কেমন হবে ফাইনালের উইকেট, কতটা গুরুত্বপূর্ণ হবে টস

আহমেদাবাদে এই বিশ্বকাপের আগের চার ম্যাচের তিনটিই জিতেছে পরে ব্যাট করা দল।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিআহমেদাবাদ থেকে থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Nov 2023, 03:08 PM
Updated : 18 Nov 2023, 03:08 PM

প্যাট কামিন্সের একটি ছবি বেশ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে। অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক উইকেটের ছবি তুলে রাখছেন ফোনে। কামিন্সের ছবি তোলার সেই ছবি নিয়ে বেশ হাস্যরস হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। অনেকেই বলছেন, উইকেট যদি পরে বদলে ফেলা হয়, এজন্য ছবি তুলে রাখছেন তিনি।

মজা হিসেবে এসব চলে বটে। তবে সত্যিকারের ঘটনা ভিন্ন। অস্ট্রেলিয়ার অনুশীলন ছিল শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা থেকে। তবে অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যমের সুবিধার্থে ফাইনালের আগের দিন অধিনায়কের সংবাদ সম্মেলন রাখা হয় সকাল ১০টায়। তিনি মাঠে এসেছিলেন শুধু মিডিয়া ম্যানেজারকে সঙ্গে নিয়ে। কামিন্স ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন মূলত দলের অন্যদেরকে উইকেট দেখানোর জন্য।

উইকেট দেখে নিজের ধারণাও সংবাদ সম্মেলনে বলে গেছেন কামিন্স। পরে বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে উইকেট নিয়ে নিজের ভাবনা জানিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শার্মাও। উইকেটের সম্ভাব্য আচরণ নিয়ে দুজনের ভাবনায় পার্থক্য আছে কিছু।

এই মাঠে আগের ম্যাচগুলিতে উইকেট বেশ ব্যাটিং সহায়ক ছিল। কামিন্সের ধারণা, ফাইনালেও উইকেট সেরকমই হবে।

“আমি উইকেট খুব ভালো পড়তে পারি না। তবে দেখে বেশ জমাট মনে হলো। তারা (মাঠকর্মীরা) মাত্রই উইকেটে পানি দিয়েছে। কাজেই আরও ২৪ ঘণ্টা পর যখন ফিরব আমরা (ফাইনালের দিন) তখন আরও ভালোভাবে বোঝা যাবে। তবে উইকেট দেখে বেশ ভালো (ব্যাটিংয়ের জন্য) মনে হচ্ছে।”

যে উইকেটে খেলা হবে, সেখানেই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটি হয়েছিল এই বিশ্বকাপে। পাকিস্তান মাত্র ১৯১ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল সেদিন। তবে উইকেটের ভূমিকা যে তাতে খুব বেশি ছিল না, তা স্পষ্ট হয় ওঠে পরের ভাগেই। রান তাড়ায় ৩০.৩ ওভারেই ভারত জিতে যায় ৭ উইকেটে।

সেদিন ভারতের ৩ পেসার ও ২ স্পিনারের সবাই নিয়েছিলেন দুটি করে উইকেট। কাজেই কোনো একটিকে বেশি সহায়তা করার প্রমাণও নেই।

ভারত-পাকিস্তানের সেই ম্যাচটি হয়েছিল ৩৫ দিন আগে। এই সময়টায় উইকেটের চেহারায় একটু বদল দেখছেন রোহিত। সম্ভাব্য আচরণও ভিন্ন হতে পারে বলে ধারণা তার।

“ওই ম্যাচে উইকেটে ঘাস ছিল না। এটাতে কিছুটা ঘাস আছে। তখন উইকেট বেশ শুষ্ক ছিল। এবার আমার যতটা ধারণা, উইকেট কিছুটা মন্থর হতে পারে। তবে কালকে এসে উইকেট দেখে চূড়ান্ত মূল্যায়ন করা যাবে। ম্যাচের দিন উইকেট দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ধারা আমরা লম্বা সময় ধরেই অনুসরণ করে আসছি এবং করব। এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। আমাদের দলের ক্রিকেটাররাও এটা জানে।”

এবারের এই বিশ্বকাপে এই মাঠে আগের চার ম্যাচের তিনটিতেই জিতেছে পরে ব্যাট করা দল। কাজেই টসও এখানে হয়ে উঠতে পারে গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষ করে, বছরের এই সময়টায় আহমেদাবাদে সন্ধ্যায় শিশির পড়ে বেশ। গত কয়েকদিন এই শহরের তাপমাত্রা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দিনের সঙ্গে রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি। ফাইনালের দিনও যদি এরকম থাকে, তাহলে শিশির পড়তেই পারে প্রচুর।

কামিন্সের ধারণা, শিশির এখানে বড় প্রভাবই রাখবে শেষ পর্যন্ত।

“আমার মনে হয়, এখানে সবচেয়ে বড় পার্থক্য শিশির। আমাদের খেলা অন্যান্য জায়গার চেয়ে এ শহরে ও এই ভেন্যুতে শিশির বেশি পড়ে। এটা আগামীকাল অবশ্যই আমাদের ভাবনায় থাকবে। হতে পারে যে ম্যাচের শেষ ভাগে।”

রোহিতের ভাবনা এখানেও একটু আলাদা। শিশির বা টস নিয়ে বেশি ভাবার অবকাশই দেখেন না ভারতীয় অধিনায়ক।

“তাপমাত্রা এখন কমেছে আগের চেয়ে। তবে আমি নিশ্চিত নই, শিশিরের প্রভাব কতটা থাকবে। কারণ, পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে যখন আমরা এখানে অনুশীলন করেছি, অনেক শিশির ছিল। কিন্তু ম্যাচের দিন কিছুই ছিল না। কয়েক দিন আগে ওয়াংখেড়েও অনুশীলনের সময় অনেক শিশির পড়েছিল, ম্যাচে ততটা দেখা যায়নি।”

“এজন্যই আমি বলেই যাই যে, টস খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নয়। কন্ডিশন, তাপমাত্রা যেটাই হোক, ভালো খেলতে হবে। ভালো ক্রিকেট খেলে চাপটাকে শুষে নিতে হবে। তাহলেই জয় সম্ভব।”