নির্মাতা দিবাকর বন্দোপাধ্যায় এক পডকাস্টে হাজির হয়ে বলেছেন তিনি এবার বলিউডের পর্দায় সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদাকে আনতে চাইছেন।
Published : 29 Dec 2023, 01:34 PM
বাঙালি পাঠক-দর্শকের কাছে কালজয়ী গোয়েন্দা চরিত্র ‘ফেলুদা’র উপস্থিতি ছয় দশক। দীর্ঘযাত্রায় ফেলুদার গল্প এসেছে বড় পর্দায়, টেলিভিশনের সিরিজ এবং ওটিটিতে। তবে সবই বাংলা ভাষায়। এবার ফেলুদার গল্প যাচ্ছে বলিউডে।
সংবাদ প্রতিদিন বলছে, নির্মাতা দিবাকর বন্দোপাধ্যায় বলিউডের পর্দায় সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদাকে আনতে চাইছেন। এক পডকাস্টে হাজির হয়ে তিনি নিজেই সে কথা বলেছেন।
এর আগে ব্যোমকেশ বক্সীর গল্প নিয়ে সিনেমা বানিয়েছিলেন দিবাকর। যেখানে সত্যান্বেষী হয়েছিলেন প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত।
দিবাকর বলেন, "আমার বরাবরই ব্যোমকেশ ও ফেলুদা পছন্দ। শরদিন্দুর ব্যোমকেশকে সিনেপর্দায় এনেছি। এবার সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদাকে আনতে চাই। গল্পও বাছা হয়ে গেছে।”
তবে কোন গল্প নিয়ে ফেলুদার সিনেমা বানাবেন দিবাকর, সে বিষয়ে কোনো আভাস তিনি দেননি।
এর আগেও একবার ফেলুদার গল্প নিয়ে সিনেমা তৈরির কথা ভেবেছিলেন দিবাকর। সে সময় তিনি ফেলুদার চরিত্রে অভিনেতা অভয় দেওলকে ভেবে রেখেছিলেন। কিন্তু সে সময় সিনেমা নিয়ে কাজ আগায়নি।
ফেলুদার স্বত্ত্ব রয়েছে এর স্রষ্টা সত্যজিৎ রায়ের পরিবারের হাতে। অর্থাৎ যে কোনো মাধ্যমেই ফেলুদার গল্প বলতে চাইলে সত্যজিতের ছেলে নির্মাতা সন্দীপ রায়ের অনুমতি নিতে হবে।
দিবাকরের ফেলুদা নিয়ে কাজ করার খবর সন্দীপ রায় জানেন কী না, সেই প্রশ্নে দিবাকর বলেন, "এখন পর্যন্ত কারো সঙ্গে আমার কথা হয়নি। তবে যদি এমন কিছু হয়, নিশ্চয় তখন আলোচনা করব।"
১৯৬৫ সালের ডিসেম্বরে ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় সত্যিজিৎ রায়ের লেখা ফেলুদা সিরিজের প্রথম গল্প ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরির’ প্রথমভাগ প্রকাশিত হয়। এরপর ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত এ সিরিজের মোট ৩৫টি সম্পূর্ণ এবং চারটি অসম্পূর্ণ গল্প ও উপন্যাস প্রকাশিত হয়।
সত্যজিৎ কেবল দুই মলাটে তার গোয়েন্দাকে সীমাবদ্ধ রাখতে চাননি। তিনি নিজেই পর্দায় আনেন ফেলুদাকে।
ফেলুদা হলেন একজন প্রাইভেট ডিটেক্টিভ, পুরো নাম প্রদোষ চন্দ্র মিত্র। ছয় ফুট দীর্ঘ শরীরের ওপর মাথায় ধরেন তীক্ষ্ণ বুদ্ধি। গোয়েন্দিগিরিই তার পেশা এবং নেশা।
তার সহকারী তার খুড়তুতো ভাই তপেস রঞ্জন মিত্র, যাকে ফেলুদা ডাকেন তোপসে বলে। আর সব অ্যাডভেঞ্চারে তাদের সঙ্গী রহস্য-রোমঞ্চ উপন্যাস লেখক লালমোহন গাঙ্গুলি ওরফে জটায়ু।
ফেলুদা, তোপসে আর জটায়ুকে নিয়ে সত্তরের দশকে সত্যজিৎ নির্মাণ করেছিলেন ‘সোনার কেল্লা’ ও ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ সিনেমা দুটি। যেখানে ফেলু মিত্তির হয়ে আসেন প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
এরপর সত্যজিতের ছেলে সন্দীপ রায়ের পরিচালনায় ফেলুদার গল্প নিয়ে বেশ কিছু সিনেমা ও টেলিভিশন সিরিজ দেখেছে দর্শক। সন্দীপের ফেলু মিত্তির হন কলকাতার অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী।
সব্যসাচীর পর সন্দীপ রায়ের হাত ধরে এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন আবীর চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া সন্দীপের পরিচালনায় গত বছর ‘হত্যাপুরী’ সিনেমা দিয়ে পাঁচ বছর পর বড় পর্দায় ফেরে ফেলুদা। এই সিনেমায় ফেলুদা হয়েছেন কলকাতার অভিনেতা ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত।
ইন্দ্রনীলকে নিয়ে এই নির্মাতা আগামীতে পর্দায় আনছেন ফেলুদার নতুন সিনেমা 'নয়ন রহস্য'।
কলকাতার পরিচালক সৃজিৎ মুখার্জিও নির্মাণ করেছেন ওয়েব সিরিজ ‘ফেলুদা ফেরত’ এবং ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’।
সৌমিত্র, সব্যসাচী, আবীর ও ইন্দ্রনীল ছাড়াও সিনেমা ও ওটিটিতে ফেলুদা হয়েছেন টোটা রায়চৌধুরী এবং পরমব্রত বন্দোপাধ্যায়।
ফেলুদা হিসাবে মানাচ্ছে? জবাব দিলেন পরমব্রত
ওয়েব সিরিজ ‘সাবাশ ফেলুদা’র টিজার প্রকাশ
সৃজিতের ‘ফেলুদা’কে নিয়ে সমালোচনা
সত্যজিৎ রায়ের জন্মবার্ষিকীতে নতুন সিনেমার ঘোষণা ছেলের