এর আগে স্বাধীনতা দিবসের আগেই আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করার কথা জানানো হয়েছিল।
Published : 06 Mar 2023, 09:46 PM
নির্মাণাধীন নতুন শহীদ মিনারে ঝুঁকি থাকায় ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শেষ না হওয়ায় চট্টগ্রামে স্বাধীনতা দিবসের আনুষ্ঠানিকতাও অস্থায়ী শহীদ মিনারে পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সোমবার সকালে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান নতুন শহীদ মিনারের নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন। এসময় তার সঙ্গে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিনিধি ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত হয়।
পরিদর্শন শেষে নগরীর মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুলের মাঠে অস্থায়ী শহীদ মিনারে ২৬ মার্চের আনুষ্ঠানিতা পালনের সিদ্ধান্তের কথা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করে প্রকল্প কাজে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের ক্ষেত্রে সাইট সেফটির বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারেননি।
“শহীদ মিনারের নির্মাণাধীন স্থানের ঝুঁকি ও সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য অপ্রতুল সময় বিবেচনায় আসন্ন মহান স্বাধীনতা দিবস নতুন শহীদ মিনারে পালন না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।”
এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আবদুল মালেক, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাহুল গুহ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদসহ উপস্থিত সকলে একমত পোষণ করেন বলেও জানান তিনি।
এরআগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছিলেন, ২৬ মার্চের মধ্যে আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনার ও সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের পরিদর্শনে গিয়ে সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষের তাগাদা দেন।
চট্টগ্রামের সংস্কৃতিকর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবির মুখে চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট হল ভেঙে সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
‘আংশিক’ প্রস্তুত চট্টগ্রামের শহীদ মিনার, আরও অপেক্ষা
চট্টগ্রামে এবারও বিকল্প শহীদ মিনারে বিজয় দিবস
চট্টগ্রামে নতুন শহীদ মিনার উদ্বোধন
নতুন করে গড়তে ভাঙা হল চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার
শুরুতে ২৩২ কোটি টাকা বাজেটের এই প্রকল্পের কাজ আরম্ভ হয় ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। আর ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পুরনো কাঠামো ভেঙে নতুনটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
প্রকল্পটির বাজেট বেড়ে ২৮১ কোটি টাকা হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ এর জুন পর্যন্ত। তবে সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের পুরো কাজ শেষ করতে আরও সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
প্রকল্পের অধীনে মুসলিম ইনস্টিটিউট হল ও পাবলিক লাইব্রেরি অংশের পুরানো স্থাপনা ভেঙে ১৫ তলা গণগ্রন্থাগার ও ৮ তলা মিলনায়তন ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে।
সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের দুই অংশের মধ্যে সংযোগ ঘটাতে রাস্তার ২১ ফুট ওপর দিয়ে একটি প্লাজা নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্পের নকশা অনুসারে আগের শহীদ মিনারটির ভিত্তি ভাঙার পাশাপাশি মিনার আরও উঁচুতে স্থাপন করতে হচ্ছে।
নির্মাণ কাজের জন্য পুরনো শহীদ মিনারটি ভেঙে ফেলায় গত বছর ৫ ফেব্রুয়ারি নগরীর মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বিকল্প একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। সেখানেই গত বছর ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বর ও এবার ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করা হয়।
১৯৬২ সালে নগরীর কেসি দে রোডে পাহাড়ের পাদদেশে চট্টগ্রাম নগরীর প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। পরে ১৯৭৪ সালে এটি বর্তমান রূপ লাভ করে।
চট্টগ্রামে কোনো স্মৃতিসৌধ না থাকায় ১৬ ডিসেম্বর ও ২৬ মার্চসহ জাতীয় দিবসগুলোতে এখানেই কর্মসূচি পালন করা হয়।