বিশ্বকাপে স্বপ্নময় পথচলায় চতুর্থ জয়ের স্বাদ পেল আফগানরা।
Published : 03 Nov 2023, 07:42 PM
শক্ত অবস্থানে থেকে একের পর এক রান আউটের ধাক্কায় অল্পে গুটিয়ে গেল নেদারল্যান্ডস। রান তাড়ায় আবারও দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে আফগানিস্তানকে পথ দেখালেন রেহমাত শাহ ও হাশমাতউল্লাহ শাহিদি। বিশ্বকাপে টানা তৃতীয় জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসল আফগানরা।
লক্ষ্ণৌতে শুক্রবার নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আফগানিস্তানের জয় ৭ উইকেটে। ১৮০ রানের লক্ষ্য তারা ছুঁয়ে ফেলে ১১১ বল বাকি থাকতেই।
সবশেষ তিন ম্যাচেই আফগানিস্তান জিতল রান তাড়া করে।
বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম দুই আসরে ১৫ ম্যাচে যেখানে আফগানিস্তানের জয় ছিল স্রেফ একটি, সেখানে চলতি আসরে ৭ ম্যাচেই জয় হলো ৪টি! সবগুলিই এলো সবশেষ ৫ ম্যাচের মধ্যে।
অথচ আফগানিস্তানের শুরুটা হয়েছিল প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশ ও ভারতের বিপক্ষে হার দিয়ে। অবিশ্বাস্য ঘুরে দাঁড়ানো বুঝি একেই বলে!
আগের তিনটি জয় ছিল বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, সাবেক দুই চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
বল হাতে এবারের জয়ের নায়ক মোহাম্মদ নাবি। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে স্রেফ ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার।
ব্যাটিংয়ে টানা তৃতীয় ফিফটিতে ৫৪ বলে ৮ চারে ৫২ রান করেন রেহমাত। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮ উইকেটের জয় অপরাজিত ৭৭, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয়ে ৬২ রান করেছিলেন তিনি।
টানা তৃতীয় ম্যাচে দলের জয় নিয়ে ফেরেন শাহিদি। ৬৪ বলে অপরাজিত ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন আফগান অধিনায়ক। আগের দুই ম্যাচে তার রান ছিল অপরাজিত ৫৮ ও অপরাজিত ৪৮।
৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় পাঁচ নম্বরে উঠে গেল আফগানিস্তান। তাদের সমান পয়েন্ট নিয়ে নেট রান রেটে এগিয়ে নিউ জিল্যান্ড চারে, অস্ট্রেলিয়া তিনে আছে।
শেষের মতো আফগানিস্তানের শুরুটাও হয় ভালো। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা নেদারল্যান্ডস ম্যাচের পঞ্চম বলে হারায় ওয়েসলি বারেসিকে। তাকে এলবিডব্লিউ করে দলকে প্রথম সাফল্য এনে দেন অফ স্পিনার মুজিব উর রহমান।
সেই ধাক্কা সামলে ম্যাক্স ও’ডাওড ও কলিন আকারম্যানের জুটিতে এগিয়ে যায় ডাচরা। পাওয়ার প্লেতে আসে ৬৬ রান। একটা পর্যায়ে তাদের রান ছিল ১ উইকেটে ৭৩। কিন্তু ও’ডাউডের (৪০ বলে ৪২) রান আউটে ৬৩ বলে ৬৯ রানের জুটি ভাঙার পরই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে ব্যাটিং।
খানিক বাদে পরপর দুই বলে রান আউটে কাটা পড়েন আকারম্যান ও স্কট এডওয়ার্ডস। টিকতে পারেননি বাস ডে লেডেও। ৯৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি তারা।
দলের স্কোর দেড়শ ছাড়ায় মূলত সাইব্রান্ড এঙ্গেলব্রেশটের ৮৬ বলে ৫৮ রানের সুবাদে। রান আউট হন তিনিও। প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের চার জনই রান আউট, ছেলেদের ওয়ানডে ইতিহাসে এমন ঘটনা এটিই প্রথম।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা তেমন ভালো ছিল না আফগানিস্তানের। ৫৫ রানের মধ্যে তারা হারায় দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানকে।
এরপর তৃতীয় উইকেটে রেহমাতের সঙ্গে ৭৪ রানের জুটিতে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন শাহিদি। রেহমাত এরপর বিদায় নিলেও আজমাতউল্লাহ ওমারজাইয়ের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৫২ রানের জুটিতে কাজ শেষ করেন শাহিদি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নেদারল্যান্ডস: ৪৬.৩ ওভারে ১৭৯ (বারেসি ১, ও’ডাওড ৪২, আকারম্যান ২৯, এঙ্গেলব্রেশট ৫৮, এডওয়ার্ডস ০, ডে লেডে ৩, জুলফিকার ৩, ফন বিক ২, ফন ডার মেরওয়া ১১, আরিয়ান ১০*, মেকেরেন ৪; মুজিব ১০-০-৪০-১, ফারুকি ৫-০-৩৬-০, ওমারজাই ৩-০-১১-০, নাবি ৯.৩-১-২৮-৩, রাশিদ ১০-০-৩১-০, নুর ৯-০-৩১-২)
আফগানিস্তান: ৩১.৩ ওভারে ১৮১/৩ (গুরবাজ ১০, ইব্রাহিম ২০, রেহমাত ৫২, শাহিদি ৫৬*, ওমারজাই ৩১*; আরিয়ান ৮.৩-০-৪৯-০, ফন বিক ৭-০-৩০-১, মেকেরেন ৫-০-৩৫-০, ফন ডার মেরওয়া ৫-০-২৭-১, জুলফিকার ৩-০-২৫-১, আকারম্যান ৩-০-১২-০)
ফল: আফগানিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ নাবি