“আমদানি করে লাভ কী? খুচরা দোকানগুলোতে ভারত থেকে আনা ডিম পাওয়া যাচ্ছে না”, বলেন নাভারনের এক ক্রেতা।
Published : 22 Oct 2024, 07:58 PM
ভারত থেকে ডিম আমদানির বন্দর যশোরের যে উপজেলায়, সেই বেনাপোলেই দাম কমেনি খুব একটা।
আমদানি শুল্ক কমানোর পরেও মঙ্গলবার সেখানে ভোক্তাদের প্রতিটি ডিম কিনতে হয়েছে ১৪ টাকায়, যদিও সরকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করেছে ১১ টাকা ৮৬ পয়সা
সরকার পাইকারিতে প্রতিটি ডিমের দাম ১১ টাকা ১ পয়সা ঠিক করে দিলেও সেখানে বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকা ৮ পয়সায়।
বুধবার পর্যন্ত আমদানি করা ডিমে শুল্ক দিতে হয়েছে ৩১ শতাংশ। বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার ডিমে শুল্কহার কমালে, বৃহস্পতিবার থেকে দিতে হচ্ছে ১৩ শতাংশ। আগে প্রতিটি ডিমে শুল্ক দিতে হত এক টাকা ৮৩ পয়সা, এখন দিতে হচ্ছে ৭৭ পয়সা।
ভারত থেকে প্রতিটি ডিম কেনা হচ্ছে ৫ টাকা ৮০ পয়সায়। শুল্ক পরিশোধের পর পড়েছে ৬ টাকা ৫৭ পয়সা।
তাহলে কেন ১৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে- এই প্রশ্নে বেনাপোল বাজারের ডিম ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা যেভাবে কিনছি, সেভাবেই বিক্রি করছি। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে এক টাকা ৭০ পয়সা বেশি দিয়ে ডিম কিনতে হয়েছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করছি।”
বেনাপোল বাজারে আমদানি করা কোনো ডিম পান না জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা যেভাবে ডিম কিনছি সেভাবেই বিক্রি করছি।”
আরেক ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, “ফার্মের মালিকরা যদি সরকার নির্ধারিত দামে আমাদেরকে ডিম দেয়, তাহলে আমরাও বেঁধে দেওয়া দামে ডিম বিক্রি করতে পারব। এক সপ্তাহ আগে প্রতিটি ডিম ১৫ টাকায় বিক্রি করেছি।
“আসলে যেভাবে কিনছি তার উপর কিছু লাভ ধরে বিক্রি করছি। প্রতিনিয়ত খরিদদারদের সঙ্গে আমাদের বাকবিতণ্ডা হচ্ছে। প্রশাসন আমাদের উপর নজরদারি না করে যদি ফার্মে ফার্মে অভিযান চালিয়ে ভাউচার চেক করে, তাহলে হয়ত ফার্মের মালিকরা বেঁধে দেওয়া দামে ডিম বিক্রি করবেন।”
যশোরের সীমান্তবর্তী বেনাপোল, নাভারন, শার্শা ও বাগআচড়া বাজার ঘুরে কথা হয় ডিম ক্রেতার সঙ্গে। ক্ষোভের সঙ্গে তারা মতামতও প্রকাশ করেন।
বেনাপোল বাজারে ডিম কিনতে আসা আব্দুল মোমিন বলেন, “লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দাম। সরকারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ডিমের দরের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দিকে নজর দিতে হবে।”
নাভারনের ক্রেতা খলিলুর রহমান বলেন, “আমদানি করে লাভ কী? খুচরা দোকানগুলোতে ভারত থেকে আমদানি করা ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বাদামি রঙের ডিম ১৪ টাকা করে কিনতে হচ্ছে।”
বাগআচড়ার হেমায়েত উল্যাহ বলেন, “ব্যবসায়ীরা এখন আর বেশি ডিম দোকানে উঠাচ্ছেন না।”
ডিম ব্যবসায়ীর অভিযোগ, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একটি ‘চক্র’ দাম নির্ধারণ করে। তবে মোবাইল ফোনে পাঠানো দরে তারা ডিম কিনতে পারে না।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) রাশেদুল সজিব নাজির জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে ৫ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচটি চালানে ভারত থেকে নয় লাখ ৮৯ হাজার ৩১০টি ডিম আমদানি করা হয়েছে।