উচ্চ রক্তচাপ এড়ানোর সহজ উপায়

অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকার চাইতে সাবধান হওয়া ভালো।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 August 2022, 10:15 AM
Updated : 4 August 2022, 10:15 AM

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ওষুধ যেমন দরকার তেমনি প্রয়োজন জীবনযাত্রার নিয়ন্ত্রণ।

উচ্চ রক্তচাপ থেকে সৃষ্টি হয় ‘ব্লাড ক্লট’। যে কারণে রক্ত জমাট বেঁধে রক্তনালী আটকে যায়। আর সেখান থেকে দেখা হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ইত্যাদি।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রিভেন্টিভ কার্ডিওলজিস্ট’ লুক লাফিন বলেন, “রক্তচাপের ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করা যায় দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে। বাকি ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ প্রয়োজন হতে পারে।”

তবে দৈনন্দিন অভ্যাস যদি বদলাতে না পারলে ওষুধ কোনো কাজেই আসবে।

মানসিক চাপ: মানুষ রেগে গেলে বা কষ্ট পেলে তার রক্তচাপ বেড়ে গেছে বলে মনে হয়। এই অনুভূতি একবারে অবান্তর নয়। কারণ দুটোই মানসিক চাপ।

ডা. লাফিন ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “মানসিক চাপে পড়লে শরীরের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হল রক্তচাপ বাড়ানো। মানসিক চাপগ্রস্ত পরিস্থিতিতে বেড়ে যায় হৃদস্পন্দনের গতি, অতিসক্রিয় হয়ে উঠে ‘সিম্ফ্যাটিক নার্ভাস সিস্টেম’। আর একারণেই বেড়ে যায় রক্তচাপ।”

শরীরের এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার ক্ষমতা আছে। তবে ক্রমাগত এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে শরীরের ক্ষতি হবে। আর সেটাই হল দুশ্চিন্তার বিষয়।

শরীরচর্চা: নিয়মিত শরীরচর্চা সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য আবশ্যক।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ক্লিনিকাল এক্সারসাইজ সাইকোলজিস্ট এরিক ভ্যান ইটার্সন একই প্রতিবেদনে পরামর্শ দেন, “সপ্তাহে কমপক্ষে পাঁচ দিন ৩০ মিনিট করে এমন কোনো শারীরিক কসরত করুন যা আপনার হৃদস্পন্দনের গতি বাড়িয়ে রাখবে পুরো সময়টুকু। একটানা ৩০ মিনিট সময় দিতে না পারলে তিনবারে ১০ মিনিট করে ব্যায়াম করুন।”

লবণ খাওয়ার মাত্রা কমানো: ‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’ বলছে, প্রতিদিন ২৩০০ মি.লি. গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া যাবে না।

আর লবণ খাওয়ার মাত্রা ১৫০০ মি.লি. গ্রামের মধ্যে রাখতে পারলে তা হবে আদর্শ।

দৈনিক দেড় থেকে দুই ডোজ উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খাওয়ার সমপরিমাণ উপকারিতা পাওয়া যায় খাদ্যাভ্যাসে সোডিয়ামের মাত্রা কম রাখার মাধ্যমে।

ডা. লাফিন বলেন, “আমরা মানুষকে পরামর্শ দেই খাদ্যাভ্যাসে লবণ বা সোডিয়ামের মাত্রা ১০০০ মি.লি.গ্রামে সীমাবদ্ধ রাখতে। লবণ কম খাওয়ার এই খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত হতে ১০ থেকে ১৪ দিন সময় লাগে। এরপর বেশি লবণ দেওয়া খাবার আপনার আর ভালো লাগবে না।”

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং: অনিয়মিতভাবে পানাহার থেকে বিরত থাকা রক্তচাপ কমাতে সহায়ক। তবে বয়স্কদের উচিত আগে ব্যাপারটা নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘কার্ডিওলজিস্ট অ্যান্ড এন্ডোক্রিনোলজিস্ট’ ডেনিস ব্রুয়েমার বলেন, “হার্ট অ্যাটাকের প্রধান কারণগুলো হলো উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস আর স্থুলতা। এগুলো যদি কমানো যায় তবে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও কমে যায়। এজন্য আমরা রোগীদের ক্যালরি কম কিংবা প্রোটিন বেশি থাকে এমন খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করার পরামর্শ দেই।”

তবে এই খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা জন্য চিকিৎসকের তত্ববধানে থাকতে হবে। চিকিৎসকরা প্রতিমাসে রক্ত পরীক্ষা করবেন। শরীরে ‘ইলেক্ট্রোলাইট’য়ের ভারসাম্য বজায় রাখতে ‘পটাশিয়াম সাপ্লিমেন্ট’ নিতে হতে পারে।

পর্যাপ্ত ঘুম: ডা. লাফিন বলেন, “ঘুম যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা মাত্র জানতে শুরু করেছি। নিয়মিত রাতে ছয় থেকে আট ঘণ্টা একটানা ঘুমানো উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। রক্তচাপের তারতম্যও দূর হবে এতে। রক্তচাপ ওঠানামা করাও শরীরের জন্য ক্ষতিকর।”

আরও পড়ুন

Also Read: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে করণীয়

Also Read: উচ্চ রক্তচাপের প্রধান কারণ

Also Read: উচ্চ রক্তচাপে উপকারী খাবার

Also Read: নিম্ন রক্তচাপে ঘরোয়া সমাধান

Also Read: বংশগত উচ্চ রক্তচাপ সামাল দিতে খাদ্যাভ্যাসের দিকে নজর দিন

Also Read: উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে লবণের সম্পর্ক