Published : 03 May 2025, 06:46 PM
কয়েক দিনের ছোট একটি ভ্রমণ বা ব্যস্ততম অফিসের সফরের জন্য ব্যাগ গোছানো অনেক সময় দীর্ঘ ভ্রমণের চেয়েও বেশি ঝামেলার হয়ে দাঁড়ায়।
সময় কম, কাজ বেশি— তার ওপর লাগেজ ফি আর ভারী ব্যাগের ঝামেলা। এসব বিবেচনায় অল্পে সন্তুষ্ট থেকে কার্যকরভাবে ব্যাগ গোছানোই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
বিশেষ করে যখন ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকে বা কাজের ফাঁকে একটু মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে চান, তখন কোনো অনর্থক জিনিসপত্র সঙ্গে নেওয়ার মানেই নেই।
অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত কিছু নয়
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ট্রাভল ব্র্যান্ড ‘বেইস’-এর সভাপতি আদিলা হুসেইন জনসন এই বিষয়ে রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “যদি হাতে ছোট ব্যাগ থাকে, তাহলে আগে থেকেই ধরে নিতে হবে জায়গা সীমিত। এই সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেই পরিকল্পনা করতে হবে। যেমন- অফিসিয়াল সফরে গেলে অতিরিক্ত একটি শার্ট নেওয়া ভালো। তবে হোটেলের সুইমিং পুলে নামার জন্য একাধিক সুইমস্যুট নেওয়ার প্রয়োজন নেই।”
মিলিয়ে পরা যায় না এমন পোশাক
যে পোশাকগুলো একটির সঙ্গে আরেকটি পরা যায় না বা মেলানো যায় না এমন পোশাক ব্যাগ শুধু ভারী করে না বরং স্টাইলও সীমিত করে ফেলে।
জনসন বলেন, “শার্টে রংয়ের বৈচিত্র্য থাকলেও নিচের অংশ বা প্যান্ট যেন হয় ‘নিউট্রাল’। যা যে কোনো রংয়ের টপস’য়ের সঙ্গে মানিয়ে যাবে। ব্যাগ ও জুতার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য।”
দশ ধাপে ত্বকের যত্ন নয়
যদি দিনে দশ ধাপের ত্বক যত্ন করেন, তাহলে ছোট ভ্রমণে সময় কিছুটা কমাতে হবে।
জনসনের পরামর্শ- মেইকআপ ও টয়লেট্রিজ একসঙ্গে রাখার। মুখের ফাউন্ডেশন, যার সঙ্গে এসপিএফ রয়েছে, কিংবা এমন চুলের পণ্য যা ডিফ্রিজ এবং ফিনিশার দুই কাজেই লাগে। এই ধরনের মাল্টিটাস্কিং বা বহুমুখী প্রসাধনী নেওয়াই ভালো।
অপ্রয়োজনীয় ব্যাগ ও জুতা নয়
যেসব ব্যাগ বা জুতা একাধিক বার ব্যবহার করা যায় না, সেগুলো নেওয়া একেবারেই অনুচিত। হাই হিল হয়ত এক রাতের জন্য। তবে এর বদলে এমন কিছু নেওয়া উচিত যা পুরো ট্রিপেই পরা যাবে। কালো বা ‘ট্যান’ রংয়ের জুতা প্রায় সব ধরনের পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায়।
জনসন বলেন, “কমপ্যাক্ট ব্যাগগুলোই সবচেয়ে কার্যকর। যেমন- ‘কনভার্টিবল উইকেন্ডার’ ব্যাগ ছোট ভ্রমণের জন্য ভালো। যেটি পরে ছোট ব্যাগ হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।”
তিনি আরও বলেন, “ক্রসবডি বা স্লিং ব্যাগ ছোট ভ্রমণে অনেক বেশি কার্যকর। এতে ট্রাভেল ডকুমেন্ট, ফোন, ওয়ালেট— সবই এক জায়গায় থাকে।”
অনেক বেশি ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার সামগ্রী নয়
অনেক বেশি ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার সামগ্রী বা টয়লেট্রিজ নেওয়ার কোনো দরকার নেই। কারণ গন্তব্যে গিয়ে ট্রায়াল সাইজ কেনা যায়। এছাড়া হোটেলে সাবান, শ্যাম্পু বা ফেস ক্রিমের মতো পণ্য থাকে।
প্রতিদিনের জন্য আলাদা পোশাক নয়
প্রতিদিনের জন্য আলাদা পোশাক নেওয়া মানেই ব্যাগের বোঝা বাড়ানো। এক্ষেত্রে ‘রুল অফ থ্রি’ অনুসরণ করলেই যথেষ্ট।
যেমন- এক জোড়া প্যান্ট, শার্ট, একটি স্কার্ট, একটি ড্রেস। এই পদ্ধতি মেনে চললে নতুন পোশাক কিনে আনতেও জায়গা থাকবে।
প্যাকিং কৌশল: কীভাবে আরও কার্যকরভাবে ব্যাগ গোছাবেন?
আগে পরিকল্পনা: ক’দিন থাকবেন, কী করবেন, আবহাওয়া কেমন— এসব বুঝেই পোশাক ও প্রয়োজনীয় জিনিসের তালিকা তৈরি করতে হবে।
একাধিকবার ব্যবহার যোগ্য জিনিস: এমন ব্যাগ, জুতা বা পোশাক বেছে নিন যেগুলো একাধিকভাবে ব্যবহার করা যায়।
বহুমুখী প্রসাধনী ব্যবহার: ফাউন্ডেশন একইসঙ্গে ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও কাজ করে বা শ্যাম্পু যা কন্ডিশনারও— এমন পণ্য নিন।
ছোট পাউচ বা অর্গানাইজার ব্যবহার: ব্যাগের ভেতরে প্যাকিং কিউব বা পাউচ ব্যবহারে ছোট জায়গাতেই বেশি কিছু রাখা সম্ভব হয়।
স্যুটকেসে জায়গা রাখুন: এমনভাবে গুছিয়ে রাখতে হবে যাতে কেনাকাটা করে কিছু আনা যায়।
আরও পড়ুন
ভ্রমণে গিয়ে খরচ বাঁচানোর পন্থা