শ্রমিকরা আসছেন ঠিকই কিন্তু গ্যাস সংকটে প্রায় অলসই বসে থাকেন। ৮ ঘণ্টার কাজ ১৬ ঘণ্টাতেও হচ্ছে না, বলছেন উদ্যোক্তা-কারখানার কর্মকর্তারা।
Published : 22 Jan 2024, 08:22 AM
গাজীপুরের কোনাবাড়ির আমবাগ সড়কের এম এম নিটওয়্যার কারখানায় আগে দিনে গ্যাসের চাপ কম থাকলেও রাতে ভালোই চাপ পাওয়া যেত। কিছু দিন ধরে রাতে বা দিনে একই অবস্থা, গ্যাস নেই বললেই চলে।
এ কারখানার দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ৪০ থেকে ৫০ টন হলেও এখন তা ২০ থেকে ২৫ টনে নেমে এসেছে বলে জানান সহকারী মহাব্যবস্থাপক মনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, গ্যাসের সংকটই-মূলত চাপ কম থাকাই এর মূল কারণ।
একই রকম অবস্থা ঢাকার অদূরের আরেক শিল্প এলাকা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাতেও। সেখানকার ওয়াপদারপুল এলাকায় আমজাদ ডাইং লিমিটেডে গত তিন মাসে সংকট প্রকট হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে গ্যাস একেবারেই নেই, ফলে কারখানার কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা বললেন এর কর্ণধার আমজাদ হোসেন।
এক বছর ধরে গ্যাস সংকট নিয়ে ভুগছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “অথচ গ্যাসের মূল্য সাড়ে ১১ টাকা থেকে এক বছর আগে বাড়িয়ে সাড়ে ৩৪ টাকা করা হয়েছে।”
গ্যাসের এমন সংকটে গত কয়েক দিন ধরে গাজীপুরের কোনাবাড়ী, কাশিমপুর, বাসন ও টঙ্গীসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশির ভাগ কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে রয়েছে বলে সেখানকার মালিক-কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
উদ্যোক্তা ও কারখানার কর্মকর্তারা বলছেন, শ্রমিকরা কারখানায় আসছেন ঠিকই কিন্তু গ্যাস সংকটের কারণে কাজ ছাড়া প্রায় অলসই বসে থাকেন। ৮ ঘণ্টার কাজ ১৬ ঘণ্টাতেও শেষ হচ্ছে না। প্রতিদিন গুণতে হচ্ছে লাখ লাখ টাকার লোকসান।
শিল্পের প্রধান জ্বালানি গ্যাসের সরবরাহ ঘাটতির কারণে দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকতে থাকা শিল্প কারখানাগুলো সাম্প্রতিক গ্যাস সংকটে প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে বলে জানাচ্ছেন শিল্পোদ্যোক্তারা।
এ পরিস্থিতিতে রপ্তানি ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি কর্মবিহীন শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার শঙ্কার কথা বলছেন তারা।
এবারের সংকট কী কারণে
এবারের গ্যাস সংকটের কারণ মূলত সাগরে ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের রক্ষণাবেক্ষণ ও দেশি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন কমে যাওয়া। গত দুই মাস ধরে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে দৈনিক গ্যাস সরবরাহ প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট বা প্রায় ২০ শতাংশ কমে গেছে।
একটি এলএনজি টার্মিনাল রক্ষণাবেক্ষণ শেষে ফেরত আসলেও আরেকটি টার্মিনাল ৪৫ দিনের জন্য রক্ষণাবেক্ষণে পাঠানো হচ্ছে। ফলে গ্যাস স্বল্পতার এ পরিস্থিতি দ্রুত সমাধান না হওয়ার কথাই বলছেন কর্মকর্তারা।
গ্যাস সংকটের কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদনও কমে গেছে। ফলে শীত মৌসুমে ৭০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিংয়ের মতো ঘটনাও ঘটেছে। দেশের প্রধান শিল্প ও বন্দরনগরী চট্টগ্রাম গত শুক্র ও শনিবার দুদিনের জন্য পুরোপুরি গ্যাসবিহীন ছিল।
