সুস্থ মস্তিষ্কের লক্ষণ

মেজাজের ওঠা-নামা, ঘুম ঠিকঠাক না হওয়াসহ নানান লক্ষণই বলে দেবে মস্তিষ্ক ভালো নেই।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2022, 08:46 AM
Updated : 23 Sept 2022, 08:46 AM

কিছু পন্থা পালন করলে মগজের ক্ষিপ্রতা বজায় রাখা যায়।

প্রতিদিন অনেক বুদ্ধিমত্তার কাজ করে যাচ্ছেন অনায়াসে। তার মানে এই নয় যে মস্তিষ্কের পর্যাপ্ত পরিচর্যা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘নিউরোসাইন্টিস্ট’ হেইলি নেলসন বলেন, “প্রথমেই জানতে হবে মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্যের মানে। এই ব্যাপারে আমার পছন্দ হল বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার বিবৃতি। আর তা হল- মস্তিষ্ক তখনই সুস্থ আছে যখন প্রতিটি মানুষ নিজের ক্ষমতা বুঝতে পারে এবং নিজেদের জ্ঞানীয়, আবেগ, মানসিক ও আচরণ যে কোনো পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।”

ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “শরীরের প্রতিটি কর্মকাণ্ডে মস্তিষ্কের ভূমিকা আছে। তাই এর যথাযথ যত্ন নেওয়া সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। এখন কথা হল কীভাবে নিতে হয় মস্তিষ্কের যত্ন?”

বিশ্রাম: ঘুমকে প্রাধান্য দিতে বলা হয় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যে কোনো আলোচনায়, এখানে আবারও সেই কথা বলতে হয়।

নেলসন বলেন, “আপনি যদি দ্রুত ঘুমিয়ে পড়তে পারেন, সারারাত আপনার ঘুম না ভাঙে এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি চাঙা অনুভব করেন, তবে বুঝে নিতে হবে সার্বিক বিবেচনায় আপনার স্বাস্থ্য ভালো আছে।”

আর যদি সেটা না হয়, তবে সারাদিন অবসাদ ও ঝিমঝিমভাব থাকবে শরীরে। কোনো কাজেই মনযোগ আসবে না।

মস্তিষ্ক সুস্থ আছে এমনটা বোঝার উপায় হল- মনযোগ দিতে পারা, কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত মনযোগ ধরে রাখতে পারা, যে কোনো পরিস্থিতি দ্রুত এবং সাবলীলভাবে সাড়া দিতে পারে ইত্যাদি।”

আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা: ডা. নেলসন বলেন, “প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যেও যদি বড় শ্বাস নিয়ে, ব্যায়াম কিংবা ধ্যান করে নিজেকে শান্ত রাখতে পারেন তাহলে আপনি আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন একথা প্রমাণিত।”

এমন আরেকটি লক্ষণ হল- প্রচণ্ড মানসিক চাপের কোনো পরিস্থিতি যুক্তি দিয়ে সামাল দিতে পরা।

অপরদিকে, ঘুরে ফিরে একই বিষয় নিয়ে চিন্তা করা, বিশেষ করে দুশ্চিন্তা করার পরিণতি ঠিক তার বিপরীত।

হতাশাগ্রস্ততা বা মানসিক অস্বস্তিগ্রস্ততার লক্ষণ এটা। যে কোনো চিন্তা সহজেই মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারা, সুস্থ স্বাভাবিক সম্পর্ক আর মানসিক চাপ সামাল দিতে পারাও সুস্থ মস্তিষ্কের পরিচায়ক।

আর তা পাওয়া জন্য ব্যায়াম করতে হবে, ডাইরি লিখতে পারেন, থেরাপি নিতে পারেন।

দ্রুত শিখতে পারা: সম্প্রতি নতুন কোনো বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখার চেষ্টা করেছেন? যদি করে থাকেন এবং দ্রুত সফলতা পেয়ে থাকেন তবে বুঝে নিতে হবে মস্তিষ্ক সুস্থ আছে।

ডা. নেলসন বলেন, “নতুন কিছু শেখা বা কোনো কৌশল আয়ত্ত করা মস্তিষ্কের জন্য প্রশিক্ষণের মতো।”

নিয়মিত প্রশিক্ষণ মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখবে, সঙ্গে সক্রিয় থাকবে শরীরও। আর নতুন কিছু দ্রুত শিখতে পারা এবং সেই জ্ঞান ধরে রাখতে পারা স্বাস্থ্যবান মস্তিষ্কের উপসর্গ।

অন্ত্র ভালো থাকা: অন্ত্রকে বলা হয় দ্বিতীয় মস্তিষ্ক, যার সত্যতা স্বীকার করেন ডা. নেলসনও। তিনি একে আরেকটি নাম দিয়েছেন ‘এন্টেরিক নার্ভাস সিস্টেম’। এখানে ইন্দ্রিয়ানুভূতি তৈরি হয়ে পৌঁছে যায় মস্তিষ্কে।

সেই সংকেত আবার ফিরে আসে অন্ত্রে এবং নিয়ন্ত্রিত হয় অন্ত্রের কার্যক্রম।

“অন্ত্র যদি ভালো না থাকে তবে মস্তিষ্কে যে সংকেত যাবে তা আপনার মেজাজকে তিরিক্ষি করে তুলবে। কিছু ‘প্রোবায়োটিক’ এই পরিস্থিতির উন্নয়ন করে”, বলেন ডা. নেলসন।

সামাজিক জীবন ঘটনাবহুল: সামাজিক যোগাযোগ যাদের ভালো, আত্মীয়, বন্ধুমহল, সহকর্মীদের নিয়ে যারা দিনটা হাসিখুশিভাবে কাটাতে পারেন তাদের মস্তিষ্ক ভালো থাকে।

বয়সের সঙ্গে মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় ক্ষমতা কমে যাওয়ার গতিও হয় ধীর। সামাজিক সম্পর্কগুলো বজায় রাখতে সিদ্ধান্ত নেওয়া, যাচাই বাছাই করা, মানুষ চেনা ইত্যাদি বিষয়ে দক্ষতা থাকতে হয়।

এর সবগুলোই মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় ক্ষমতার তীক্ষ্ণতার প্রমাণ।

আর আশপাশের মানুষের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকলে মানসকি চাপও থাকবে কম। ফলে মস্তিষ্ক ভালো থাকবে।

আরও পড়ুন

Also Read: ‘উন্নত জীবন পেতে’ সাইবর্গ হতেও রাজি মানুষ

Also Read: গড়ে নিন আনন্দময় জীবন

Also Read: মস্তিষ্ক দ্রুত বুড়ো হচ্ছে যেসব খাবারে

Also Read: মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখার খাবার