নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, “পরিকল্পিত চট্টগ্রাম গড়ার লক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত জলাবদ্ধতা নিরসনসহ সকল প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।
Published : 07 Aug 2023, 07:12 PM
জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান প্রকল্প সিডিএ ও সিসিসির সমন্বয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে নগর আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতা এই আহ্বান জানান।
বন্দর নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্পসহ দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এই সংস্থার চেয়ারম্যান পদে আছেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এম জহিরুল আলম দোভাষ ডলফিন।
অন্যদিকে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন বাড়ইপাড়া খাল খননের কাজ করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি)। সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে আছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
দীর্ঘদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দুই ধারার একটির নেতৃত্বে ছিলেন প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। আরেকটির নেতৃত্বে আছেন আরেক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ ও সিটি মেয়র রেজাউল নগরী আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
সোমবার নগর আওয়ামী লীগের শফিকুল ইসলাম ফারুক স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
এতে বলা হয়, “পরিকল্পিত চট্টগ্রাম গড়ার লক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত জলাবদ্ধতা নিরসনসহ সকল প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।
“প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম নগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের উন্নয়নে যে মেগা প্রকল্পগুলো গ্রহণ করেছেন তা বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এর অধীনে যে প্রকল্পগুলো চলমান তা যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়িত হয়।”
দুই সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়ে এতে বলা হয়, “এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ একে অপরের প্রতি দোষারোপ না করে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে সম্পন্ন করে, যাতে এর সুফল যাতে জনগণ অতি সহসা পায়। এর ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি সুরক্ষিত হবে।”
গত ৪ দিনের প্রবল বর্ষণের ফলে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা ও নাগরিক দুর্ভোগের জন্য বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশও করেন মাহতাব ও নাছির।
বিবৃতিতে তারা অতি বর্ষণজনিত কারণে যেসব এলাকার মানুষ ও তাদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের পাশে দাঁড়াতে ও সার্বিক সহযোগিতা দিতে চট্টগ্রাম মহানগর, থানা এবং ওয়ার্ড ও ইউনিট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশনা দেন।
এদিকে জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএর বড় দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলমান থাকায় সিসিসি বলছে, জলাবদ্ধতা নিরসনে তাদের কোনো ভূমিকা নেই। সিটি মেয়র রেজাউল ইতিমধ্যে সমন্বয়হীনভাবে কাজ চালিয়ে নেয়ার অভিযোগ তুলেছেন সিডিএর বিরুদ্ধে।
আর সিডিএ বলছে, তারা ঠিকমত কাজ করলেও সিটি করপোরেশন নিয়মিত খাল-নালা পরিষ্কার না করায় জলাবদ্ধতা বেশি হচ্ছে।
বন্দর নগরীতে জলাবদ্ধতার সমস্যা দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে। সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, এম মনজুর আলম এবং আ জ ম নাছির উদ্দীনের মেয়াদে এই সমস্যার সমাধানে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও তা সফল হয়নি।
সবশেষ ২০১৭ সালে জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫৬১৬ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পটির অনুমোদন পায় সিডিএ। ২০১৮ সালে তারা প্রকল্পের কাজ শুরু করে। ২০২৩ সালের জুনে সেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও এখনো কাজ বাকি ২৫ শতাংশের মত।
অন্যদিকে সিডিএর মেগা প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন খালের মুখে পাঁচটি স্লুইস গেট চালু হলেও অন্য আরেকটি প্রকল্পের আওতায় ১২টি স্লুইস গেট চালু হয়নি। আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের অন্য আরেক প্রকল্পের অধীনে ২৩টি স্লুইট গেটের একটিও চালু করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন:
বৃষ্টির দাপটে চবিতে ৩ দিনের ছুটি
বৃষ্টি-জলাবদ্ধতা: চট্টগ্রাম নগরীর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মঙ্গলবার বন্ধ
বৃষ্টিতে ডুবেছে রাস্তা, পড়ে গিয়ে প্রাণ গেল কলেজছাত্রীর