মেয়র বলেন, “যতই বেশি দামে কিনুক না কেন, যে রেট ধার্য করে দিয়েছি সে রেটে বিক্রি করতে হবে। অন্যথায় আইন নিজস্ব গতিতে চলবে।”
Published : 05 Mar 2025, 05:35 PM
প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযানের হুশিয়ারি দেওয়ার পর চট্টগ্রাম নগরীর দুই-একটি বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দেখা মিলেছে।
তবে এখনো খোলা সয়াবিন তেল নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না পাইকারি বাজারে। তাই খুচরাতেও কমেনি দাম।
বাজার মনিটরিং অব্যাহত রাখার কথা জানিয়ে নির্ধারিত দাম মানা না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি আবারও দিয়েছেন সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন। পাশপাশি জনগণকেও প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার দুপুরে নগরীর কাজীর দেউড়ি বাজার তদারকিতে যান মেয়র। অভিজাত হিসেবে পরিচিত এই বাজারের দোকানগুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দেখা মিললেও ছিল না খোলা সয়াবিন তেল।
পরিদর্শন শেষে মেয়র শাহাদাত বলেন, “গতকাল আমরা জেলা প্রশাসনসহ মিটিং করেছি। সেখানে দাম নির্ধারণ করেছি আমদানিকারক ১৫৩ টাকা, ডিলার পর্যায়ে ১৫৫ টাকা এবং খুচরায় সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা প্রতি লিটার বিক্রি করবে।
“আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি, আগে বোতলগুলো উধাও হয়ে গিয়েছিল এবং ১৯৫ টাকা দরে লিটার বিক্রি করছিল। আজকে দেখছি এমআরপিতে যে রেট আছে সেই রেটে তারা বিক্রি করছে। কাজীর দেউড়ি বাজারে খোলা তেল নেই। তাই দোকানিদের বলেছি, খোলা তেল আনতে।”
এই বাজারে মূল্য তালিকা যেসব দোকানে নেই তাদের তা রাখতে বলেছেন জানিয়ে মেয়র বলেন, “খোলা তেল আ ১৬০ টাকায় বিক্রি করতে পারবে। এর ব্যত্যয় হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্য বাজারে আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা আছে তারা মনিটর করছেন। সংযমের মাস জনগণের জন্য যেটা যেটা দরকার তা আমি করব।
নগরীর বহদ্দারহাট, চকবাজার, বন্দর, পতেঙ্গাসহ বিভিন্ন স্থানে সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেটরা যাচ্ছেন জানিয়ে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, “এমনকি এখন খাতুনগঞ্জে আরেকটা টিম আছে। সেখানে ১৫৫ টাকায় (পাইকারিতে) বিক্রি করছে কি না সেটা মনিটর করছে। ১৫৫ টাকার বেশি কেউ বিক্রি করতে পারবে না। আমরা শুনেছি কিছু অসঙ্গতির কথা।
“তারা বলেছে, আগে বেশি দামে কিনে রেখেছে তাই বেশি দামে বিক্রি করছে। তাদেরকেও বলতে চাই, আমরা যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছি সেটাই বলবৎ থাকবে। যতই বেশি দামে কিনুক না কেন, যে রেট ধার্য করে দিয়েছি সে রেটে বিক্রি করতে হবে। অন্যথায় আইন নিজস্ব গতিতে চলবে। তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।”
গত প্রায় এক মাস ধরে চট্টগ্রামের বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট আছে। রোজা শুরুর কয়েকদিন আগে থেকে সয়াবিন তেলের সংকট চরম আকার ধারণ করে।
গত সপ্তাহে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার সর্বনিম্ন ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল। আর বোতলজাত সয়াবিন তেল নির্ধারিত ১৭৫ টাকা লিটার দরের পরিবর্তে বিক্রি হচ্ছিল ১৯০ টাকা লিটার দরে।
এমন পরিস্থিতিতে সোমবার চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে গিয়ে মেয়র ও জেলা প্রশাসক বোতলজাত সয়াবিন তেলের দেখা পাননি। আর খোলা সয়াবিন নামে যা বিক্রি হচ্ছিল, তাতে কি কি উপাদান আছে তা জানতে নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন তদারকিতে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।
নগরীর খাতুনগঞ্জ এবং অন্যান্য খুচরা বাজারের বিক্রেতারা বলেছেন, খোলা সয়াবিনের নামে যা বিক্রি হচ্ছে তাতে সুপার অয়েল ও পাম অয়েল মেশানো থাকে।
এরপর মঙ্গলবার সার্কিট হাউজে নিত্যপণ্যের বিশেষ টাস্কফোর্সের সভা থেকে খোলা সয়াবিন তেলের মিল গেটে, পাইকারিতে ও খুচরায় দাম বেঁধে দেওয়া হয়।
পাশাপাশি দু'দিনের মধ্যে বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ ও দাম ঠিক না হলে গুদামে ও বাজারে সাঁড়াশি অভিযানের হুশিয়ারি দেন জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।