কোনো স্বার্থান্বেষী মহল যাতে উৎপাদনমুখী কারখানার পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে সে ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন।
Published : 27 Feb 2024, 02:40 PM
দেশের বাইরে রপ্তানি পণ্যের বাজার আরও বিস্তৃত করতে কূটনৈতিক মিশনগুলোকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
বস্ত্র খাতে বিনিয়োগ, উৎপাদনশীলতা, কর্মসংস্থান বাড়ানোর পাশাপাশি নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতেও শিল্পপতি ও শিল্প উদ্যোক্তাদের তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, “কয়েকটি পণ্যের ওপর নির্ভর না করে রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা বাড়াতে হবে। উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। বিশ্বের সম্ভাব্য সকল স্থানে আমাদের রপ্তানি পণ্যের বাজারকে ছড়িয়ে দিতে হবে। এ ব্যাপারে আমাদের কূটনৈতিক মিশনগুলোকে কাজে লাগাতে হবে এবং অর্থনৈতিক কূটনীতিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।“
বাসস জানায়, মঙ্গলবার ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস ২০২৪’ উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।
কোনো ‘স্বার্থান্বেষী মহল’ যাতে উৎপাদনমুখী কারখানার পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে, সে ব্যাপারে ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন।
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কারিগরি শিক্ষা সম্প্রাসারণ ও দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী শিল্পপতি ও বিনিয়োগকারীদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।“
আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় বৈদেশিক বাণিজ্য এখন অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং মন্তব্য করে তিনি বলেন, এসব মোকবাবেলায় ব্যবসায়ী নেতাদের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।
ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, “শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ও পারিশ্রমিক নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকরাই উৎপাদনমুখী শিল্পের চালিকাশক্তি। মনে রাখতে হবে, আপনারা শুধু মুনাফার জন্য ব্যবসা পরিচালনা করছেন না। আপনাদের সামাজিক দায়িত্বের বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে।”
পোশাক ও বস্ত্র খাতকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সক্ষম, শক্তিশালী, নিরাপদ ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন।
আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদানুযায়ী চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন নতুন প্রযুক্তি সাদরে গ্রহণ করারও আহ্বান জানান তিনি।
অর্থনীতিতে ‘বস্ত্র ও পাট খাতের’ ভূমিকা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা বিবেচনায় বস্ত্র খাতের সম্প্রসারণের লক্ষ্যে নানামুখী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করার কোনো বিকল্প নেই।
“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে বস্ত্র শিল্পের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যমে ‘স্মার্ট টেক্সটাইল’ সেক্টর গড়ে তোলা সম্ভব। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ বস্ত্র শিল্প থেকে অর্জিত হচ্ছে। গ্রামীণ দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে বস্ত্র খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন এবং বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারারর্স এন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ আযম অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
১১টি প্রতিষ্ঠান-ব্যবসায়ীকে রাষ্ট্রপতির সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয় এ অনুষ্ঠানে। এছাড়া ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস ২০২৩’ এর একটি প্রামাণ্য চিত্র দেখানো হয়।