এমন পরিস্থিতির বিষয়ে রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, রক্ষণাবেক্ষণ শেষে একটি এফএসআরইউ বা ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল পুনসংযোগ দিতে গিয়ে কিছুটা বিপত্তি ঘটেছিল। সম্প্রতি ব্যাপক গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের এটাই বড় কারণ। তবে সেই সমস্যা কেটে যাওয়ায় আগামী দুই এক দিনের মধ্যে সংকট কিছুটা স্বাভাবিক হবে।
তবে সরকার আগামী মার্চে রোজা ও সেচ মৌসুমকে কেন্দ্র করে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তুতির মধ্যে থাকায় মার্চের আগে সংকট দূর হওয়ার কোনো আশা নেই।
জরুরি সভায় উদ্যোক্তারা
চলমান এমন সংকটের মধ্যে নারায়ণগঞ্জে বিকেএমইএর প্রধান কার্যালয়ে জরুরি সভা করেন পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ। এতে সংগঠনের সভাপতি সেলিম ওসমান গ্যাস না পেলে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না বলে সতর্ক করে দেন।
তিনি বলেন, “সেজন্য আমরা কিন্তু দায়ী থাকব না। তিন লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থা যে বন্ধ হবে সেজন্য আমাদের দায়ী করা চলবে না। দাম দিয়েও যদি গ্যাস না পাই তাহলে কী করে ব্যয় ভার বহন করব। আমরা বহুবার চেষ্টা করেও গ্যাসের সমস্যা দূর করতে পারছি না।”
বর্তমান গ্যাস সংকটের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগে ১০/১২ দিন গ্যাসটা থাকল। নির্বাচনের সাত দিন পর থেকে গ্যাসটা আবার কমে গেল। সংকটই যদি থাকে নির্বাচনের আগে আমরা গ্যাসটা কী করে পেলাম। এখন আবার গ্যাসটা বন্ধ হয়ে যায় কী করে। শীত তো এবার প্রথম আসে নাই।
“গ্যাস সংকট ঠিক করতে না পারলে, কোভিড মহামারীর সময় যে পরিস্থিতি হয়েছিল তার চেয়ে দুই হাজার গুণ বেশি খারাপ পরিস্থিতি হবে।”
মোট রপ্তানির ৫২ শতাংশ বা মাসে আড়াই হাজার কোটি টাকার পণ্য নিটওয়ার খাত থেকে রপ্তানি হয় জানিয়ে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি আয় করে নিটওয়্যার। পরোক্ষভাবে ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান আছে এখানে। কিন্তু গ্যাস সংকটের কারণে এই খাত এখন বন্ধ হওয়ার পথে।
বিকেএমইএর আরেক নেতা ফজলে শামীম এহসান বলেন, কাপড় তৈরির প্রধান উপকরণ ডায়িং বা রঙ করা সেটা গ্যাস ছাড়া সম্ভব হয় না। গত কয়েকদিন ধরে ডায়িং চালাতে পারছি না। গার্মেন্টে কাপড় দিতে পারছি না। তাই রপ্তানিতে স্থবিরতা নেমে এসেছে।
পোশাকের অন্য খাতও ভুগছে
পোশাক রপ্তানিকারকদের আরেক সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সঠিকভাবে জ্বালানি না পাওয়া গেলে কারখানা চলবে না, মেশিনগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। এভাবে জ্বালানির কারণে উৎপাদন কমতে থাকলে শিল্প টিকে থাকতে পারবে না।
পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট আরেকটি খাত হচ্ছে টেক্সটাইল বা বস্ত্রকল। এ খাতের শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) এর অতিরিক্ত মহাসচিব মনসুর আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত এক মাস ধরে গ্যাসের সংকটটা মারাত্মক পর্যায়ে। উৎপাদন প্রক্রিয়া প্রায় বন্ধ। সক্ষমতার ৩০ শতাংশও উৎপাদন করা যাচ্ছে না। শ্রমিকদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিতে হচ্ছে।
“বিটিএমএর প্রায় ১৭০০ সদস্যের মধ্যে অন্তত ৫০০ সদস্য লাইনের গ্যাসের ওপর নির্ভর করে ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালায়। এদের ৯০ ভাগ কারখানা গ্যাস সংকটে ভুগছে। তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না। গ্যাসের কারণে ডায়িংয়ের বয়লারগুলোও চালানো যাচ্ছে না।”
থমকে আছে নারায়ণগঞ্জের কারখানা
