উচ্চ রক্তচাপ যাদের আছে সম্ভবত তাদের মধ্যে সকলেই শুনেছেন লবণ কম খাওয়ার উপদেশ। শুধু তাই নয়, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা যাতে না হয় সেজন্য লবণ কম খাওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়।
ভারতের ফোর্টিস হাসপাতালের ‘ইন্টারনাল মেডিসিন’ বিশেষজ্ঞ ডা. রাজিব গুপ্তা স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “লবণ আর উচ্চ রক্তচাপের মধ্যকার সম্পর্ক জানতে হবে আগে বুঝতে হবে লবণ কীভাবে শরীরে খারাপ প্রভাব ফেলে।”
ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ডা. রাজিব বলেন, “লবণের কারণে বৃক্ক বেশি পানি ধরে রাখে। বৃক্কের কাজ হল রক্তে থাকা অতিরিক্ত পানি ছেঁকে মুত্রথলিতে পাঠানো, যা প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। যাকে বলে ‘অসমোসিস’। এই পদ্ধতি চলার সময়ে অতিরিক্ত পানি বের করার জন্য পটাসিয়াম ও সোডিয়ামের মধ্যে অত্যন্ত সংবেদনশীল ভারসাম্য ধরে রাখে বৃক্ক। লবণ বা সোডিয়াম ক্লোরাইড শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বাড়ায় এবং বৃক্কের পানি অপসারণ ক্ষমতা কমায়।”
চিকিৎসকরা বলেন, “রক্তনালীতে তরলের মাত্রা বেশি হলে সেগুলোর ওপর বাড়তি ধকল যায়। সেই ধকল সামলানো জন্য রক্তনালী পুরু হতে থাকে, ফলে তার ভেতরের রক্ত সঞ্চালনের জায়গা কমতে থাকে। এতে চাপ আরও বাড়ে। এই অবস্থায় অতিরিক্ত লবণ খাওয়া হলে রক্তনালী ফেটে যাওয়া কিংবা তার ভেতরে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এমনটা হলে শরীরে দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, মস্তিষ্ক এবং হৃদযন্ত্র।”
ডা. গুপ্তা বলেন, “হৃদযন্ত্রে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেখানে অক্সিজেন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানসমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছানোর মাত্রা কমবে। তখন বুকে তীক্ষ্ণ ব্যথা দেখা দিতে পারে। এরপরও লবণ খাওয়ার পরিমাণ না কমালে রক্তনালী ফেটে যাওয়া কিংবা রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা অনেক বাড়বে।”
তিনি আরও বলেন, “মস্তিষ্কের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি একইরকম। রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হলে মস্তিষ্কেও অক্সিজেন আর পুষ্টি উপাদানের কমতি দেখা দেবে। এতে মস্থিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা লোপ পাবে, দেখা দিতে পারে ‘ভাস্কুলার ডিমেনশিয়া’।
“এসময় লবণ খাওয়ার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ না করলে রক্তনালী পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, হতে পারে ‘ব্রেইন স্ট্রোক’।”
আরও পড়ুন