সাধারণত আয়োডিনের অভাব হয় না। তবে নিরামিষাশী হলে অন্য কথা।
Published : 31 Aug 2022, 12:03 PM
হতে পারে গলাব্যথা কিংবা ঘাড় ফুলে যাওয়ার সমস্যা।
মন-শরীর ভালো রাখতে ভিটামিন ও খনিজ গুরুত্বপূর্ণ। দেহের পুষ্টি উপাদান যেমন- ভিটামিন ও ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণের গুরুত্ব সম্পর্কে মনোযোগ দেয়া হলেও থায়রয়েডের কার্যকারিতা বাড়াতে আয়োডিনের ভূমিকা সম্পর্কে অনেকেই সচেতন নয়।
যদিও আমাদের দেশে এই খনিজের ঘাটতি মেটাতে লবণের সঙ্গে আয়োডিন মিশ্রিত করে বাজারজাত করা হয়। তারপরও আয়োডিনের অভাব হলে শরীর বিভিন্নভাবে জানান দেয়।
আয়োডিন সম্পর্কে যা জানা দরকার
ক্যালিফোর্নিয়ায় ভিত্তিক নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ এবং ‘ফ্লোরিশড টেবিল’য়ের এলিশ হার্লো বলেন, “আয়োডিন সাধারণত প্রাকৃতিক উৎস যেমন- মাছ ও ‘সি-উইড’ থেকে পাওয়া যায়। এটা থায়রয়েড হরমোন নিঃসরণের জন্য প্রয়োজনীয়। আয়োডিন কোষের স্বাভাবিক কার্যকারিতা, থাইরয়েডের কার্যকারিতা এবং ভ্রূণ ও শিশুর বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়।"
শরীর নিজে থেকে আয়োডিন তৈরি করতে পারে না বলে তা বাইরের খাবারের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হয়।
ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই পুষ্টিবিদ যুক্তরাষ্ট্রের ‘দি রেকোমেন্ডেড অ্যালাওয়েন্স’য়ের তথ্যানুসারে আরও জানান, মানবদেহের দৈনিক আয়োডিনের চাহিদা ১৫০ মাইক্রো গ্রাম, গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ২২০ মাইক্রো গ্রাম এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য ২৯০ মাইক্রোগ্রাম।
হার্লো বলেন, “চাহিদা পূরণ করতে আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। অনেক সময় খাবারের মাধ্যমে এর চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নাও হতে পারে। যেমন- যারা সবজি খান বা নিরামিষভোজি তাদের খাবার থেকে আয়োডিন-জাতীয় খাবার বাদ দেওয়া সার্বিক আয়োডিন গ্রহণের মাত্রা কমায়।”
এক্ষেত্রে আয়োডিনের ঘাটতি নির্দেশ করতে প্রাথমিক অবস্থায় মূত্রের নমুনা গ্রহণ ও পরীক্ষা করে দেখা যায়।
হার্লো বলেন, “আয়োডিনের ঘাটতি নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। কারণ এটা খুব বেশি দেখা যায় না। আর যারা মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করেন তাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি আরও কম।
ঘাটতি বোঝার সাধারণ লক্ষণ
হার্লো বলেন, “আয়োডিনের ঘাটতির প্রথম লক্ষণ হল ‘সাবঅপ্টিমাল ফাংশনিং থাইরয়েড’, যেখানে থাইরয়েড কম হরমোন তৈরি করতে শুরু করে কিন্তু ‘হাইপোথাইরয়ডিজম’ হয়েছে কিনা তা পরীক্ষায় ধরা পড়ে না। ফলে চিকিৎসক কোনো ওষুধ দিতে পারে না।”
হার্লো বলেন, “চিকিৎসার অভাবে এটা ক্লিনিকাল হাইপোথায়ডিজমের দিকে ধাবিত হয়। এই পরিস্থিতিতে থায়রয়েড গ্রন্থি পর্যাপ্ত হরমোন তৈরি করে না। ফলে দেহের অন্যান্য কাজেও ব্যঘাত ঘটে।”
এর ফলে অনেক সময় ঘাড় ফোলা ও গলায় টান বা ব্যথার অনুভূতি হতে পারে।
আয়োডিনের ঘাটতির আরেকটি উদাহরণ হল গর্ভাবস্থা সম্পর্কীয় জটিলতা যেমন- অকালে প্রসব ও অস্বাভাবিক জন্মদান ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। মন পরিস্থিতিতে তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা ও আয়োডিন-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
গলা ব্যথা, ফোলাভাব বা থায়রয়েড সংক্রান্ত কোনো জটিলতা দেখা দিলে আয়োডিনের ঘাটতির পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
আরও পড়ুন