রয়োজন। উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য সমস্যা থাকলে, সেসব নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।
স্বাস্থ্যকর ওজন মেনে চলা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস যেমন- ফল, সবজি ইত্যাদি খাওয়া স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।
এছাড়াও নিয়মিত শরীরচর্চা করা, ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা ইত্যাদি ব্রেইন স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। যদি ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’র লক্ষণ দেখা দেয় তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
আরও পড়ুন