উচ্চ রক্তচাপে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর খাদ্যাভ্যাস

‘ড্যাশ ডায়েট’ উচ্চ রক্তচাপে ভোগা রোগীদের হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2022, 02:08 PM
Updated : 25 Sept 2022, 02:08 PM

গবেষণায় দেখা গেছে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনে হৃদরোগ আর স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো যেতে পারে।

‘হাইপারটেনশন’ যা উচ্চ রক্তচাপ হিসেবে পরিচিত। এই অবস্থার কারণে হৃদরোগ ও স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

তবে ‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’স হাইপারটেনশ সায়েন্টিফিক সেশন ২০২২’য়ে উপস্থাপিত গবেষণায় বলা হয়, জীবনযাত্রায় কিছু স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আনার মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

শারীরিক পরিশ্রম, স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা, ধূমপান ও মদ্যপান বর্জন করা ইত্যাদি হল সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ।

খাদ্যাভ্যাসের দিক থেকে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য আছে ‘ড্যাশ ডায়েট’ বা ‘ডায়েটারি অ্যাপ্রোচ টু স্টপ হাইপারটেনশন’।

এই খ্যাদ্যাভাস আগামী ১০ বছরে প্রায় ২৬ হাজার উচ্চ রক্তচাপের রোগীতে হার্ট অ্যাটাকের হাত থেকে বাঁচাতে পারে বলে দাবি করেন বিশেষজ্ঞরা।

যুক্তরাষ্ট্রের বস্টন ইউনিভার্সিটি’য়ের পুষ্টিবিদ্যার অধ্যাপক ডা. জোয়ান সালজে ব্লেক এই গবেষণার ফলাফলের প্রেক্ষিতে ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “উচ্চ রক্তচাপ নীরবে মানুষকে হত্যা করে যাচ্ছে। আক্রান্তরা দিনের পর দিন নিজেকে সুস্থ অনুভব করে যান কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ তিলে তিলে তাকে নিঃশেষ করে দিচ্ছে। তাই এই রোগ সামাল দেওয়ার জন্য এই গবেষণাগুলো গুরুত্বপূর্ণ।”

উচ্চ রক্তচাপ যাদের আছে তাদের রক্তনালীতে প্রতিনিয়ত স্বাভাবিকের চাইতে বেশি চাপ পড়ছে প্রতি মুহূর্তে। এতে রক্তনালী ক্রমেই পুরু হচ্ছে, স্থিতিস্থাপকতা হারাচ্ছে, যা বাড়াচ্ছে ‘অ্যাথেরোসক্লেরোসিসে’য়ের আশঙ্কা।

একই কারণে হৃদযন্ত্র বড় হচ্ছে এবং দুর্বল হচ্ছে। কারণ অঙ্গটিকে সমগ্র শরীরের অক্সিজেন ও পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ রক্ত সরবরাহ করতে কাজ করতে হচ্ছে বেশি। এখান থেকে সৃষ্টি হয় হৃদযন্ত্রের অবসাদজনীত কারণে দম আটকে আসা, হার্ট অ্যাটাক।

আর হৃদযন্ত্র থেকে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ করা রক্তনালী অবসাদগ্রস্ত হলে হয় স্ট্রোক।

ড্যাশ ডায়েট নিয়ে ডা. ব্লেক বলেন, “এই খাদ্যাভ্যাস সবজি, ফল, পরিপূর্ণ শষ্য, চর্বি কম এমন দুগ্ধজাত খাবার, ‘লিন প্রোটিন’, বাদাম ও বীজজাতীয় খাবারে সমৃদ্ধ। এখানে তেল হল স্বাস্থ্যকর ‘আনস্যাচুরেইটেড ভেজিটিবল অয়েল’ আর মিষ্টির মাত্রা কম।”

এই খাদ্যাভ্যাস থেকে লবণ বা সোডিয়াম যতই কমানো যাবে ততই উপকার মিলবে।

পুষ্টিমানের দিক থেকে হিসেব করলে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম আর ক্যালসিয়াম এই খাদ্যাভ্যাসে বেশি। এর সবগুলোই রক্তচাপ কমাতে কার্যকর। খাদ্যাভ্যাসের সবগুলো উপাদান মিলেই আসলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

খনিজগুলো হয়ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে বাকি উপাদানগুলো না থাকলে শুধু খনিজগুলোর কাজও ফিকে যায়।

আরও পড়ুন:

Also Read: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে করণীয়

Also Read: উচ্চ রক্তচাপ এড়ানোর সহজ উপায়

Also Read: উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে লবণের সম্পর্ক