নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বিদেশে থেকে আসা সবার ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হলেও এ নির্দেশ উপেক্ষা করে চট্টগ্রামে চারটি উপজেলার ছয় বিদেশ ফেরতের বাজারে, বেড়াতে ও চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রমাণ পেয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
Published : 18 Mar 2020, 08:48 PM
হোম কোয়ারেন্টিনে না থাকায় বুধবার দুপুরে পাঁচলাইশ, আনোয়ারা, রাউজান, হাটহাজারী, লোহাগাড়া ও পটিয়া উপজেলায় এই আটজনকে মোট ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আনোয়ারা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আনোয়ারা উপজেলার বরুমছড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে দুবাই ফেরৎ এক ব্যক্তিকে জরিমানা করা হয়েছে।”
গত ৮ মার্চ ওই ব্যক্তি দুবাই থেকে দেশে ফেরেন। তাকে একাধিক বার হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হলেও তিনি তা অমান্য করে বাড়ির বাইরে ঘোরাফেরা করেন।
“আজকে উনি বাজার গিয়েছিলেন। বিষয়টি শুনে আমি তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। তখনও তাকে আমরা বাড়িতে পাইনি,” বলেন শেখ জোবায়ের ।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান এই ইউএনও।
হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছিল আরেক ব্যক্তিকে, যিনি রাউজান পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড থাকেন।
ওই ব্যক্তি ওমান থেকে গত ১৫ মার্চ দেশে আসেন বলে জানান রাউজান উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ।
তিনি বলেন, “তাকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা বলা হলেও সে সকালে বাড়ি থেকে বের হয়। খবর পেয়ে আমরা তার বাড়িতে যাই। সে জানিয়েছে, তার হাত ভাঙ্গা থাকায় চিকিৎসা নিতে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন।”
বাড়ি থেকে বের হওয়ায় তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
গত ১১ মার্চ মীর্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া গ্রামের এক ব্যক্তি শারজাহ থেকে দেশে ফেরেন।
হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা বলা হলেও তিনি ফটিকছড়ি উপজেলায় তার স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে এবং বাজার করতে বের হয়েছিলেন, বলেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন।
তিনি বলেন, এ অভিযোগে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও এলাকায় আবুধাবি থেকে ফিরেছেন একই পরিবারের তিনজন। তাদের মধ্যে একজন ১৩ মার্চ এবং অন্য দুজন ১৬ মার্চ বাড়িতে আসেন।
পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা জাহান উপমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গ্রাম পুলিশের সদস্যরা গিয়ে আগেই তাদের বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়ে সর্তক করে এসেছিল।
“সেটা উপেক্ষা করে তারা বাড়ি থেকে বাইরে যায়। তাদের আবার সতর্ক করা হয়েছে। ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে কোনো অসুস্থতা বা রোগের লক্ষণ দেখা যায়নি।”
উপজেলায় অন্য যারা বিদেশ থেকে ফিরেছেন তাদের বিষয়েও নিয়মিত খোঁজ রাখা হচ্ছে বলেও জানান ইউএনও ফারহানা।
দেশের অন্যতম প্রবাসী অধ্যুষিত জেলা চট্টগ্রাম। এই জেলার প্রবাসীদের মধ্যে অধিকাংশই মধ্যপ্রাচ্য নিবাসী।
বিদেশ ফেরত সবেইকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
আইইডিসিআর বলছে, হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে না পারলে এ রোগের বিস্তার ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়বে।