এমনকি এই ধরনের খাদ্যাভ্যাসে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের সম্ভাবনাও কমে।
Published : 05 Sep 2024, 04:06 PM
বয়সের সাথে স্মৃতিশক্তি কমার হাত থেকে বাঁচতে চাইলে অপ্রক্রিয়াজাত পূর্ণ শষ্য, ফল আর সবজি বেশি করে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
কারণ সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে প্রক্রিয়াজাত খাবারের পরিবর্তে যারা প্রাকৃতিক খাবার বেশি খেয়েছেন তাদের ‘ডিমেনশা’ বা স্মৃতিভ্রংশ রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমেছে ৩১ শতাংশ।
‘জামা নেটওয়ার্ক ওপেন’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণার প্রধান অ্যাবিগেইল ডোভ সিএনএন ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “শুধু স্মৃতিভ্রংশ নয়, টাইপ টু ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস পায় খাদ্যাভ্যাসে ফল সবজি রাখলে। সাথে খেতে হবে পূর্ণ শষ্য।”
এই ধরনের খাদ্যাভ্যাসকে বলা হচ্ছে ‘অ্যান্টি ইনফ্লামাটোরি’ বা প্রদাহরোধী খাবার।
সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইন্সটিটিউট’য়ের ‘এইজিং রিসার্চ সেন্টার’য়ের পিএইচডি শিক্ষার্থী ডোভ আরও বলেন, “এমনকি যাদের ইতোমধ্যে হৃদসংক্রান্ত-বিপাকীয় রোগের কারণে স্মৃতিভ্রংশ রোগ হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে তারও এই প্রদাহরোধী খাদ্যাভ্যাস থেকে উপকার পেতে পারেন।”
তিনি আরও বলেন, “যারা প্রদাহরোধী খাদ্যাভ্যাসে ছিলেন না তাদের তুলনায় যারা ছিলেন তাদের অন্তত দুই বছর পর স্মৃতিভ্রংশ রোগ তৈরি হতে দেখা গেছে।”
গবেষণার জন্য ‘ইউকে বায়োব্যাংক’য়ের ষাটোর্ধ্ব ৮৪ হাজার প্রাপ্ত বয়স্কের তথ্য পর্যালোচনা করা হয়। যাদের ইতোমধ্যেই টাইপ টু ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
পর্যবেক্ষণ-মূলক গবেষণা হওয়াতে কারণ ও প্রভাব জানা না গেলেও, আগের গবেষণাগুলো সাথে যোগ করে বলা যায়- ভালো মানের প্রদাহরোধী খাদ্যাভ্যাস বিভিন্ন ভাবে স্নায়ু ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে- গবেষণার সাথে যুক্ত না থেকেও এভাবে নিজের অভিমত জানান ‘প্র্রিভন্টি অ্যান্ড লাইফস্টাইল মেডিসিন’য়ের মার্কিন বিশেষজ্ঞ ডা. ডেভিড ক্যাটজ।
প্রদাহরোধী খাবার বলতে যা বোঝায়
খাবার কীভাবে প্রদাহের পথ তৈরি করে সেটা বোঝার উপায় না পাওয়া গেলেও গবেষকরা বিশ্বাস করেন চিনিযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার, মাংসে থাকা স্যাচুরেইটেড চর্বি ও প্রক্রিয়াজাত মাংস ‘ফ্রি র্যাডিকেলস’ বা মুক্ত মৌল তৈরি করে। যা কোষ পর্যায়ে যুক্ত হয়ে কোষের ক্ষয় ঘটায়। যা থেকে দেখা দেয় আলৎঝাইমার’স, ডিমেনশা-সহ নানান দীর্ঘস্থায়ী রোগ।
এছাড়া ২০২০ সালে বস্টনে অবস্থিত ‘হার্ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেল্থ’য়ের করা গবেষণার ফলফলে দেখা গেছে- অতিমাত্রায় ‘রেড মিট’ বা লাল মাংস এবং প্রক্রিয়াজাত আমিষ যেমন- সসেজ, বেকন সাথে চিনিযুক্ত অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া কারণে স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে ২৮ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান মায়ো ক্লিনিক’য়ের তথ্যানুসারে- ভিটামিনস, ক্যারোটিনয়েডস এবং ফ্লাভানয়েডস’য়ের মতো প্রদাহরোধী উপাদান মিলবে ফল, সবজি থেকে। এসব উপাদান ‘ফ্রি র্যাডিকেল’সহ অন্যান্য প্রদাহ তৈরির উপাদান কমানোর মাধ্যমে দেহের চাপ হ্রাস করে।
আরও পড়ুন
প্রদাহ কমাতে পারে এমন কয়েকটি সবজি
প্রদাহ কমাতে চাই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভরপুর খাবার