মামলা করে নিজের ‘জয়’ দেখছেন শাকিব খান

“সবকিছুর একটা লিমিট থাকা উচিৎ, প্রতারণারও একটা লিমিট থাকা উচিৎ।”

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2023, 04:35 PM
Updated : 23 March 2023, 04:35 PM

উকিল নোটিস পাওয়ার পাল্টায় সহ প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন চিত্রনায়ক শাকিব খান। আর এতেই নিজের জয় দেখার কথা জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে মামলা করার পর বিকালে নিজের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন শাকিব খান।

সেখানে তিনি বলেন, “আজকে দিন শেষে জয়ের হাসিটা আমরাই হাসছি। দিনশেষে সেই প্রতারক কিন্তু পালিয়েই গেল। আমাদেরই জয় হল। যারা সত্য ন্যায়ের পক্ষে থাকবে তারাই জয়ের হাসি হাসবে।”

অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী রহমতকে আটকাতে গত শনিবার রাতে গুলশান থানায় গিয়েছিলেন শাকিব। থানা মামলা না নেওয়ায় পরদিন তিনি যান ডিবিতে। সেখানে নালিশ জানানোর পর সাংবাদিকদের সামনে এসে রহমতকে ‘প্রতারক-বাটপার’ বলেছিলেন তিনি।

তার ওই কথায় মানহানি হয়েছে উল্লেখ করে বুধবার উকিল নোটিস পাঠান রহমত উল্লাহ, তারপর বুধবার মামলা করলেন ঢাকাই সিনেমার শীর্ষ নায়ক।

কেবল মামলা হয়েছে, এরই মধ্যে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হল কীভাবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে শাকিব বলেন, “আপনারা তো জেনেছেন, ওই লোক অপারেশন অগ্নিপথ সিনেমার প্রযোজক না, এটা তো আপনারা ক্লিয়ার? যদি না ক্লিয়ার হয়ে থাকেন আপনারা প্রযোজক সমিতিতে যান।”

শাকিব পাঁচ বছর আগে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমা করতে চুক্তিবদ্ধ হন। এর পরিচালক আশিকুর রহমান। এতে শাকিবের নায়িকা সিবা আলী খান। সিনেমাটি এখনও মুক্তি পায়নি।

গত ১৫ মার্চ দেশে এসে শাকিব খানের বিরুদ্ধে পরিচালক সমিতি, প্রযোজক সমিতি ও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ করেন রহমত উল্লাহ।

Also Read: অভিযোগ নিয়ে শাকিব খানের সঙ্গে ‘কথা বলার চেষ্টা’ করবেন নিপুণ

Also Read: ডিবিতে নালিশ করে ‘আশ্বস্ত’ শাকিব খান

Also Read: শাকিব খানের কাছে উকিল নোটিস গেছে: রহমত উল্লাহ

Also Read: শাকিব খানের মামলায় রহমত উল্লাহর নামে সমন

তাতে শাকিব খানের বিরুদ্ধে প্রযোজকের আর্থিক ক্ষতি সাধনের অভিযোগ করার পাশাপাশি বলা হয়, ২০১৭ সালে সিনেমার শুটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে এক নারী সহপ্রযোজককে ‘ধর্ষণ’ও করেন শাকিব খান, যা নিয়ে মামলাও হয়।

শাকিব খান সেই অভিযোগ অস্বীকারের পাশাপাশি বলেন, অপারেশন অগ্নিপথ সিনেমাটির প্রযোজক জানে আলম নামে একজন। রহমত উল্লাহর সঙ্গে তার কোনো লেনদেনই হয়নি। শুধু প্রবাসী বাংলাদেশি হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল।

সিনেমার টিজারে ‘এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার’ হিসেবে রহমত উল্লাহর নাম আছে, সে কথা মনে করিয়ে দিলে শাকিব খান বলেন, “এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার আর প্রোডিউসারের মধ্যে পার্থক্য আছে। আমরা যেখানে, যে দেশে শুটিং করতে যাই সেখানকার লোককে হায়ার করতে হয়। তাকে বলে লাইন প্রোডিউসার বা এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার। যখন কেনো দেশে শুটিং করতে যাই, একটা গ্রুপ সেই বিষয়টা তদারকি করেন, লজিস্টিক সাপোর্ট দেন। অ্যারেঞ্জমেন্টের কাজগুলো করেন।

“মেইন যে প্রযোজক তার স্টেটমেন্ট তো আপনারা শুনেছেন। তারপরও যদি এই প্রশ্ন করেন তাহলে তো কিছু বলার নাই। উনি (রহমত) প্রযোজক না, প্রযোজক হিসেবে অভিযোগ করেছেন। প্রথমেই উনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন।”

অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ তার পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

রহমত উল্লাহর দেশ ছাড়ার ক্ষেত্রে দেশের কারও সহযোগিতা ছিল বলে অভিযোগ করেন এই চিত্রনায়ক।

তিনি বলেন, “উনি কোনো প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দেশ ছাড়তে পেরেছেন, এটা প্রতারক এবং প্রতারক চক্রের সফলতাই বলব।

“কারণ, আমি যদি অস্ট্রেলিয়ার প্রশাসনের কাছে অভিযোগটা করতাম, অস্ট্রেলিয়ান প্রশাসন কিন্তু তাকে ইমিগ্রেশনেই আটকানোর ব্যবস্থা করতেন। আমি কখনও পুলিশের বিষয়ে কথা বলতে চাই না; কারণ পুলিশের ভাবমূর্তির সঙ্গে আমার ইমোশন জড়িয়ে আছে। আমার বড় চাচা ডিএমপির কর্মকর্তা ছিলেন।”

সাংবাদিকদের উদ্দেশে শাকিব খান বলেন, “সবকিছুর একটা লিমিট থাকা উচিৎ, প্রতারণারও একটা লিমিট থাকা উচিৎ।

“পর্দার বাইরেও তো আমি একজন মানুষ। আমি মানুষকে দেখাচ্ছি, শেখানোর চেষ্টা করছি- আপনার সাথে কোনো অন্যায় হলে অবশ্যই সেটার বিচার চাইবেন। অবশ্যই ন্যায় বিচারের জন্য লড়াই করবেন। দেশে আইন আছে, প্রশাসন আছে, তাদের কাছে ছুটে যাবেন, লড়াই করবেন, দিনশেষে আপনারই কিন্তু জয় হবে।”