“পতেঙ্গা প্রান্তে চারটি টোল প্লাজা স্থাপন করা হয়েছে। সেখানেই ওঠা-নামা করা সব গাড়ির টোল আদায় করা হবে।”
Published : 02 Jan 2025, 11:31 PM
চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বিভিন্ন যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে টোল কমিয়ে পুননির্ধারণের পর এবার টোল আদায় শুরু হচ্ছে।
শুক্রবার থেকে সব ধরনের যানবাহনে আনুষ্ঠানিকভাবে টোল আদায় শুরু হবে। ২০২৪ সালের অগাস্টের শেষ সপ্তাহ থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি চলাচল শুরু করলেও এত দিন কোন টোল আদায় করা হয়নি।
এলিভেটেডের এক্সপ্রেসওয়ের পতেঙ্গা প্রান্তে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান টোল আদায় কার্যক্রম উদ্বোধনের কথা রয়েছে।
তার আগেই নাম বদল করা হয়েছে এক্সপ্রেসওয়ের। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাদ দিয়ে ‘শহীদ ওয়াসিম আকরাম উড়াল সড়ক’ নামকরণের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বুধবার।
২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টের ছাত্র জনতার অভুত্থ্যানের ‘প্রথম শহীদ’ চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র ওয়াসিম আকরাম ছিলেন কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক।
এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মোটর সাইকেল ও ট্রেইলার চলাচল নিষেধ। মোটর সাইকেল চলাচলের বিষয়টি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, সিডিএ প্রস্তাব করলেও অনুমোদন মেলেনি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে।
টোল হার অনুসারে, পতেঙ্গা থেকে জিইসি পথে চলাচলকারী যানবাহনের মধ্যে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও অটো (তিন চাকা) ৩০ টাকা, প্রাইভেট কার ৮০ টাকা, জিপ ও মাইক্রেবাস ১০০ টাকা, পিকআপ ১৫০ টাকা, মিনিবাস ২০০ টাকা, বাস ২৮০ টাকা, ট্রাক (৪ চাকা) ২০০ টাকা, ট্রাক (৬ চাকা) ৩০০ টাকা ও কাভার্ড ভ্যান ৪৫০ টাকা টোল দিয়ে চলাচল করতে হবে।
যেহেতু এখনো এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে কোন র্যাম্প চালু হয়নি তাই এই একটি টোল হারই ধার্য করার কথা বলেছেন সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পতেঙ্গা প্রান্তে চারটি টোল প্লাজা স্থাপন করা হয়েছে। সেখানেই ওঠা-নামা করা সব গাড়ির টোল আদায় করা হবে। আপাতত সিডিএ টোল আদায় করবে। পরে টেন্ডারের মাধ্যমে আমরা অপারেটর নিয়োগ করব এ কাজের জন্য।
“র্যাম্প চালু হলে তখন প্রতি র্যাম্পে একটি বা দুটি টোল প্লাজা থাকবে।”
শুক্রবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম উপস্থিত থাকবেন।
নগরীর লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।
২০১৭ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন হওয়ার সময় ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছিল তিন বছর।
পরে ২০২২ সালে নকশা ‘সংশোধন’ করে আরও এক হাজার ৪৮ কোটি টাকা (আগের ব্যয়ের চেয়ে ৩২ শতাংশ) ব্যয় বাড়িয়ে মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
এক্সপ্রেসওয়েটি প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে করার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছিল গত সরকারের আমলে।
কাজ অসমাপ্ত রেখেই ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রকল্পের কাজ শুরুর পর চট্টগ্রাম বন্দরের আপত্তি, জমি অধিগ্রহণের জন্য অপেক্ষা, ট্রাফিক বিভাগের অনুমতি না পাওয়া, লালখান বাজার অংশের নকশা নিয়ে আপত্তি, কোভিডের সময় কাজে ধীরগতি, বিকল্প সড়ক চালু করতে দেরি এবং সর্বশেষ বন্দর সংলগ্ন এলাকায় নকশা পরিবর্তনসহ নানা কারণে দেরি হয়।
এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বিমানবন্দর এলাকা থেকে শুরু হয়ে ইপিজেড-বন্দর-বারেকবিল্ডিং-চৌমুহনী হয়ে দেওয়ানহাট রেলসেতুর পশ্চিম পাশ দিয়ে পাহাড় ঘেঁষে টাইগার পাস মোড়ের পর মূল সড়কের ওপর দিয়ে লালখান বাজার মোড় পেরিয়ে ওয়াসার মোড়ে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে গিয়ে মিলবে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচটি র্যাম্প বিভিন্ন কারণে আপাতত নির্মাণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিডিএ। বাকি র্যাম্পগুলোর কয়েকটি র্যাম্প নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
পুরনো খবর:
চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: টোল হার কমিয়ে নতুন প্রস্তাব
চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ৫টি র্যাম্প আপাতত 'না'
চট্টগ্রামে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে 'কিছু অসঙ্গতি' পেয়েছে তদন্ত কমিটি
চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: এবার র্যাম্প নিয়ে বাওয়া স্কুলের
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: পতেঙ্গা প্রান্তে 'উল্টো' ফলের শঙ্কা ট্রাফিক
চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হচ্ছে র্যাম্প ছাড়াই
টাইগারপাস-সিআরবি সড়কে গাছ কেটে র্যাম্প নয়: দুই মন্ত্রীর নির্দেশ