নারায়ণগঞ্জে বাংলাদেশ নিট ডায়িং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তালিকাভুক্ত ১২০টি কারখানা রয়েছে। এর বাইরেও শতাধিক ডায়িং কারখানা রয়েছে এ জেলায়। এসব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কার্যক্রম সম্পূর্ণ গ্যাসনির্ভর।
নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর হিসাবে নারায়ণগঞ্জে ছোট-বড় মিলিয়ে আট শতাধিক পোশাক কারখানা রয়েছে। ডায়িং কারখানা ছাড়াও কিছু কারখানায় ক্যাপটিভ জেনারেটরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের ব্যবহার করা হয়।
নিট ডায়িং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন, “এক বছর আগে শিল্প গ্রাহকদের গ্যাসের মূল্য ৮৬ শতাংশ বাড়ানোর সময় নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছিল সরকার। তবে তা বাস্তবায়ন হয়নি। বরং এক সপ্তাহ যাবৎ গ্যাস সরবরাহ না থাকায় কারখানার কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।”
তার ভাষ্য, “গ্যাসের চাপ ১৫ পিএসআই (পাউন্ড পার স্কোয়ার ইঞ্চি) আমাদের চাহিদা কিন্তু আমরা ৫ পিএসআইও পাই না। অধিকাংশ সময় ২/৩ পিএসআই গ্যাসের চাপে কারখানার কার্যক্রম চালাতে হয়। আমরা নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ না পেলে তৈরি পোশাক শিল্পের উপর বড় আঘাত আসবে, যা বাংলাদেশের রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।”
গ্যাসের কারণে সংকটে পড়ার কথা জানালেন বাংলাদেশ রি-রোলিং মিল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মাহবুবুর রশীদ জুয়েলও।
লাইনে গ্যাস না থাকায় গত ছয় দিন ধরে সদর উপজেলার গোদনাইল এলাকায় তার মালিকানাধীন জুলফিকার স্টিল রি-রোলিং মিল লিমিটেড কারখানাটির উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকার কথা জানালেন তিনি।
জুয়েল বলেন, “গ্যাস ও বিদ্যুৎনির্ভর শিল্পের বড় কনজ্যুমার স্টিল ও রি-রোলিং মিলগুলো। কোভিড মাহমারীর ধাক্কার পর ইউক্রেন-রাশিয়া এবং ফিলিস্তিন-গাজা যুদ্ধ আমাদের দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। নির্বাচনের আগে তিন মাস বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের সময় কেটেছে নানা উৎকণ্ঠায়। নির্বাচনের পর যখন আমরা একটু হাঁফ ছেড়ে উঠলাম তখনই গ্যাস সংকট দেখা দিল।”
গ্যাস সংকট সমাধানে সরকারের তড়িৎ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ব্যবসা চলমান রাখাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এইভাবে গ্যাসের সংকট চলতে থাকলে তো আরও মুশকিলে পড়ে যাব। দেখা যাবে, মালিকরা শ্রমিকদের বেতন ও ব্যাংক লোন পরিশোধ করতে গিয়েও হিমশিম খাবেন। দেশের অর্থনীতির চাকা চলমান রাখতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের কোন বিকল্প নেই।”
গ্যাস সংকটের সমাধান না করা হলে শ্রমিক অসন্তোষ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন এ উদ্যোক্তা।
এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “কারখানার কাজ বন্ধ থাকলে ক্রয়াদেশ সম্পন্ন করা যাবে না। শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতেও তখন সমস্যা তৈরি হবে। কারখানাগুলোর মালিকরা তখন শ্রমিক ছাঁটাই করতে বাধ্য হবেন। আমরা এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে চাই না।”
গাজীপুরে উৎপাদন কমে অর্ধেকে
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ী শিল্পাঞ্চল (বিসিক) এলাকার বেশ কয়েকটি কারখানার কর্মকর্তারা বলেন, মাস ঘুরতেই শ্রমিকের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হয় নতুবা তারা আন্দোলনে নামেন বেতন ভাতার দাবিতে। অথচ গ্যাস সংকটে কারখানায় গত চার দিন বন্ধ থাকার পর বিকল্প হিসেবে মাত্রাতিরিক্ত খরচে সিএনজি ও ডিজেলের মাধ্যমে বয়লার এবং জেনারেটর চালু রাখতে হচ্ছে।
গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর বানিয়ার চালা এলাকার মোশাররফ টেক্সটাইল কারখানার এজিএম আব্দুস সালাম বলেন, কারখানায় গ্যাসের সংকটের কারণে আমাদের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যয় হচ্ছে। ফলে আমাদের কারখানার উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে।
“আমরা ভেবেছিলাম নির্বাচনের পর হয়তো ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু না গ্যাসের সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।”
গাজীপুরের শ্রীপুর, কোনাবাড়ি, কাশিমপুর এলাকার বেশ কয়েকটি কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেও গ্যাস সংকটের একই চিত্র পাওয়া যায়।
মহানগরের সালনা এলাকায় অবস্থিত প্রীতি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক একেএম ফজলুল হক বলেন, “গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যহত হওয়ায় ক্রেতাদের চাহিদা মতো পণ্য সরবরাহ করতে পারছি না। এতে ব্যবসার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। খুব দ্রুত গ্যাস সংকট সমাধান করা না হলে এ অঞ্চলে শিল্প কারখানার বড় রকমের ক্ষতি হতে পারে।”
তিতাস গ্যাসের গাজীপুর শাখার ম্যানেজার অপারেশন মো. রিদওয়ানুজ্জামান বলেন, গাজীপুরে দুই হাজারের মতো শিল্প কারখানায় তিতাসের সংযোগ রয়েছে। সম্প্রতি চট্টগ্রামে টার্মিনাল থেকে এলএনজি সরবরাহ কম থাকার কারণে ভোক্তাদের ব্যবহারের জন্য গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে।
তিনি জানান, গাজীপুরে গ্যাসের চাহিদা রয়েছে দৈনিক ৫৯০ মিলিয়ন ঘনফুট, কিন্তু গ্রিড থেকে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে ৪৬০ মিলিয়ন ঘনফুট।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাভার প্রতিনিধি জানান, সাভার ও আশুলিয়ায় এলাকার অনেক স্থানে দিন থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বেশির ভাগ সময় গ্যাস থাকছে না। ভোর রাতে ঘণ্টা খানেকের জন্য গ্যাস পাওয়া গেলেও তার প্রেসার বা চাপ থাকে খুবই কম। গ্যাস সংকটের কারণে বিভিন্ন পোশাক কারখানায় বিকল্প জ্বালানির মাধ্যমে উৎপাদন চালিয়ে নিতে হচ্ছে।
সরেজমিনে গত দুই দিন সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলে গ্যাসের তীব্র সংকটে ভোগান্তির বিষয়টি জানা গেছে। বাসাবাড়িতে গ্যাস সংকটের কারণে অনেকেই রান্না করতে পারছেন না।
আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চলে পোশাক শ্রমিকদেরও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। সারাদিন কর্মব্যস্ততার পর বাসায় ফিরে রান্না করতে গিয়ে গ্যাস না থাকায় না খেয়েও ঘুমিয়ে পড়তে হচ্ছে অনেককে। মাঝেমধ্যে দিনের বেলায় মিট মিট করে চুলা জ্বললেও তাতে রান্না হয় না। অনেকে রাত জেগে রান্না করে সেগুলো দিনের বেলায় ওভেনে গরম করে খাচ্ছেন।
উইন্টার ড্রেস লিমিটেড কারখানার মহাব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে গ্যাসের চাপ খুবই কম। এতে আমাদের পণ্য উৎপাদনে প্রভাব পড়ছে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভার প্রতিনিধি।]
আরও পড়ুন-
গ্যাস-বিদ্যুৎ: ধৈর্য ধরতে বললেন প্রতিমন্ত্রী
রোজার আগেই গ্যাস সংকট দূর হবে, আশ্বাস প্রতিমন্ত্রীর
চট্টগ্রামে বাসাবাড়িতে গ্যাস ফিরেছে, সরবরাহ স্বাভাবিক