দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরির উদযাপনে কারও প্রতি জবাব দেওয়ার ব্যাপার ছিল না, বললেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।
Published : 25 Oct 2023, 12:34 AM
উদযাপন নিয়ে প্রশ্ন হলো একদম শুরুতেই। মাহমুদউল্লাহ বেশি কিছু বলতে চাইলেন না। শুধু বললেন, “সেলিব্রেশন… সেলিব্রেশন… আলহামদুলিল্লাহ…।” আবার শেষ দিকে একই প্রশ্ন উঠল আরেকটু বিশদ করে। এবার মাহমুদউল্লাহও একটু গভীরে গেলেন। উদযাপনের রহস্যটা যদিও খোলাসা করলেন না। তবে এটুকু বললেন, দল জিতলে আরও খ্যাপাটে হতো তার উদযাপন।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মুম্বাইয়ে বাংলাদেশের বড় পরাজয়ের ম্যাচে একমাত্র প্রাপ্তি বলা যায় মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি। সেই ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ম্যাচ জেতানো দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পর এই সংস্করণে আবার তিন অঙ্কের স্বাদ পেলেন তিনি।
সতীর্থদের ব্যর্থতায় দিনে তার সেঞ্চুরিতেও অবশ্য জয়ের সম্ভাবনা জাগেনি। সবচেয়ে বড় হারের চোখরাঙানি থেকে দলকে উদ্ধার করেছে তার ইনিংসটি। তার নাম উঠে গেছে রেকর্ড বইয়েও। ২০১৫ বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরির সঙ্গে যোগ হলো এই বিশ্বকাপের সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে তিনটি সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান তিনি। একাধিক আসরে সেঞ্চুরি করা একমাত্র ক্রিকেটারও।
ওয়ানডেতে তার চারটি সেঞ্চুরিই আইসিসি আসরে।
সেঞ্চুরি ছোঁয়া রানটি পূর্ণ করেই লাফ দিয়ে মুষ্টিবদ্ধ হাত বাতাসে ছোঁড়েন মাহমুদউল্লাহ। এরপর আঙুল দিয়ে কিছু লেখার মতো ভঙ্গি করে আকাশের দিকেও ইশারা করেন। মনে হচ্ছিল, যেন বোঝাতে চাচ্ছিলেন যে সবকিছু লেখা হয়েছে ওপরেই!
তার উদযাপনের পেছনের কারণ নিয়ে কৌতূহলও জাগে স্বাভাবিকভাবেই। তার বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কম হয়নি। গত মার্চে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে তাকে ‘বিশ্রাম’ দেওয়া হয়েছিল। এরপর তার বিশ্রাম পর্ব চলতেই থাকে। বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপের স্কোয়াডেও তাকে রাখা হয়নি। এসব নিয়ে দেশের ক্রিকেটে আলোচনা চলতে থাকে তুমুল।
অবশেষে বিশ্বকাপের ঠিক আগে নিউ জিল্যান্ড সিরিজের দলে তাকে রাখা হয়। পরে সুযোগ পেয়ে যান বিশ্বকাপ দলেও। সেটা নিয়েও আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ছিল।
সব মিলিয়ে তার উদযাপনের সঙ্গে আগের ঘটনাপ্রবাহের যোগসূত্র খোঁজাও হচ্ছিল। তার দিকে তাই প্রশ্ন ছুটে গেল, ‘ওই উদযাপন কি প্রতিবাদের ভাষা ছিল?’ মাহমুদউল্লাহ তা এড়িয়ে গেলেন সহাস্যে।
“নাহ, কোনোরকম প্রতিবাদ… প্রতিবাদ ছিল না। শুধু… আলহামদুলিল্লাহ, একশ হয়েছে, তবে এটা স্রেফ একটা উদযাপনই ছিল, নাথিং স্পেশাল। যেটা আগে বললাম যে, যদি জিততে পারতাম, তাহলে আরও ‘বুনো’ উদযাপন করতাম সম্ভবত। চেষ্টা করব পরের ম্যাচে যেন আরও অবদান রাখতে পারি দলের জন্য।”
অনেক অপেক্ষার পর প্রতিকূল স্রোতে সাঁতরে এই সেঞ্চুরিটি তিনি উৎসর্গ করেছেন তার পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের।
“উৎসর্গ করার আসলে…অবশ্যই আমার পরিবার। বিশেষ করে শেষ তিন মাসে যারা আমাকে সাপোর্ট করেছেন। যারা আমার জন্য দোয়া করেছেন, তাদের জন্য।”