রোহিঙ্গা তরুণীকে জাতীয়তা ও জন্মসনদ দেওয়া এবং পাসপোর্ট আবেদন প্রত্যয়নের অভিযোগে চট্টগ্রামের সাবেক এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
Published : 14 Jun 2021, 06:51 PM
সোমবার দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন এই মামলা করেন।
মামলার অঅসামিরা হলেন- ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইমমাইল ওরফে ইসমাইল বালি, একই ওয়ার্ডের জন্মনিবন্ধন সহকারী সুবর্ণা দত্ত, রোহিঙ্গা তরুণী অহিদা, পাসপোর্ট দালাল সিরাজুল ইসলাম এবং অহিদার কথিত বাবা-মা মোহাম্মদ ইসমাইল ও মেহেরজান।
বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ইসমাইল বালি পাথরঘাটা ওয়ার্ডের টানা দুইবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর ছিলেন।
সর্বশেষ গত ২৭ জানুয়ারির চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে কেন্দ্রে প্রবেশ করে ইভিএম মেশিন ভাংচুরের অভিযোগে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন ইসমাইল বালি।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর উপ-পরিচালক লুৎফর কবির চন্দন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, অহিদা নামের এক তরুণী ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন।
“অহিদা তার পাসপোর্ট আবেদনে বাবার নাম মো. ইসমাইল ও মার নাম মেহেরজান উল্লেখ করে জরুরি প্রয়োজনে দালাল সিরাজুল ইসলামের নম্বর উল্লেখ করেন। পাসপোর্ট কার্যালয়ে অহিদার কাছ থেকে নেওয়া আঙ্গুলের ছাপ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের ডেটাবেইজের সাথে মিলে গেলে কর্মকর্তারা অহিদা ও সিরাজুলকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন এবং পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা করেন।”
লুৎফর কবির চন্দন জানান, অহিদার পাসপোর্ট আবেদন ফরমে তার ছবি সত্যায়ন ও প্রত্যয়ন করেছিলেন সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল বালি।
তিনি বলেন, “পাসপোর্ট আবেদনকারী রোহিঙ্গা তরুণী পাথরঘাটা ওয়ার্ড থেকে জন্মনিবন্ধনও সংগ্রহ করেছেন, পাশাপাশি একই ওয়ার্ডে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভক্তির জন্যও আবেদন করেছিলেন।”
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, অহিদা পাসপোর্ট আবেদনে মো. ইসমাইল নামে ও মেহেরজান নামের যাদেরকে বাবা-মা হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন তারা তার প্রকৃত বাবা-মা নন। তারাও রোহিঙ্গা এবং বর্তমানে সৌদি প্রবাসী।
ইসমাইল এবং মেহেরজানও ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ড থেকে জাতীয়তা সনদ, জন্মসনদ নিয়ে ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছেন।
৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইসমাইল বালি, জন্ম নিবন্ধন সহকারী সুবর্ণা দত্ত পরস্পর যোগসাজসে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রোহিঙ্গা নাগরিককে বাংলাদেশি নাগরিক করার জন্য জাতীয়তা সনদ, জন্মসনদ দিয়ে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি ও পাসপোর্ট আবেদন প্রত্যয়ন ও সত্যায়ন করে অপরাধ করেছেন। আর সিরাজুল ইসলাম দালাল হিসেবে কাজ করেছেন।
দুদক উপ-পরিচালক চন্দন জানান, সোমবার দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ কার্যালয়ে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৫৬৮/৪৭১/১০৯ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলাটি করা হয়।
আরও পড়ুন: