স্বাস্থ্যের বারোটা বাজতে পারে এরকম যতগুলো বিষয় আছে সবগুলোই ঘটাতে পারে প্রক্রিয়াজাত খাবার।
Published : 21 May 2024, 01:12 PM
আলুর চিপসের প্যাকেট, খোলা মাত্রই আর দেরি করা যায় না, টপাটপ মুখের পুরতে ইচ্ছে করে। আর এটা যে অস্বাস্থ্যকর সেটাও জানা।
তারপরও এই ধরনের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা যায় না। এমনকি বাদামের বার, আলাদা স্বাদ যুক্ত করা দই- এরকম প্যাকেটজাত বহু খাবারই আশপাশে পাওয়া যায়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না।
তবে কতটা ভালো না?
সম্প্রতি এই বিষযে গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, স্বাস্থ্য-বিষয়ক যে কোনো সমস্যা তৈরিতে ভূমিকা রাখে প্রক্রিয়াজাত খাবার।
প্রক্রিয়াজাত খাবার বলতে যা বোঝায়
ব্রাজিলের ‘ইউনিভার্সিটি অফ সাও পাওলো’র গবেষকরা প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলো নতুন বিভাগে ভাগ করার পরামর্শ দেয়, তাদের এই প্রস্তাবিত পদ্ধতির নাম হল ‘নোভা’।
মাংস, শষ্য বা সবজি হিসেবে নয় বরং খাবার কতটা প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে সেই হিসেবে নানানভাগে ভাগ করা হবে।
তারা এই পদ্ধতিতে চারটি ভাগে ভাগ করে প্রক্রিয়াজাত খাবার। যা প্রকৃতি থেকে পাওয়া খাবার অল্প মাত্রায় প্রক্রিয়াজাত থেকে বেশি মাত্রায় প্রক্রিয়াজাত করা পর্যন্ত বিস্তৃত।
এই বিষয়ে সিএনএন ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মার্কিন খাদ্য-নীতি বিশেষজ্ঞ ডা. ম্যারিঅন নেসলে বলেন, “কাঁচামাল বা উপকরণ ও যন্ত্রপাতি না থাকায় যেসব খাবার বাসায় বা রান্নাঘরে তৈরি করা যায় না সেগুলোই হল আমার কাছে প্রক্রিয়াজাত খাবার।”
অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবারে যে ধরনের সংরক্ষক, স্বাদ, রং ও ঘন করার উপাদান ব্যবহার করা হয় সেগুলো সাধারণত নিজে রান্না করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় না।
অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর
ডা. নেসলে বলেন, “প্রায় দেড় হাজারের বেশি পর্যবেক্ষণমুলক গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে প্রক্রিয়াজাত খাবারের সঙ্গে স্থূলতা, টাইপ টু ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিছু ক্যান্সারসহ সার্বিকভাবে নানান রোগ তৈরিতে ভূমিকা রাখে।”
নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি’র এই অধ্যাপক আরও বলেন, “স্বাস্থ্যের জন্য যা যা খারাপ বিষয় মাথায় আসবে সেসবই প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার কারণে হবে।”
৮ মে জামা সাময়িকীতে প্রকাশিত বস্টনের ‘চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেল্থ’ পরিচালিত ৩০ বছরের গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারের সঙ্গে যে কোনো ধরনের মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায় এরকম রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৪ শতাংশ।
এর মধ্যে ৯ শতাংশ বাড়াতে পারে স্নায়ু-সম্পর্কিত মৃত্যু। এছাড়া অন্যান্য রোগের মধ্যে রয়েছে হৃদসমস্যা, টাইপ টু ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, মানসিক সমস্যা যেমন- বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তায় ভোগা।
প্রক্রিয়াজাত খাবার ওজন বাড়ায়
গবেষণায় দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীরা যখন প্রক্রিয়াজাত খাবার খেয়েছেন তখন প্রতিদিন তারা অতিরিক্ত ৫শ’ ক্যালরি গ্রহণ করেছে। আর দুই সপ্তাহে গড়ে তাদের ওজন বেড়েছে দুই পাউন্ড।
প্রক্রিয়াজাত খাবার সহজে এড়ানো যায় না
এই ধরনের খাবার সব জায়গায় চোখে পড়ে। ফলে কোনো কিছু না বুঝেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব খাবার খাওয়া হয়ে যায়। যেমন- আলু ভাজা, চিপস, পিনাট বাটার, জ্যাম, জেলি ইত্যাদি।
সস্তা ও সহজলোভ্য
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, প্রাকৃতিক খাবারের চাইতে প্রক্রিয়াজাত খাবারের দাম কম আর সহজে পাওয়া যায়। যে কারণে হয়ত এসব প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খাওয়া হয়ে যায়।
সব প্রক্রিয়াজাত খাবার খারাপ না
কিছু প্রক্রিয়াজাত খাবারে পুষ্টিগুণও থাকে। যেমন- পূর্ণ শষ্যের তৈরি পাউরুটি, দই। আর গবেষণায় দেখা গেছে এসব খাবার ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ বাড়ায় না।
আরও পড়ুন