শত বর্ষের বেশি পুরনো চট্টগ্রাম বন্দরে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভেড়ানো শুরু হয়।
Published : 22 Aug 2023, 08:33 PM
আগামী বছরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ১১ থেকে সাড়ে ১১ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানোর ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছেন নতুন চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘পরিচিতি সভা’য় এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। দেশের প্রধান এ সমুদ্রবন্দরে দায়িত্ব গ্রহণের চার মাসের মাথায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সভা করলেন নতুন চেয়ারম্যান।
রিয়ার অ্যাডমিরাল সোহায়েল বলেন, বন্দর চ্যানেলে নাব্য অনেক বেড়েছে। বর্তমানে ১০ মিটার ড্রাফটের (পানির নিচের অংশের গভীরতা) জাহাজ আসছে। চ্যানেল নিয়ে আমাদের আরও স্টাডি চলছে। আগামী বছরের মধ্যে ১১ থেকে সাড়ে ১১ মিটার ড্রাফটের জাহাজ আনতে পারব।
শত বর্ষের বেশি পুরনো চট্টগ্রাম বন্দরে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভেড়ানো শুরু হয়। এর আগে সাড়ে নয় মিটার ড্রাফট ও ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়তে পারত। নাব্য বাড়া এবং বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে জরিপের পর বেশি গভীরতার জাহাজ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে বন্দরের জেটিতে আসতে পারছে।
চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়ল ১০ মিটার ড্রাফটের প্রথম জাহাজ
বন্দর চ্যানেলকে ঠিক রাখতে আগামী ১০ বছরের জন্য হাইড্রোগ্রাফি মাস্টারপ্ল্যান করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি খরস্রোতা কর্ণফুলী নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে নগরবাসীর সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। খালে-বিলে নদীতে বর্জ্য না ফেলার আহ্বান জানান।
সভায় বন্দর চেয়ারম্যান নবনির্মিত পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল, বে টার্মিনাল, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর এবং বন্দরের সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাণিজ্যিক মন্দা থাকলেও বন্দরের কন্টেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে তেমন প্রভাব পড়েনি। রাজস্ব আগের চেয়ে ৪ শতাংশ বেড়েছে। বিশ্বের একশ বন্দরের মধ্যে এ বন্দরের অবস্থান ৬৪তম।
বন্দরের সক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল তৈরি হয়েছে, সেখানে তিনটি জেটি রয়েছে। টার্মিনালটি বর্তমানে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। আমরা যখন প্রয়োজন পড়ছে তখন ব্যবহার করছি। এ টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি অপারেটর নিয়োগের কাজ চলছে।
তিনি জানান, নতুন ১০৪টি যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। বে টার্মিনাল ও মাতারবাড়ী গভীরসমুদ্র বন্দরের কাজ চলছে। সবমিলিয়ে ১০ বছর আগে যে অবস্থান ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে।
স্মার্ট বন্দর চালুর ক্ষেত্রেও অগ্রগতি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বন্দরের বহুল প্রতীক্ষিত বে টার্মিনালের মাস্টারপ্ল্যান হচ্ছে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি এটি শেষ হলে অক্টোবর নাগাদ এর গ্রাউন্ড ব্রেকিংয়ের কাজ শুরু করা যাবে। এছাড়া মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের জন্য দরপত্র হয়ে গেছে।’’
আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করেন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহায়েল।
মত বিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য হাবীবুর রহমান, পরিচালক (প্রশাসন) মমিনুর রশিদ, সচিব ওমর ফারুকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।