আ জ ম নাছির বলেন, “ভোটার উপস্থিতি যদি কম হয় তাহলে সেটার সমালোচনা হবে। বিরোধীরা বলবে ভোটে মানুষের আস্থা নেই।”
Published : 08 Jul 2023, 03:22 PM
পরবর্তী নির্বাচনের কয়েক মাস আগে বিএনপিসহ অধিকাংশ দলের বর্জনের মধ্যে চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ নিশ্চিত করতে চাইছে আওয়ামী লীগ।
ক্ষমতাসীন দলটির নেতারা মনে করেন, ভোটে তাদের জয় নিয়ে কোনো সংশয় নেই। তবে ভোটার উপস্থিতি কম হলে সমালোচনা হবে।
শনিবার নগরীর ওয়াসার মোড় এলাকায় প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চুর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধনে এসে এই বার্তা দিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন ও নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
মোশাররফ বলেন, “আমাদের দলের অনেক নেতাকর্মী সমর্থক। কিন্তু উপ নির্বাচনে দেখা যায়, ভোটের টার্নআউট কম। এটা সাংগঠনিক দুর্বলতা নয়, অবহেলা।
“সবাইকে নিয়ে ভোট কেন্দ্রে যেতে হবে। ভোট না দিলে মনে হবে যেন অনীহা। নগর আওয়ামী লীগের যে সাংগঠনিক শক্তি তা কার্যকর করলে অনেক ভোটার ভোটকেন্দ্রে যাবে।”
মাস দেড়েক আগে চট্টগ্রাম-৮ আসনে উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল জয় পেলেও কেবল ১৪ শতাংশ ভোট পড়ার পর বিএনপির পক্ষ থেকে আসে কটাক্ষকর মন্তব্য। এরপর পাঁচটি সিটি করপোরেশনে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ার পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিএনপি না এলেও দেশবাসী ভোট দিতে আগ্রহী, তার প্রমাণিত হয়েছে।
আফছারুল আমীনের মৃত্যুতে শূন্য চট্টগ্রাম-১০ আসনটিতে ভোট গ্রহণ হবে ৩০ জুলাই। সেখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে সাবেক যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিন বাচ্চুকে।
৪ লাখ ৮৮ হাজার ৬৩৮ ভোটারের এই আসনের ১৫৬টি কেন্দ্রের ১ হাজার ২৫১টি ভোট কক্ষ করা হয়েছে। ভোট নেওয়া হবে ইভিএমে।
মোশাররফ বলেন, “মীরসরাইয়ে দুটি পৌরসভায় ইভিএমে ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছিল। সবাই যদি মনে করি, সে (দলীয় প্রার্থী) তো হয়ে যাবে। তাহলে হবে না। ভোট আপনার অধিকার। সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। শুধু কেন্দ্রে জটলা পাকালে হবে না। ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আনতে হবে।
“আমাদের নগর কমিটি মাহতাব উদ্দিন ও আ জ ম নাছিরের নেতৃত্বে অনেক শক্তিশালী৷ যদি ৪০ শতাংশ ভোট কাস্ট করতে পারেন, সেটা অনেক ইতিবাচক হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চান, ভোট অংশগ্রহণ মূলক হবে। আশাকরি সবাই একজোট হয়ে নৌকায় ভোট দেয়ার জন্য কাজ করবে।”
এর আগের কয়েকটি নির্বাচনের উদাহরণও টানেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, “মেয়র রেজাউল করিমের ভোট, নোমান আল মাহমুদের ভোট দেখেছি। মেয়রের ভোটের দিন ৫০টি কেন্দ্রে গেছি৷ হাজার হাজার ছেলে প্রতি কেন্দ্রে, কিন্তু ভোটারদের আনতেছে না। তারা উৎসব করছে ভোট শেষের আগেই।”
আ জ ম নাছির বলেন, “এই উপনির্বাচনে আমাদের প্রার্থী বিজয়ী হবে, এটা বাস্তবতা। কিন্তু ভোটার উপস্থিতি যদি কম হয় তাহলে সেটার সমালোচনা হবে। বিরোধীরা বলবে ভোটে মানুষের আস্থা নেই। দেশে ৩০০ আসনে দলের সবচেয়ে খারাপ সেখানেও ৩০-৩৫% ভোটার আছে। তাহলে ভোটাররা কেন্দ্রে যাবে না কেন।”
তিনি জানান, তাদের লক্ষ্য ৫০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি। তবে ৪০ শতাংশ হলেও তাকে সন্তোষজনক বলবেন। তিনি বলেন, “এ নির্বাচনে ভাবমূর্তি, অস্তিত্ব নির্ভর করে। সেভাবে সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।”
চট্টগ্রামে গত তিনটি নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম থাকাকে নিজেদের ব্যর্থতা হিসেবেও তুলে ধরেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির।
তিনি বলেন, “কেন্দ্র কমিটি করা হয়েছিল নোমান আল মাহমুদের ভোটে (চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে)। যত জন কমিটিতে ছিল ততজন কেন্দ্রে ছিল না। দায়িত্ব নিয়ে এটা প্রতারণার সামিল।”
সভাপতির বক্তব্যে নগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “এটা দলের জন্য চ্যালেঞ্জ। দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। আমি ও নাছির এ ভোটকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলাম। মহিউদ্দিন বাচ্চু কে সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রার্থী, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী।”
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, নগর কমিটির সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল ও নঈম উদ্দিন আহমদ, যুগ্ম সম্পাদক বদিউল আলম, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, আহমুদুর রহমান সিদ্দিকী, মোহাম্মদ হোসেন, শফিক আদনান, ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম ফারুকও এ সময় বক্তব্য রাখেন।