রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য পরিকল্পিত আবাস নোয়াখালীর ঠেঙ্গার চরকে নিজেদের এলাকার অন্তর্ভুক্তির দাবি উঠেছে চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে।
Published : 12 Oct 2017, 09:01 PM
ঠেঙ্গারচরে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন ঝুঁকিপূর্ণ: রয়টার্স
ঠেঙ্গারচরকে ‘বসবাসযোগ্য’ বলে নতুন প্রতিবেদন
ঠেঙ্গারচর ‘উপযুক্ত’ করে পাঠানো হোক রোহিঙ্গাদের: সংসদীয় কমিটি
বৃহস্পতিবার সন্দ্বীপের সারিকাইত ইউনিয়নের উপকূলীয় বেঁড়িবাঁধ এলাকায় সমাবেশের পর সংবাদ সম্মেলনে এ দাবিতে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেয় সেখানে নতুন করে গঠিত ‘ভূমি রক্ষা পরিষদ’।
সংবাদ সম্মেলনে ভূমি রক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক ও মাইটভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, “ঠেঙ্গার চর সন্দ্বীপের পাশ্ববর্তী একটি জেগে ওঠা চর হলেও এটি নোয়াখালীর বলে দাবি করা হচ্ছে। সন্দ্বীপবাসী অন্যায় এই দাবি মেনে নেবে না।”
রোহিঙ্গা সঙ্কটের কারণে সম্প্রতি আলোচনায় উঠে আসে নোয়াখালীর হাতিয়া ও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মাঝামাঝিতে গড়ে ওঠা ঠেঙ্গার চর, যা ভাষাণ চর নামেও পরিচিত।
প্রায় ৫ হাজার একর আয়তনের দ্বীপ ঠেঙ্গার চরকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল এলাকা ঘোষণা করা হয় ২০১৩ সালে। হাতিয়া থেকে এ দ্বীপের দূরত্ব আনুমানিক ১৮ থেকে ২০ কিলোমিটার।
কক্সবাজারে থাকা কয়েক লাখ শরণার্থীকে এই দ্বীপটিতে নিয়ে আসার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বিরান দ্বীপটিকে বাসযোগ্য করতে কাজও শুরু করেছে নৌবাহিনী।
এর মধ্যেই দ্বীপটির মালিকানার দাবি তুলল সন্দ্বীপবাসী। তাদের কর্মসূচিতে সন্দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর বলেন, “বনবিভাগসহ সরকারি একাধিক সংস্থার জরিপে সন্দ্বীপের মাত্র কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে জেগে ওঠা চরটি সন্দ্বীপের আদি ইউনিয়ন ন্যায়ামস্তীর অংশ। কিন্তু নানান কারণে সন্দ্বীপবাসীর দাবি না মেনে নোয়াখালী জেলার আওতাভুক্ত করা হয়েছে এটাকে।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এককালে সন্দ্বীপের মোট মৌজা ছিল ৬০টি। কিন্তু মেঘনার ভাঙনে এখন ৩৮টি টিকে আছে। সন্দ্বীপের ১৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ন্যায়ামস্তি, ইজ্জতপুর, কাটগড়, বাটাজোড়াসহ ৪টি ইউনিয়ন সম্পূর্ণ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
সন্দ্বীপের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন মৌজা ন্যায়ামস্তি ১৯৫৩ সাল থেকে ভাঙনের শিকার হতে হতে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে সম্পূর্ণরূপে বিলীন হয়ে যায় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
মিজানুর বলেন, ২০১৪ সালের ৬ জুন ন্যায়ামস্তি সন্দ্বীপ মৌজায় জেগে ওঠা চর ভূমির সাত হাজার একর জমি বনায়নের জন্য উপকূলীয় বন বিভাগের পক্ষে ৪ ও ৬ ধারার গেজেট প্রকাশ করা হয়।
ওই গেজেট প্রকাশের তিন মাসের মধ্যে ওই জমির সীমানা বা স্বত্ব ঘোষণার বিষয়ে কোনো পক্ষ হতে দাবি না উঠলেও পরে তা নোয়াখালী জেলায় দিয়ে দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সারিকাইত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম, মগধরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম আনোয়ার, আজিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আবুল হোসেন প্রমুখ।