চট্টগ্রামের মামলায়ও বাবুলের বাবা-ভাইয়ের জামিন

একই অভিযোগে ঢাকায় করা মামলায়ও তারা জামিনে রয়েছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Jan 2023, 12:18 PM
Updated : 3 Jan 2023, 12:18 PM

চট্টগ্রামের পিবিআই কর্মকর্তা নাঈমা সুলতানার করা মামলায়ও জামিন পেলেন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের বাবা মো. আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া ও ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবু।

মঙ্গলবার চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক জহিরুল কবীর তা মঞ্জুর করেন; এ মামলায় উচ্চ আদালতের জামিনে ছিলেন তারা; মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা নতুন জামিনের আবেদন করেন।

তাদের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাবুল আক্তারের বাবা ও ভাই এই মামলায় ‍উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। আজ নির্ধারিত দিনে তারা আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন করেন।”

স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলার আসামি বাবুল আক্তার, তার বাবা ও ভাইসহ চারজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা।

গত বছরের ১৮ অক্টোবর নগরীর খুলশী থানায় করা এই মামলার তদন্ত করছে পুলিশ; ২৪ নভেম্বর এই মামলায় বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দিয়েছিল চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আবদুল হালিম।

একই অভিযোগে ঢাকায় করা পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের আরেক মামলায় বাবুলের বাবা ও ভাই জামিনে রয়েছেন। এই মামলা দুটির আরেক আসামি প্রবাসী ইউটিউবার ইলিয়াস হোসাইন।

চট্টগ্রামের মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজোশে বাংলাদেশ পুলিশকে ভারতীয় বাহিনী বলে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদ্রোহসহ বন্ধু প্রতীম ভারতকে জড়িয়ে ষড়যন্ত্র করে ও জনসমক্ষে মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্য প্রচার করে মানহানি করে।

Also Read: মিতু হত্যা: বাদী বাবুল আক্তার যেভাবে আসামি

Also Read: মিতু হত্যা: বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ

Also Read: এবার বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে পিবিআই প্রধানের মামলা

Also Read: এবার বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে পিবিআই’র আরেক কর্মকর্তার মামলা

“গত ৩ সেপ্টেম্বর কথিত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন বিদেশে পলাতক থাকা অবস্থায় তার ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে ‘স্ত্রী খুন, স্বামী জেলে: খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব’ শিরোনামে ৪২ মিনিট ২১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। ওই ভিডিওতে বিভিন্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যের মাধ্যমে তদন্তাধীন মিতু হত্যা মামলার তদন্তকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করাসহ তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে প্রচার করা হয়।”

গত ২৭ সেপ্টেম্বর এই চার আসামির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঢাকার ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।

যেখানে অভিযোগ রয়েছে, কারাগারে আটক থাকা সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা মিতু হত্যা মামলার তদন্ত ‘ভিন্নখাতে প্রবাহিত করাসহ’ বাংলাদেশ পুলিশ ও পিবিআইয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত আসামিদের নিয়ে ‘অপরাধমূলক বিভিন্ন অপকৌশল এবং ষড়যন্ত্রের’ আশ্রয় গ্রহণ করছেন।

স্ত্রী মিতু হত্যা মামলায় ‘স্বীকারোক্তি আদায়ে’ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার এসপি নাজমুল হাসান, চট্টগ্রাম নগরের এসপি নাঈমা সুলতানা, তৎকালীন পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা, সাবেক পরিদর্শক এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম ও পরিদর্শক কাজী এনায়েত কবিরকে বিবাদী করে মামলার আবেদন করেছিলেন বাবুল আক্তার।

সেই আবেদন আদালতে খারিজ হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই বাবুলসহ তার বাবা-ভাই ও ইলিয়াসের বিরুদ্ধে ঢাকায় ও চট্টগ্রামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দুটি হয়।

ছয় বছর আগে মিতু হত্যার ঘটনায় তার স্বামী বাবুল আক্তার যে মামলা করেছিলেন, সেই মামলায় তার বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দিয়েছে পিবিআই। ২০২১ সালের মে মাসে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পিবিআই। শুনানি শেষে গত ১০ অক্টোবর তা গ্রহণ করেছে আদালত।