অনেকের চুল পাকে, অনেকের আবার চুল পড়ে।
Published : 26 Dec 2022, 05:22 PM
বয়স বাড়ার সঙ্গে কেশ পরিচর্যাতেও পরিবর্তন আনতে হয়।
সাধারণভাবে দেখা যায় বয়সের সঙ্গে চুল পাকছে। তবে অনেকের চুল বয়স্ক অবস্থায় সুন্দর ও ঘন থাকে।
তবে অধিকাংশেরই চুল পড়া, আগা ফাটা, সাদা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।
ভারতের বেঙ্গলুরু’তে অবস্থিত ‘এশিয়ান হেয়ার অ্যান্ড স্কিন হস্পিটাল’য়ের ডা. পার্থসারথি দত্ত রয় বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চুলের পরিবর্তন বোঝা ও সে অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরামর্শ দেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ায় ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বয়স্কদের চুল ভালো রাখতে কিছু পরামর্শ দেন তিনি।
পাতলা চুল: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চুল প্রাকৃতিকভাবেই পাতলা হতে শুরু করে। ধীরে ধীরে হরমোনের পরিবর্তন হয়। যে কারণে ‘ফলিকল’ সংকুচিত হয় এবং নতুন চুলের বৃদ্ধি ধীর হয়।
চুল পাকা: বয়স বাড়ার একটা সাধারণ লক্ষণ হল চুল পাকা। কারণ এসময় চুলের মেলানিনের উৎপাদন কমে। মেলানিন চুলের বর্ণের জন্য দায়ী। গবেষকদের মতে, অ্যামিনো অ্যাসিড ‘টাইরোসিন’ মেলানিন উৎপাদনে ভূমিকা রাখে।
খুশকি বৃদ্ধি: বয়স বাড়ার সঙ্গে মাথায় খুশকির সমস্যা বাড়ে। এটা প্রধানত মাথার ত্বক শুষ্ক ও রোগপ্রতিরোধের সমস্যার কারণে দেখা দেয়।
দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে না ফলে খুশকির হওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
চুল ফাটা: সিবাম উৎপাদন কমার কারণে বয়স বৃদ্ধির ফলে চুল ফাটার সমস্যা ও দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। সিবাম তৈলাক্ত, মোমযুক্ত পদার্থ যা মাথার ত্বকে সৃষ্টি হয় এবং চুল দেখতে চিটচিটে ও চকচকে লাগে।
সিবাম ছাড়া চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত চুল: বয়স বাড়ায় সঙ্গে চুল ক্ষয়ের প্রবণতা বাড়ে। যা কেরাটিনের উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে হয়। পর্যাপ্ত কেরোটিনের অভাবে চুল দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। আর আগা ফাটার সমস্যা দেখা দেয়।
শুষ্ক চুল: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সিবাম উত্পাদন হ্রাস পায়। তাই আগের তুলনায় চুল শুষ্ক হয়ে পড়ে। এর ফলে চুলে আগা ফাটা, রুক্ষতা ও অন্যান্য শুষ্কতাজনিত সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে চুলে আর্দ্রতা রক্ষাকারী শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করা জরুরি।
চুলের গঠনে পরিবর্তন: বয়স বৃদ্ধি চুলে গঠনগত পরিবর্তন আনে। কেরাটিনের উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় চুল খসখসে, মোটা এবং অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে।
উপরের এই লক্ষণগুলো বার্ধক্যের অনিবার্য দিক। তবে সঠিক যত্ন নিলে এই সমস্যা ধীর করে চুল সুস্থ রাখা সম্ভব বলে মনে করে ডা. পার্থসারথি।
তিনি চুল সুস্থ ও সুন্দর রাখার কয়েকটি উপায় সম্পর্কে পরামর্শ দেন।
চুল ধোয়ার পরে আফ্রিকান শিয়া বটার, গম ও সয়া প্রোটিনে তৈরি ‘ইমুলিয়েন্ট কন্ডিশনার’ ব্যবহার করা উপকারী।
মাস্ক ও গরম তেল মালিশ চুলে মসৃণভাব আনে এবং তারুণ্য বজায় রাখে। প্রাকৃতিক তেল- কাঠ বাদাম, তিল, জলপাই, জোজোবা বীজ বা আখরোটের তেল চুলে মসৃণভাব আনে। আর আর্দ্রতা ও পুষ্টি যোগাতে সহায়তা করে।
চুলের প্রাকৃতিক তেল ধরে রাখত দুয়েকবার ধোয়াই যথেষ্ট। বয়স্ক চুলের যত্নে কীভাবে চুল ধোয়া হয়, স্টাইল করা হয় এবং কী প্রসাধনী ব্যবহার করা হয় এগুলো ছাড়াও আরও অনেক বিষয় ভূমিকা রাখে। চুলের সঠিক যত্নে সম্পূরক গ্রহণ ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
স্বাস্থ্যকর ভিটামিন বা সম্পূরক- ভিটামিন বি, বায়োটিন, ফলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন সি, ই এবং কে - চুলের জন্য উপকারী।
আরও পড়ুন